ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

উত্তরাঞ্চলে ইতোমধ্যেই ডুবে গেছে নিচু এলাকা

বন্যার পদধ্বনি

প্রকাশিত: ০০:৩৭, ২৩ জুন ২০২০

বন্যার পদধ্বনি

সমুদ্র হক, বগুড়া অফিস ॥ উত্তরাঞ্চলে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা- বন্যার পদধ্বনী শোনা যায়। করোনার থাবার সঙ্গে বন্যার থাবা যোগ হয়ে কী পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে এ নিয়ে ভাবনা সকলের। গত বছর জুলাইয়ের মধ্যভাগে উত্তরাঞ্চলে বড় বন্যা আঘাত করেছিল। চলতি বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই বৃষ্টির পানি ও উজানী ঢলে নদনদীর পানি বেড়ে নদীতীর ও চরগ্রামের মানুষকে শঙ্কিত করে তুলেছে। ইতোমধ্যে যমুনার নিচু এলাকার আউশ ও পাট ফসল ডুবে গেছে। লোকজন এখনই শুকনো ভূমি দেখে রাখছে। বগুড়ার যমুনা ও বাঙালী নদী তীরবর্তী সারিয়াকান্দি, ধুনট ও সোনাতলা এলাকায় নদীর পানি বাড়ছে। প্রতিদিন বৃষ্টি হচ্ছে। কখনও ভারি কখনও মাঝারি। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে যমুনা ও বাঙালী নদীর পানি এখনও বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। তবে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে জুনের শেষে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। আবহাওয়া বিভাগও একই সময়ে ভারি বর্ষণের আভাস দিয়েছে। পানি প্রকৌশলী হাসান মাহমুদ জানিয়েছেন, উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি নির্ভর করে উজানের পাহাড়ী ঢল এবং ভারতের সেভেনসিস্টার পরিচিতি পাওয়া রাজ্যগুলোতে ভারি বর্ষণের প্রভাবে। জুনের দ্বিতীয় ভাগে ভারতের আসম মেঘালয়, সিকিম, জলপাইগুড়িতে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়েছে। যা এখনও অব্যাহত আছে। উজানের ¯্রােতের এই ধারা প্রথমে আঘাত করছে উত্তরাঞ্চলের নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের তিস্তায়। ইতোমধ্যে তিস্তার পানি একদফা বিপদসীমা অতিক্রম করে কমতে শুরু করেছে। পুনরায় ভারি বর্ষণে ফের বিপদসীমা অতিক্রম করবে। জল প্রবাহের এই ধারায় ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার সবগুলো এবং গঙ্গা-পদ্মা অববাহিকার নদীগুলোর পনি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে। তবে এই বন্যা বড় না মাঝারি হবে তা এই মুহূর্তে বলা যায় না। এদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, ব্রহ্মপুত্র যমুনা এবং পদ্মা অববাহিকায় নদনদীর পানি বাড়ছে। ২৬ জুন পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে। বর্তমানে নদীগুলোর ১০১টি পর্যবেক্ষণ পয়েন্টের মধ্যে ৬৮টিতেই পানি বেড়েছে। যে পয়েন্টগুলোর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। তাদের পূর্বাভাস-জুনের শেষেই রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের কয়েকটি জেলা এবং মধ্যাঞ্চলে যমুনা নদী এলাকায় বন্যা ধাক্কা দিতে পারে। যমুনার কিছু এলাকায় এখনই বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জের যমুনা তীরের এলাকা ও চরগ্রাম। এই এলাকার মাটির বাঁধগুলোও হুমকির মুখে আছে। বগুড়ার সারিয়াকান্দির কাজলার চর ধারাবর্ষা চর গ্রামের নিচু এলাকায় পানি বেড়ে ফসল ডুবেছে। ধুনটের ভা-ারবাড়ি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে সদ্য রোপিত পাট ও আউশের আবাদ তলিয়ে গেছে। কৃষকরা বলছেন বৃষ্টির পানি কমে গিয়ে বন্যা না হলে আবাদের তেমন ক্ষতি হবে না। বড় বন্যা হলে আবাদের ক্ষতি হবে। গলাচিপা স্টাফ রিপোর্টার গলাচিপা থেকে জানান, পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধে ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ঘূর্ণিঝড় আমফান পরবর্তী ভাঙ্গন তীব্র আকার নিয়েছে। ভাঙ্গনকবলিত এলাকা দিয়ে হু হু করে নদী ও সাগরের পানি লোকালয়ে ঢুকছে। এর ফলে কয়েকটি এলাকায় ইতোমধ্যে রবিশস্য ও আউশের যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে। রোপা আমনের চাষ নিয়েও আশঙ্কা বাড়ছে।
×