ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাজধানীতে কোরবানির পশুর হাট আজ শুরু

প্রকাশিত: ২৩:০০, ২৮ জুলাই ২০২০

রাজধানীতে কোরবানির পশুর হাট আজ শুরু

ওয়াজেদ হীরা ॥ একদিকে রয়েছে করোনার আতঙ্ক আবার এ বছর কোরবানির গরুর মূল্য কেমন হবে সে বিষয়ে রয়েছে উদ্বেগ। সিটি কর্পোরেশনের বেঁধে দেয়া নিয়ম অনুসারে আনুষ্ঠানিকভাবে আজ থেকে রাজধানীর পশুর হাট শুরু হচ্ছে। যদিও কদিন ধরেই আসা গরুতে ভরে উঠেছে হাটগুলো। তবে অন্যান্য বছরের মতো নির্ধারিত সময়ের আগে বিক্রি শুরু করা যায়নি। আজ মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলে বিক্রিও শুরু হবে বলছেন বেপারি ও হাট সংশ্লিষ্টরা। টানা হাট চলবে ঈদের দিন পর্যন্ত মোট ৫দিন। ঈদ-উল-আজহা বা কোরবানির ঈদের আর মাত্র কদিন বাকি। সারাবিশ্বে মতো দেশেও করোনাভাইরাসের আতঙ্ক থাকলেও মুসলমানদের অন্যতম এ ধর্মীয় উৎসবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে পশু কোরবানি দেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে কোরবানির হাট বসলেও কমানো হয়েছে সংখ্যা। অন্যবার রাজধানীতে প্রায় ২৫ থেকে প্রায় ৩০টির মতো পশুর হাট বসানো হয়। এবার রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশেনের অধীনে অস্থায়ী হাট বসছে মাত্র ১৬টি। এছাড়াও স্থায়ী হাট থাকছে। এছাড়াও বিভিন্ন হাটে স্বাস্থ্যবিধির জন্য হাটে প্রবেশের মুখে হাত ধোয়ার জন্য প্রয়োজনীয় বেসিন, পানির ট্যাঙ্ক ও সাবান এবং পৃথকভাবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোন কোন হাটে প্রবেশের মুখে তাপমাত্রা মাপার যন্ত্রসহ লোকও দেখা গেছে। যারা হাটে প্রবেশ করছেন তাদের তাপমাত্রা মেপে দেখা হচ্ছে। এছাড়াও মাইকে বার বার ঘোষণা দেয়া হচ্ছে কোনক্রমেই ফেস মাস্ক ছাড়া কোন লোককে হাটে প্রবেশ করবেন না। শেষ পর্যন্ত পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানা যাবে কিনা সেটা প্রশ্নই থেকে যাচ্ছে। যদিও হাট সংশ্লিষ্টরা বলেছেন তাদের চেষ্টার ত্রুটি থাকবে না। রাজধানীর একাধিক পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, হাটে বাঁশ কাঠের খুঁটি দেয়া শেষ, খুঁটিতে বিভিন্ন ধরনের গরু-ছাগল বাঁধাও আছে। তৈরি করা হয়েছে একাধিক হাসিল ঘর, পরিচলনা কক্ষ, নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। হাটে প্রবেশ পথে রয়েছে নানাবিধ স্বাস্থ্যবিধি। এসবই এখন রাজধানীর বিভিন্ন পশুর হাটে দৃশ্য। আনুষ্ঠানিক বিক্রির জন্য প্রস্তুত রাজধানীর কোরবানির পশুর হাটগুলো। বিভিন্ন হাটে বিভিন্ন রং-আকৃতি আর শখেরবশে দেয়া বিভিন্ন নামের পশুও উঠেছে। কিছু মানুষ একটু একটু দেখতে আসলেও বিক্রি শুরু হয়নি। এদিকে, রাজধানীর হাটগুলোতে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে বেচাকেনা শুরু না হলেও কৌতূহলী ক্রেতাদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। গরু বিক্রেতা ও ব্যাপারীরা জানান, দু’ এক জন আসছেন কেউ দাম জানতে চেয়ে চলে যাচ্ছেন। বেচাকেনা শুরু হয়নি। আজ মঙ্গলবার থেকে কিছুটা শুরু হবে বলেও মনে করছেন অনেকে। রাজধানীর বিভিন্ন হাটে আসা বিক্রেতারা পশুর মূল্য নিয়ে নানা উদ্বেগের মধ্যেই আছেন। প্রত্যন্ত এলাকার হাটগুলোতে এবার ভাল দাম উঠেনি পশুর। আবার দেশে কোরবানিযোগ্য পর্যাপ্ত পশুও রয়েছে। বিক্রেতারা পশু বিক্রি নিয়ে চিন্তার মধ্যেই আছে বলে জানা গেছে। বিক্রেতাদের মতো ক্রেতারাও অনেকে দুশিন্তায় আছে হাটে যাওয়া না যাওয়ার ক্ষেত্রে এছাড়াও মূল্য অন্য বছরের চেয়ে করোনা ইস্যুতে বাড়তে পারার শঙ্কাও আছে। ইতোমধ্যেই সচেতন ব্যক্তিরা অনলাইন পশুর হাটে নিজেদের কোরবানির পশুর অর্ডার করছেন। কেননা হাটে বেশি মানুষের সমাগম থেকে করোনা আরও বেশি ছড়াতে পারে বলে অনেকে অনলাইনের পশুর হাটে ঝুঁকছেন বলেও জানা গেছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত ॥ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) কোরবানির পশুর হাটগুলোতে আজ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার করা হবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। স্বাস্থ্যবিধি মানতে ও ইজারার শর্ত মেনে চলে কি না তা দেখতে এসব আদালত পরিচালনা করা হবে। এছাড়া কোন ইজারাদার তার দেয়া ইজারার শর্ত ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান। সোমবার বিকেলে রাজধানীর ধানম-ি লেকে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২০ উপলক্ষে মাছের পোনা অবমুক্তকরণ অনুষ্ঠানে মেয়র এ তথ্য জানান তিনি। এ সময় ১২০ কেজি রুই, ৬০ কেজি কাতলা, ১০৫ কেজি মৃগেল, ১৫ কেজি কালিবাউসসহ মোট ৩০০ কেজি মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালক কাজী শামস্ আফরোজের সভাপতিত্বে এ সময় অন্যদের মধ্যে ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডাঃ শরীফ আহমেদ, প্রধান প্রকৌশলী মোঃ রেজাউর রহমান, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম বাবলা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্য মেয়র বলেন, ডিএসসিসি এলাকার ৮ সংসদীয় আসনের কথা বিবেচনা করে আমরা ১১টি জায়গায় পশুর হাট ইজারা দিয়েছি। এসব হাট সুষ্ঠুভাবে ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে রবিবার ইজারাদারদের নিয়ে সভা হয়েছে। সেখানে ইজারাদারদের আমাদের শর্তাবলী যাতে কঠোরভাবে পালন করা হয়, সে বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তাই, সে সব শর্তাবলি প্রতিপালন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আগামীকাল থেকে আমরা হাটগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করব।
×