ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রাথমিকে করোনায় ৫ শত আক্রান্ত ১২ জনের মৃত্যু

স্কুল ফিডিংয়ের খাবার করোনাকালে যাবে শিক্ষার্থীদের বাড়ি

প্রকাশিত: ২২:৫১, ১২ জুলাই ২০২০

স্কুল ফিডিংয়ের খাবার করোনাকালে যাবে শিক্ষার্থীদের বাড়ি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ। সরকারের দেয়া স্কুল ফিডিং কর্মসূচীর বিস্কুট বিতরণও বন্ধ আছে। ফলে পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিশুরা। এমন অবস্থায় স্কুল ফিডিংয়ের বিস্কুট শিশুদের বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার নির্দেশ দিল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। শিক্ষার্থীদের মাথাপিছু ২৫ থেকে ৫০ প্যাকেট বিস্কুট বিতরণের ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে সকল জেলা প্রশাসকের কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। জেলা প্রশাসকদের কাছে পাঠানো দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং প্রকল্পের পরিচালক মোঃ রুহুল আমিন খান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, করোনার প্রাদুর্ভাবে দেশের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে। ফলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের অধীন দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং শীর্ষক প্রকল্পের ১০৪টি উপজেলায় বিস্কুট বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং প্রকল্পের ৩০তম স্টিয়ারিং কমিটির সভায় বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় এনজিও কর্মীদের মাধ্যমে প্রকল্পভুক্ত বিদ্যায়ের শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি উচ্চ পুষ্টিমান সমৃদ্ধ বিস্কুট এবং ১৬টি উপজেলার শিক্ষার্থীদের জন্য সংগৃহীত ও মজুদকৃত মিড ডে মিলের চাল, ভাল এবং ভোজ্য তেল সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার পরস্পরের সঙ্গে সমন্বয় করে এনজিও কর্মীদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মাঝে বিতরণের ব্যবস্থা করবেন বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তাই, দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং প্রকল্পের শিক্ষার্থীদের বড়ি বাড়ি গিয়ে বিতরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হচ্ছে। এককালীন ২৫ থেকে ৫০ প্যাকেট উচ্চ পুষ্টিমান সমৃদ্ধ বিস্কুট মাথাপিছু শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সঙ্গে সমন্বয় করে এনজিও কর্মীদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মাঝে বিস্কুট বিতরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। স্কুল ফিডিং প্রকল্পের বাস্তবায়ন সহযোগী সংস্থার প্রকল্প সমন্বয়কারী বিস্কুট বিতরণে স্থানীয় প্রশাসনকে সার্বিক সহযোগিতা করবেন। প্রাথমিক শিক্ষাস্তরে করোনার ছোবল ॥ করোনাভাইরাসে প্রাথমিক শিক্ষা পরিবারের ৪৯৪ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৩৭৮ জন শিক্ষক, ৬৩ জন কর্মকর্তা, ৩৪ জন কর্মচারী ও ১৯ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ১০ জন শিক্ষক, একজন কর্মকর্তা ও এক জন কর্মচারী মারা গেছেন। শনিবার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের করোনা আপডেটে এসব তথ্য জানা গেছে। অধিদফতরের ওয়েবসাইটে করোনা আপডেট দেয়া হচ্ছে। সেখানে আক্রান্তদের নাম, পদবি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ঠিকানা এবং বর্তমান অবস্থার বিবরণ দেয়া হয়েছে। অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত প্রাথমিকের ৩৭৮ জন শিক্ষক, ৬৩ জন কর্মকর্তা, ৩৪ জন কর্মচারী ও ১৯ জন শিক্ষার্থী ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন। ৮০ জন সুস্থ হয়েছেন। সুস্থদের মধ্যে ৫৯ জন শিক্ষক, ১০ জন কর্মকর্তা, তিন কর্মচারী দুইজন ও আট জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৬৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪১ জন, চট্টগ্রামে ১৩৮ জন, খুলনায় ৩৯ জন, বরিশালে ২৯ জন, সিলেটে ৪৮ জন, রংপুরে ২৪ জন এবং ময়মনসিংহে ১১ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। তবে জানা গেছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রাথমিক শিক্ষকদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। নিজ উদ্যোগেই তারা চিকিৎসা নিচ্ছেন। নিম্ন বেতনের প্রাথমিক শিক্ষকরা কোভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে বড় ধরনের সঙ্কটে পড়েছেন। পরিবারের সদস্যরাও কেউ কেউ আক্রান্ত হয়েছেন। অধিদফতরের মহাপরিচালক মোঃ ফসিউল্লাহ বলেছেন, প্রাথমিক শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা কেউ কোভিড-১৯ আক্রান্ত হলে তার তথ্য সংগ্রহ করে আমাদের ওয়েবসাইটে যুক্ত করা হচ্ছে। চিকিৎসাসহ তাদের সার্বিক সহায়তা দিতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
×