ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেনার হ্যান্ডলিং অর্ধেকে নেমেছে

প্রকাশিত: ০৯:০২, ৩১ মার্চ ২০২০

চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেনার হ্যান্ডলিং অর্ধেকে নেমেছে

হাসান নাসির, চট্টগ্রাম অফিস ॥ করোনা সতর্কতার মারাত্মক প্রভাব পড়েছে চট্টগ্রাম বন্দরে। কার্যক্রম নেমে এসেছে অর্ধেকেরও নিচে। তবে সরকার ঘোষিত বন্ধের মধ্যেও চালু আছে অপারেশনাল কার্যক্রম। জাহাজ থেকে কন্টেনার নামছে, কিন্তু সে অনুপাতে ডেলিভারি হচ্ছে না। ফলে ইয়ার্ডে কন্টেনারের স্তূপ বেড়েই চলেছে। কয়েকদিনের মধ্যেই ছাড়িয়ে যাবে ধারণ ক্ষমতা। পণ্য পরিবহনে ব্যবহৃত যানবাহন চলাচলে বাধা না থাকায় কন্টেনার ডেলিভারির গতি বাড়াবার চেষ্টা করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত উত্তরণ সম্ভব কিনা তা নিয়ে উৎকণ্ঠিত বন্দর ব্যবহারকারীরা। চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা যায়, দেশে ছুটি ও যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলেও জেটিতে পণ্য ওঠানামা চলছে। চট্টগ্রাম বন্দরে সাধারণ সময়ে দৈনিক ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টিইইউএস কন্টেনার হ্যান্ডলিং হয়ে থাকে। বিশ^ব্যাপী করোনা পরিস্থিতির কারণে এখন তা কমেছে। এরপরও প্রতিদিন ২ থেকে আড়াই হাজার কন্টেনার হ্যান্ডলিং হচ্ছে। কিন্তু করোনা ভাইরাস সতর্কতায় দেশে চলমান ছুটির কারণে সেভাবে ডেলিভারি হচ্ছে না। এতে করে ইয়ার্ডে ক্রমেই বাড়ছে কন্টেনার, যা ধারণ ক্ষমতা ছুঁয়ে যাবে কয়েকদিনের মধ্যে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক জনকণ্ঠকে জানান, সোমবার সকালে ইয়ার্ডে কন্টেনার ছিল ৪০ হাজারের কিছু বেশি। রবিবার বন্দর থেকে কন্টেনার ডেলিভারি হয়েছে প্রায় ১৩শ’। বুকিং অনুযায়ী সোমবারের ডেলিভারি হওয়ার কথা ৬৪৭ কন্টেনার। সে হিসাবে প্রতিদিনই অন্তত দেড় হাজার করে কন্টেনার জমা থেকে যাচ্ছে। ফলে ইয়ার্ড ভরে যাচ্ছে কন্টেনারে। চট্টগ্রাম বন্দর সচিব আরও জানান, করোনার কারণে জাহাজের সংখ্যা কিছুটা কমেছে। সোমবার ইয়ার্ডে কন্টেনার জাহাজ ছিল ১১টি। তবে অপেক্ষমাণ কোন জাহাজ নেই। এ সময়ে চীনসহ করোনা আক্রান্ত দেশগুলো জাহাজের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। বহির্নোঙ্গরে দুটি চীনা জাহাজ কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। সাধারণত একটি জাহাজ চীনের বন্দর থেকে যেদিন ছাড়ে সেদিন থেকে এ ১৪ দিন গোনা হয়। অর্থাৎ বারো দিনে একটি জাহাজ এসে পৌঁছলে সেটিকে দুদিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। চট্টগ্রাম বন্দরে এখন স্বাভাবিক কার্যক্রম অর্ধেকেরও নিচে নেমে এসেছে। বন্দরকে ঘিরে পুরো এলাকায় প্রতিদিনকার যে কর্মযজ্ঞ, তা এখন নেই। বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, বন্দরকে এমন চেহারায় তারা আগে কখনই দেখেননি। স্থবিরতার মধ্যে পড়েছে দেশের আমদানি-রফতানি তথা অর্থনীতি। এর প্রভাব পড়েছে বন্দরের ওপর। সারা পৃথিবীরই একই চিত্র। চট্টগ্রাম বন্দরও এর বাইরে নয়। বছরে ৩০ লাখের বেশি কন্টেনার হ্যান্ডলিং করা বন্দর এখন কর্মচাঞ্চল্য অনেকটাই হারিয়েছে। বন্দর সূত্র জানায়, বর্তমান পরিস্থিতিতে কন্টেনার হ্যান্ডলিং কমলেও যেটুকু আসছে, তা ডেলিভারি হচ্ছে না দেশ থমকে থাকার কারণে। দেশের এমন অবস্থাতে যদি পণ্য ডেলিভারি স্বাভাবিক না থাকে, তাহলে মেনে না নিয়েও উপায় নেই। তারপরও চেষ্টা করা হচ্ছে ডেলিভারির গতি বাড়ানোর। সড়কে যাত্রীবাহী যানচলাচল বন্ধ থাকলেও পণ্যবাহী গাড়ি চলার উপরে নিষেধাজ্ঞা নেই। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কন্টেনার ডেলিভারি আরও দ্রুত করতে কী করা যায় সে পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
×