ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সেব্রিনা ফ্লোরার নামে ভুয়া ফেসবুক এ্যাকাউন্ট খুলে বিভ্রান্তির তথ্য

গুজব রটনাকারীদের গ্রেফতারে বিশেষ অভিযান

প্রকাশিত: ২৩:১৪, ২ জুন ২০২০

গুজব রটনাকারীদের গ্রেফতারে বিশেষ অভিযান

গাফফার খান চৌধুরী ॥ জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরার নামে ভুয়া ফেসবুক এ্যাকাউন্ট খুলে বিভ্রান্তির তথ্য ছড়ানোর সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এমন একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির ছবি ব্যবহার করে গুজব ছড়ানোর বিষয়টিকে তদন্তে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলার পাশাপাশি মূলত কারা কি উদ্দেশে গুজব ছড়াচ্ছে তা জানতে মরিয়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ইতোপূর্বে একটি চক্র আইইডিসিআরের দেয়া হটলাইন ও পরামর্শ দেয়ার জন্য চিকিৎসকদের দেয়া নম্বরগুলোতে সব সময় ফোন করে ব্যস্ত রাখত। দায়িত্বরত চিকিৎসকদের তারা নানাভাবে ব্যতিব্যস্ত করে রাখত। যাতে তারা করোনা আক্রান্ত বা অন্যদের চিকিৎসা দিতে ব্যর্থ হয়। এমন সুযোগে তারা দায়িত্বরত চিকিৎসকরা করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে বলে গুজব ছড়িয়েছিল। সেই চক্রের এক হোতাকে গ্রেফতারের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। ওই চক্রটিই সেব্রিনা ফ্লোরার নামে এমন গুজব ছড়াতে পারে বলে জানিয়েছে সিআইডি। ইতোমধ্যেই সেব্রিনা ফ্লোরার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে গুজব সৃষ্টিকারীদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা ও তদন্তকারী সংস্থাগুলো। গত ৩১ মে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআরের তরফ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরার নামে কয়েকটি ভুয়া ফেসবুক এ্যাকাউন্ট খুলে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এমনকি সম্প্রতি এ ধরনের কিছু স্ট্যাটাস ভাইরাল হয়েছে। তাতে করোনা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার উপায় হিসেবে মনগড়া কিছু পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এমনকি ইউটিউব চ্যানেল খুলে সেব্রিনা ফ্লোরার ছবি, নানা অবৈজ্ঞানিক ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির এবং সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করতেই এসব করা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে প্রতিষ্ঠানটির তরফ থেকে জানানো হয়। পুলিশের তদন্ত বিভাগ সিআইডির সাইবার ক্রাইম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মোঃ ফয়সাল আহম্মেদ জনকণ্ঠকে বলেন, তারা বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। কারণ তার মতো এমন দায়িত্বশীল ব্যক্তির নামে গুজব ছড়ানোর কারণে সমাজে এবং মানুষের মধ্যে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। গুজব রটনাকারী এবং তার ছবি ব্যবহার করে ইউটিউব চ্যানেল তৈরির সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত আছে। এজন্য প্রাথমিকভাবে ওইসব ফেসবুক আইডি ও ইউটিউব চ্যানেলের ওপর সার্জিক্যাল মনিটরিং করা হচ্ছে। এই কর্মকর্তা বলছেন, খুব সম্ভবত একই চক্র এবার সেব্রিনা ফ্লোরার নামে অপপ্রচার চালাচ্ছে। ইতোপূর্বে একটি চক্র আইইডিসিআরের দেয়া হটলাইন ও পরামর্শের জন্য দেয়া চিকিৎসকদের নম্বরগুলো সারাক্ষণ ফোন করে ব্যস্ত রেখে দিত। যাতে সত্যিকারের করোনার উপসর্গ থাকা ব্যক্তিরা যোগাযোগ করতে না পারেন। এমনকি আক্রান্তরা যাতে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে না পারেন। চক্রটি অন্তত একটানা ১৫ দিন এমন কর্মকা- চালিয়েছে। এতে মানুষের মধ্যে করোনা আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা পাচ্ছে না বলে এক ধরনের বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়েছিল। অনেকেই বলেছেন, হট নম্বরে বা চিকিৎসকদের নম্বরে ফোন করে পাওয়া যায় না। এই সুযোগে চক্রটি সরকার ও করোনাভাইরাস এবং আইইডিসিআর নিয়ে নানা ধরনের মনগড়া তথ্য ছড়িয়েছিল। বিষয়টি তাদের মনিটরিংয়ে প্রথম ধরা পড়ে। দেখা গেছে, একই ব্যক্তি একই নম্বরে বা বিভিন্ন নম্বরে কমপক্ষে ৩৫ বার ফোন করেছেন।
×