ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বর্ষার ফুলে নতুন সাজে রাজশাহী

প্রকাশিত: ২১:৪২, ৩০ জুন ২০২০

বর্ষার ফুলে নতুন সাজে রাজশাহী

মামুন-অর-রশিদ ॥ বর্ষার প্রকৃতিতে এখনও রাজশাহী নগরে হাজারো ফুলের সমারোহ। গ্রীষ্মের ফুল হলুদ সোনালু কিংবা বেগুনি জারুল ও লাল টুকটুকে কৃষ্ণচূড়ার রক্তঝরা হাসি এখনও যে কারও নজর কাড়ছে। মাঝে মাঝে ঝড়ো বৃষ্টিতে এসব ফুল ঝরে রাজপথ করছে রঙ্গিন। চলতি করোনাকালে বাইরে তেমন মানুষ নেই। তাই বলে থেমে থাকেনি প্রকৃতি। রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন এলাকায় এখন দৃষ্টি মেললেই ফুলের সমারোহ। লাল হলুদ রঙের মিশ্রণে বাহারি বর্ষার সতেজ ফুল এখন শোভা ছড়াচ্ছে। কদিন আগেও নগরীর সড়ক বিভাজনে হাসছিল সূর্যমুখী। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সূর্যমুখীর দিন ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এখন সড়ক বিভাজনে আরও বাহারি সব ফুলের দোলায় বেড়েছে নগর সৌন্দর্য। ঋতু চক্রের আবর্তনে নয়নাভিরাম বর্ষাকালে ফুলের এক বর্ণিল আয়োজন নিয়ে এখন সেজেছে রাজশাহীর প্রকৃতি। সড়কের আইল্যান্ডে এখন কেবলই চোখ ধাঁধানো হাজারও প্রজাতির ফুলের সমারোহ। মেঘ-বৃষ্টির দোলাচালে আকাশে কখনও কখনও গনগনে সূর্য। কখনও কাঠফাটা রোদ্দুরে তপ্ত বাতাস, এরইমধ্যে হঠাৎ বৃষ্টি। গ্রীষ্মের পর বর্ষায় প্রকৃতিতে আপন মহিমায় মেলে ধরেছে বাহারি সব ফুল। এ যেন প্রকৃতিজুড়ে রঙ্গিন সাজ। রঙ্গিন ফুলের পসরা বসেছে পুরো রাজশাহী নগরীজুড়ে। আর সড়ক বিভাজন যেস নতুন রূপে সেছেছে সবুজের বুকে হরেক রঙের পাপড়ি মেলে। রাজশাহী মহানগরীর ঈদগা মাঠ হয়ে নদীর তীর ধরে ভেড়িপাড়া মোড়। ঐতিহ্য চত্বর থেকে নগর ভবন পর্যন্ত সড়কের পাশে শোভা পাচ্ছে নানা প্রজাতির ফুল। নগরীর আলিফ লাম মীম ভাটা এলাকা থেকে শুরু করে ফল গবেষণা ইনস্টিটিউট পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার রাস্তাটির মাঝখান দিয়ে চলে যাওয়া সড়কের পাশের গাছেও এখন শোভা পাচ্ছে রঙ্গিন ফুল। নগরীর রেলগেট থেকে সিএ্যান্ডবি মোড় পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তার সড়ক বিভাজনে সোভা পাচ্ছে ফুল আর সবুজে ছেয়ে যাওয়া নানা প্রজাতির গাছে। তবে ফুলগাছের সংখ্যায় বেশি। ফলে রাজশাহী নগরীর সড়ক বিভাজন আর তার পাশের থাকা গাছগুলোতে যেন রঙ্গিন ফুলের পসরা। পুরো নগরী ভরে উঠেছে ফুলে ফুলে। এতে করে পথচারীদের মাঝে বাড়তি ভাল লাগাও কাজ করছে। নগরীর সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজশাহী নগরীর সড়কের পাশের গাছগুলোতে শোভা পাচ্ছে রঙ্গন। সঙ্গে রয়েছে বিদেশী হরেক জাতের ফুল। এসবের মধ্যে রয়েছে জ্যাকারেন্ডা, হলুদ এ্যালমান্ডা, টগর, বেলী, শিউলি, কাঠগোলাপ প্রভৃতি। সবমিলিয়ে নানা রঙের ফুলে ফুলে এ এক অন্যন্য সৌন্দর্য ছড়িয়েছে পুরো নগরীজুড়ে। এই বর্ষায় চোখ জুড়ান বর্ণিল ফুল সবার মনকে নাড়া দেয় খুব গভীরভাবে। ইট পাথরের শহরে এখন চোখে পড়বে এসব বাহারি ফুল। রাজশাহী নগরীর এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত চোখ মেললেই এখন নয়নাভিরাম দৃশ্য। গাছে গাছে ফুলের অপরূপ সমারোহ। এদের মধ্যে সবার কাছে আকর্ষণীয় সড়কের বিভাজনে রঙ্গনসহ হাজারও ফুল। শোভাবর্ধণকারী ফুলের গালিচা যেন পেতেছে শহরের পথে প্রান্তরে। প্রকৃতিতে এখন শোভা ছড়াচ্ছে রঙ্গিন হয়ে ফোটা আরও হাজারও ফুল। গ্রীষ্ম পেরিয়ে বর্ষা এলেও এখনও টিকে আছে, জারুল, সোনালু, হিজল, মে ফ্লাওয়ার। বর্ষার এসব ফুলের সতেজ হাসিতে মুগ্ধ হয়ে পড়েন সবাই। চোখ ধাঁধানো রংয়ের বিচ্ছুরণ নিয়ে প্রকৃতিতে নিজের কথা জানান দিয়েছে রঙ্গন। চমৎকার লালচে রংয়ে রাঙ্গানো এ ফুল মনের গহীনে জাগ্রত করে এক অন্য রকম ভাল লাগা। লাল বেগুনির পাশাপাশি হলুদে ছাওয়া ঝুমকার মতো ঝুলে থাকা সোনালু ফুল যে কারও মন ছুঁয়ে যাবে। সোনালু গাছ আমাদের দেশে ঔষধি গাছ হিসেবেই বেশি পরিচিত। গ্রামাঞ্চলে এ গাছকে অনেকে বানর লাঠি গাছও বলে থাকে। ছোট আকৃতির রক্ত রাঙ্গা হাজারও ফুলের গাছের নিচে ঝরে পড়ে সৃষ্টি করে এক দৃষ্টি নন্দন পুষ্পশয্যা। এই বর্ষায় শিউলির দেখা মিলেছে রাজশাহী অঞ্চলে। এমন পরিস্থিতিতে রাস্তার পাশে প্রকৃতিতে সাজানো যেন ব্যতিক্রমী এক দৃশ্য। প্রকৃতি তার আপন মহিমায় ঠিকই নিজেকে তুলে ধরেছে। অনেকের বাসাবাড়ির ছাদেও নানা রকম ফুল ফুটে থাকতে দেখা গেছে এই বর্ষায়। শহুরে জীবনের হাজারও ব্যস্ততার ফাঁকে এমন হাজারো ফুলের স্বর্গরাজ্য যেন প্রশান্তির দোলা দেয় মানবজীবনে। নগরীর উপশহরের শাহীন মঞ্জিল, সাগরপাড়ার তনুশ্রি ভিলা ছাড়াও বিভিন্ন বাড়ির ছাদে ছাদে দেখা মিলেছে হরেক ফুলের। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক এএইচএম মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘এখন এসব ফুলের মৌসুম। যা প্রকৃতিকে রঙ্গিন করে তোলে।
×