ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদেও পর্যটকশূন্য ষাটগম্বুজসহ বাগেরহাটের বিনোদনকেন্দ্রগুলো

প্রকাশিত: ১৬:৩০, ২ আগস্ট ২০২০

ঈদেও পর্যটকশূন্য ষাটগম্বুজসহ বাগেরহাটের বিনোদনকেন্দ্রগুলো

অনলাইন রিপোর্টার ॥ বাগেরহাটে এবার ঈদেও পর্যটকশূন্য বিশ্ব ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ মসজিদ ও সুন্দরবনসহ বাগেরহাটের বিনোদনকেন্দ্রগুলো। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে ঈদুল ফিতরের মতো ঈদুল আজহায়ও পর্যটক ও দর্শনার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল বাগেরহাটের বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে। ফলে বিনোদনকেন্দ্রের চিরচেনা সেই ভিড় ছিলো না ষাটগম্বুজ মসজিদসহ বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে। আজ রবিবার (২ আগস্ট) বিকেলে বাগেরহাটের বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী ষাটগম্বুজ মসজিদের সামনে গিয়ে দেখা যায় তালাবদ্ধ প্রধান ফটক। ভেতরে প্রবেশ নিষেধ। সামনে কিছু লোকজন ঘোরাফেরা করছে কিন্তু প্রবেশের ব্যবস্থা নেই। গেটম্যানকে অনুরোধ করে ভেতরে প্রবেশ করে দেখলাম সুনসান নিরবতা। ৬শ বছরের অধিকাল সময় ধরে চলে আসা দেশি-বিদেশী পর্যটকদের কোনো আনা গোনা ছিলো না এই ঈদে। অনেকে আবার নিষেধাজ্ঞার বিষয় না জেনে এসে গেট থেকে ফিরে যাচ্ছেন। স্বল্প পরিসরে সকালে ঈদের নামাজ আদায়ের পরে ষাটগম্বুজ ও তার আশপাশের এলাকা ছিলো দর্শনার্থীশূন্য। পর্যটকদের আনাগোনায় জনাকীর্ণ ষাটগম্বুজ মসজিদ ও ষাটগম্বুজ স্টেশন ছিলো জনশূন্য। বিভিন্ন রাইডসগুলোতে দীর্ঘদিন মানুষের স্পর্শ না থাকায় মরিচা পড়েছে। তবে ষাটগম্বুজ মসজিদ প্রাঙ্গণে নানা প্রজাতির ফুল ফুটেছে। নতুন রূপে সেজেছে মসজিদ প্রাঙ্গণ। প্রাণ ফিরে পেয়েছে প্রকৃতি। তবে দীর্ঘদিন এ ধরনের পর্যটকশূন্য বিশ্ব ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ মসজিদ মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে স্থানীয়দের। এ অবস্থা শুধু বিশ্ব ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ মসজিদের নয়। বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন, বাগেরহাট যাদুঘর, বাগেরহাট সদর উপজেলার বারাকপুরস্থ সুন্দরবন রিসোর্ট, কৃত্রিম তাজমহল খ্যাত সদর উপজেলার চন্দ্রমহল, পৌর শিশুপার্ক, খানজাহান আলী মাজারসহ সব বিনোদনকেন্দ্র ছিলো তালা বদ্ধ। সাধারণ মানুষ ঘরে বসেই উদযাপন করেছেন ঈদ। ষাটগম্বুজ মসজিদের সংলগ্ন এলাকাবাসী বলছেন, ছোটবেলা থেকেই সবসময় ষাটগম্বুজ মসজিদে পর্যটকদের ভিড় দেখেছি। রোববার কয়েক মাস ধরে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের প্রবেশ নিষেধ থাকায় এখানে কোনো লোক আসেন না। ষাটগম্বুজ এখন খালি খালি লাগে। মুসলিম স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন ষাটগম্বুজকে এভাবে প্রাণহীন দেখতে আমাদের আর ভালো লাগে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটক প্রবেশাধিকার আগের মতো করে দেওয়ার দাবি জানান তারা। রনবিজয়পুর গ্রামের তোরাফ মুন্সি বলেন, ষাটগম্বুজ মসজিদ আমাদের প্রাণের মতো। সবসময় এই মসজিদে লোকজনের আনা গোনা থাকতো। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে করোনার কারণে ষাটগম্বুজে আর লোক আসে না। মুসলিম স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন এই মসজিদ খুলে দেওয়া হোক। দিলে আমাদের ভালো লাগবে। .বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ আক্তারুজ্জামান বাচ্চু বলেন, করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে এখানে পর্যটক আসা বাড়িত হচ্ছে। শুধুমাত্র ওয়াক্তিয়া নামাজে সামান্য কিছু মানুষ এখানে আসছেন এবং নামাজ পরে চলে যাচ্ছেন। প্রতিদিন যেখানে হাজার হাজার মানুষ আসতো সেখানে। সেই হাজার হাজার মানুষের আবেগ যেন শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় রয়েছেন। আমরা কবে মুক্তি পাবো জানি না। তবে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের পদচারণায় আবারও মুখরিত হবে এই প্রাঙ্গণ সেটা জানি। আমরা আল্লাহর কাছে সেই প্রার্থনা করি যাতে, আল্লাহ দ্রুত এই করোনা সংকট দূর করে দেন। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের (বাগেরহাট) কাস্টোডিয়ান মো. গোলাম ফেরদাউস বলেন, করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পরে সরকারি নির্দেশে আমরা ষাটগম্বুজ মসজিদে দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ রেখেছি। সরকারি নিদের্শনা এলে আবারও আমরা ষাটগম্বুজ মসজিদকে খুলে দেবো। তখন আবারও মুখরিত হবে এই প্রাঙ্গণ।
×