ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

লকডাউনে সাড়া নেই ওয়ারীবাসীর

প্রকাশিত: ২১:৪৭, ৬ জুলাই ২০২০

লকডাউনে সাড়া নেই ওয়ারীবাসীর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর ওয়ারীতে সরকার ঘোষিত করোনার রেড জোন লকডাউন মানতে তেমন আগ্রহ নেই এলাকাবাসীর। বিশেষ প্রয়োজন,মামলার হাজিরা দেয়া, ডাক্তারের কাছে যাওয়াসহ নানা মিথ্যা অজুহাতেও অনেক লোক লকডাউন এলাকার বাইরে যেতে চাচ্ছেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) পক্ষ থেকে আগামী ২১ দিন সম্পূর্ণ লকডাউন থাকবে এই এলাকা ও নানা সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে আগেই মাইকিং করা হলেও সরকার নির্দেশিত নিয়ম মানতে তেমন আগ্রহ নেই এলাকাবাসীর। প্রতিনিয়তই স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে বাইরে যাওয়া নিয়ে বাগ্বিতন্ডায় লিপ্ত হচ্ছেন। কেউ কেউ অন্য সকল এলাকা বাদ দিয়ে শুধু ওয়ারীতে কেন লকডাউন দেয়া হলো তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। শনিবার থেকে শুরু হওয়া লকডাউনের দ্বিতীয় দিন রবিবারে সরেজমিনে গিয়ে এমনটাই চোখে পড়েছে। বাসিন্দাদের অনেকেই নিয়ম-নীতি ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে চান না। এদিকে লকডাউন মানাতে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়মিত টহল প্রদান, করোনার প্রকোপ সম্পর্কে প্রচারণা চালানো ও নাগরিকদের সমস্যা সমাধানে চেষ্টা করলেও অনেকেই তা শুনতে রাজি নয় আবার অনেক বাসিন্দাই মাইকে লকডাউনের ঘোষণা দেয়ার পরেই বিকল্প ব্যবস্থা থাকায় এই এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, নানা ছুতো দেখিয়ে তারা বাইরে যেতে চান। যেতে দেয়া না হলে বিভিন্ন সময় স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে বাগ্বিতন্ডায় লিপ্ত হচ্ছেন অনেকেই। তবে স্বেচ্ছাসেবকরা উপযুক্ত কারণ ছাড়া কাউকেই লকডাউন এলাকা থেকে বের হতে দিচ্ছেন না। ওয়ারী এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পুরো এলাকার ভেতরে ওষুধের দোকান, সুপার শপ, হাসপাতাল খোলা রয়েছে। সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ময়লা সংগ্রহ করছে। সড়কগুলো প্রায় ফাঁকা। লকডাউন এলাকার ভেতরে পুলিশের মোবাইল টিমের সদস্য, টহল টিমের সদস্য এবং স্বেচ্ছাসবকরা একটু পর পর এলাকা পরিদর্শন করছেন ও সমস্যা হলে তার সমাধানের চেষ্টা করছেন। জানা গেছে, নিয়মানুযায়ী বাসিন্দাদের খাবারের চাহিদা মেটাতে বিগ বাজার, স্বপ্ন ও মীনা বাজার তিনটি সুপার শপের আউটলেট বর্তমানে খোলা রয়েছে। তাছাড়া ৪১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সঙ্গে এই তিনটি সুপারশপের চুক্তি হয়েছে, তারা অনলাইনে অর্ডার নিয়ে বাসিন্দাদের ঘরে খাবার পৌঁছে দেবেন। যা চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও এলাকায় দশটি ভ্যানে করে সবজি বিক্রি করা হচ্ছে। সেখানে বাজারমূল্যের চেয়ে ৩০ শতাংশ কম দামে সবজি বিক্রি করা হবে। এজন্য সবজি বিক্রেতা কাউন্সিলরের পক্ষ থেকে দৈনিক ৫০০ টাকা সহযোগিতা পাবেন। সুমাইয়া আক্তার নামের এক নারী জানান, রাজধানীর করোনা আক্রান্ত অন্য সকল এলাকা বাদ দিয়ে শুধুমাত্র এই ওয়ারী এলাকায় লকডাউন কেনো? করোনা আক্রান্ত যারা বাইরে যাওয়ার তারা ৪ জুলাইয়ের আগেই এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। এটি এক প্রকার ভোগান্তি। ওয়ারী এলাকায় ব্যবসায়ী শাহেদ বলেন, লকডাউনের কারণে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে বাসায় থাকছি। তিনি একটি এলাকায় নয় পুরো রাজধানীর সকল এলাকায় একসঙ্গে লকডাউন দেয়ার পরামর্শ দেন। দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকে জানা গেছে, নবাবপুর, ইসলামপুরের অনেক ব্যবসায়ী ওয়ারী এলাকায় বসবাস করেন। তারা বাইরে বের হতে চাচ্ছেন বেশি। তবে উপযুক্ত কারণ ছাড়া কাউকে বের হতে দেয়া হচ্ছে না। বের হতে দেয়া না হলে অনেকেই বিগ্বিতন্ডায় লিপ্ত হচ্ছেন। স্বেচ্ছাসেবকরা কাজের গুরুত্ব বুঝে জরুরী চিকিৎসা সেবার বিষয় ছাড়া কাউকে কাউকে ভেতরে আসতে বা বাইরেও যেতে দিচ্ছে না। ফলে অনেককেই গেটের মুখে এসেও ফিরে যেতে দেখা গেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আহমেদ ইমতিয়াজ মান্নাফি জনকণ্ঠকে বলেন, অনেকেই বের হওয়ার জন্য নানা ধরনের কারণ দেখাচ্ছে। কিন্তু আমরা তাদের বের হতে দিচ্ছি না।
×