ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হোম কোয়ারেন্টাইনে অবস্থানরতদের নিয়ে পুলিশী তদারকি

করোনা মোকাবেলায় চট্টগ্রামে প্রশাসনিক ব্যবস্থা

প্রকাশিত: ১১:১৫, ২৪ মার্চ ২০২০

করোনা মোকাবেলায় চট্টগ্রামে প্রশাসনিক ব্যবস্থা

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ক্রমাগতভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। বন্দরনগরী চট্টগ্রামও এর বাইরে নয়। এ ভাইরাসের সন্দেহ নিয়ে বিদেশ ফেরতদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার দফায় দফায় পরামর্শ প্রদান করছে জেলা প্রশাসন। কিন্তু এসব নির্দেশনা কার্যত পালন হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের হাটহাজারী, রাউজান, রাঙ্গুনিয়াসহ বিভিন্ন উপজেলায় বিদেশফেরতদের আধিক্য রয়েছে। মহানগরীতে অবস্থানরত কেউ কেউ আত্মগোপন করেছেন বলেও অভিযোগ উঠায় পুলিশ এদের খুঁজছে। এদিকে সোমবারও চট্টগ্রামে যানবাহন চলাচল ছিল খুবই কম। আদালতে কারাগার থেকে আনা হয়নি কোন আসামি। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী হাজিরা হয়েছে আইনজীবীর মাধ্যমে। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) নিয়ন্ত্রণাধীন ১৬ থানা এলাকায় হোম কোয়ারেন্টাইনে অবস্থানরত বিদেশফেরতদের কাছে কমিশনারের পক্ষ থেকে উপহারস্বরূপ কিছু ফল পাঠানো হয়েছে। নিরাপদ দূরত্ব থেকে এসব ফল কোয়ারেন্টাইনে থাকাদের পাশে পৌঁছে দিতে পুলিশকে নির্দেশনা দেয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, এ পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক প্রবাসীর কাছে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশী ব্যাখ্যায় জানানো হয়েছে, প্রথমত এসব প্রবাসীর মনোবল চাঙ্গা রাখা এবং দ্বিতীয়ত প্রবাসীরা হোম কোয়ারেন্টাইন মানছেন কিনা তা তদারকি করা। অপরদিকে চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন নগরীর বিভিন্ন স্থানে নগরবাসীদের সচেতন থাকার জন্য নিজে মাইকিং করেছেন। সঙ্গে তিনি হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও সাবান বিতরণ করেন। সোমবার সকালে মহানগরীর জিইসি মোড়, ওয়াসা মোড়, লালখান বাজার, ষোলশহর, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, চকবাজার, জামালখান, আন্দরকিল্লা, কাজির দেউড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং হয়েছে। এ সময় মেয়র বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রত্যেক মানুষকে সচেতন হতে হবে। তিনি বিদেশ ফেরতদের অবশ্যই হোম কোয়ারেন্টাইন মেনে চলার আহ্বান জানান। চট্টগ্রামে বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে চিকিৎসকদের পিপিই (পার্সোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্টস) সরবরাহের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পিপিই ছাড়া চিকিৎসক ও নার্সরা সন্দেহজনক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে নারাজ। এমনকি সর্দি, কাশি নিয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল ক্লিনিকে যাওয়া রোগীদেরও ভর্তি করানো হচ্ছে না। উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম মেড্যিাকল কলেজ হাসপাতাল ছাড়া এ নগরীতে কোন হাসপাতালে আইসিইউ নেই। অথচ করোনা আক্রান্ত রোগীর জন্য আইসিইউ খুবই জরুরী। চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডাঃ সেখ ফজলে রাব্বি মিয়া সাংবাদিকদের জানান, চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমান বন্দরের পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বিদেশীদের আগমনের বিষয়টি থাকার প্রেক্ষাপটে এদের কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদিও ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে সব ধরনের ফ্লাইট অবতরণ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গণমাধ্যম কর্মীদের প্রতি পরামর্শ করোনা সতর্কতায় গণমাধ্যম কর্মীদেরও সচেতন থেকে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ হাসান শাহরিয়ার। সোমবার তিনি বলেন, সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন গণমাধ্যম কর্মীরা। কারণ পেশাগত কাজে তাদের অনেক স্থানে যেতে হয়। দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের নিরাপদ থাকতে হবে। সাংবাদিকরা যা ব্যবহার করেন, বিশেষ করে মাইক্রোফোন, কম্পিউটারসহ সবকিছু নিরাপদে রেখে কাজ করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে গেলে অন্তত তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন। সম্ভব হলে সশরীরে উপস্থিত না থেকে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নিন। গণপরিবহন যথাসম্ভব পরিহার করার পরামর্শও দেন স্বাস্থ্য পরিচালক। এদিকে, করোনা সতর্কতায় সোমবার চট্টগ্রাম আদালতে কারাগার থেকে কোন আসামিকে আদালতে আনা হয়নি।
×