ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে ৫০ অনলাইনকে প্রথমে নিবন্ধন ॥ তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২৩:০০, ৩১ জুলাই ২০২০

গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে ৫০ অনলাইনকে প্রথমে নিবন্ধন ॥ তথ্যমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের ভিত্তিতে দেশের ৫০টি অনলাইন গণমাধ্যমকে প্রথমে নিবন্ধন দেয়া হবে। ঈদের পর এসব অনলাইন গণমাধ্যম নিবন্ধন ফি জমা দেয়াসহ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নিবন্ধন নিতে পারবে। এছাড়া যেসব অনলাইন গণমাধ্যমের ব্যাপারে নেতিবাচক রিপোর্ট পাওয়া গেছে তাদের নিবন্ধন না দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এ কথা জানান তিনি। তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছিলাম যে অনলাইনগুলোর রেজিস্ট্রেশন দেয়া হবে। নিবন্ধন দেয়ার জন্য আমরা দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে সবগুলো অনলাইনের ব্যাপারে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছিলাম। তারা অনেকগুলো অনলাইনের ব্যাপারে রিপোর্ট দিয়েছে। আমরা বলেছিলাম ঈদের আগে অনলাইনগুলো রেজিস্ট্রেশনের ব্যাপারে ঘোষণা দেব। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে অনেকগুলো অনলাইনের ব্যাপারে রিপোর্ট পেয়েছি। আপাতত ৫০টি অনলাইনের ব্যাপারে পজিটিভ রিপোর্ট পেয়েছি। শীঘ্রই ওয়েবসাইটে আপলোড করা হবে। তারা নির্দিষ্ট ফি জমা দিয়ে ঈদের পর রেজিস্ট্রেশন করে নেবে বলে জানান তিনি। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আরও অনেক অনলাইনের ব্যাপারে নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে, যাদের ব্যাপারে নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে তাদের জানিয়ে দেয়া হবে। আজকে অবাধ তথ্য প্রবাহের যুগে যখন দেশ ডিজিটাল হয়েছে, তখন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা সাড়ে ১০ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। মানুষ ব্যাপকভাবে ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনলাইন পত্রিকাগুলো পড়ে। তিনি বলেন, প্রায়ই দেখতে পাই, কারও কারও, সবার ক্ষেত্রে নয়; সবার আগে সর্বশেষ সংবাদ পরিবেশন করার যে প্রতিযোগিতা সেটি করতে গিয়ে অনেক সময় ভুল সংবাদ পরিবেশিত হয়, অনেক সময় অসত্য সংবাদ পরিবেশিত হয়। একইসঙ্গে আমরা দেখেছি বিভিন্ন সময়ে কিছু অনলাইন পোর্টাল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গুজব সন্ত্রাসী কাজে লিপ্ত হয়। অনেকের চরিত্র হনন এবং সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেয়ার কাজে লিপ্ত হয়। এ বিষয়গুলো মাথায় রেখেই তদন্ত করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, যারা এগুলো করেছেন তাদের ব্যাপারে সেই ধরনের রিপোর্টই এসেছে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই আমরা রেজিস্ট্রেশনের কাজ করছি। অবাধ তথ্যপ্রবাহের যুগে অনলাইনগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং মানুষের হাতে হাতে সংবাদ পরিবেশনে বিরাট ভূমিকা পালন করছে। এটি একটি বড় ইতিবাচক দিক। সব অনলাইনকে দেশ গঠনে কাজ করার আহ্বান জানান তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, যদি সবাই চায় তাহলে নেগেটিভ নামগুলো প্রকাশ করা হবে। যাদের নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং বন্ধ করাও একটা ব্যবস্থা, তাদের বন্ধ করাটাও শুরু হবে। বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কোন রাজনৈতিক প্রভাব কাজ করেনি দাবি করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এতে কোন বিবেচনা, কোন সুপারিশ কাজ করেনি। অনলাইন গণমাধ্যমের নিবন্ধন শুরু ॥ বিডিনিউজ জানায়, দেশের ৪৪টি অনলাইন নিউজপোর্টালের নিবন্ধন দেয়ার মধ্য দিয়ে অনলাইন গণমাধ্যমগুলোর নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। তথ্য মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার রাতে এসব নিউজপোর্টালের নিবন্ধন দিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, অনলাইন নিউজপোর্টাল নিবন্ধন (রেজিস্ট্রেশন) একটি চলমান প্রক্রিয়া। যে সমস্ত অনলাইন নিউজপোর্টালের পক্ষে সরকার নির্ধারিত সংস্থাগুলোর অনাপত্তি পাওয়া গেছে, শুধু সেগুলোর তালিকা প্রকাশ করা হলো এবং তাদের রেজিস্ট্রেশনের অনুমতি দেয়া হলো। পরবর্তীতে অন্যান্য অনলাইন নিউজপোর্টালের ব্যাপারে অনাপত্তি প্রতিবেদন প্রাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে সেগুলোর নিবন্ধনের অনুমতি দেয়া হবে। তাই এ বিষয়ে কোন উদ্বেগের কারণ নেই। অনাপত্তিপ্রাপ্ত নিউজপোর্টালগুলোকে সরকারী বিধিবিধান অনুসরণ করে নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে আগামী ২০ কার্যদিবসের মধ্যে নিবন্ধন সম্পন্ন করার অনুরোধ করেছে তথ্য মন্ত্রণালয়। অনলাইন গণমাধ্যমগুলোকে নিবন্ধন দেয়ার জন্য ২০১৫ সালের শেষদিক থেকে আবেদন নেয়া শুরু করে সরকার। বেশ কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে ২০১৬ সালেও সেই আবেদন নেয়া হয়।
×