ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শ ম রেজাউল প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী, খসরু সমাজকল্যাণ শরীফ গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১০:৫৯, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০

শ ম রেজাউল প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী, খসরু সমাজকল্যাণ শরীফ গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের এক বছরের মাথায় তিন মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রীর দফতর পরিবর্তন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই পরিবর্তনে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় হারিয়েছেন শ ম রেজাউল করিম। তাকে ওই দফতর থেকে সরিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হয়েছে। এছাড়া দফতর পরিবর্তন হয়েছে প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু ও শরীফ আহমেদের। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী খসরুকে পাঠানো হয়েছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে। সমাজকল্যাণ থেকে শরীফকে নেয়া হয়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী করে। এই রদ বদলে এখন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে কোন পূর্ণ মন্ত্রী নেই। প্রতিমন্ত্রী হিসেবে থাকছেন শরীফ। বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে তিন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পুনর্বণ্টনের প্রজ্ঞাপন হয়। বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী রুলস অব বিজনেস, ১৯৯৬ এর রুল ৩ (৪) অনুযায়ী এসব মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পুনর্বণ্টন করা হয়েছে। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়ের পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ৭ ফেব্রুয়ারি নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ নেন। এরপর এরও আগে একবার মন্ত্রিসভায় দুই প্রতিমন্ত্রীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। একবার সামান্য রদবদল আনা হয়। গত বছরের মে মাসে মন্ত্রিসভায় সামান্য রদবদল আনা হয়। সে সময় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মুরাদ হাসানকে তথ্য প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছিল। গত বছরের ১২ জুলাই ইমরান আহমেদকে প্রতিমন্ত্রী থেকে প্রবাসী কল্যাণের মন্ত্রী এবং সংসদ সদস্য ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরাকে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নতুন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। সরকারের চলতি মেয়াদে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী সকলকে সতর্ক করে দিয়েছে বলেছিলেন, দুর্নীতি করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। সে ভাবে সতর্ক হয়ে কাজ করবেন। কেউ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়লে ছিটকে পড়বেন। নিচে থেকে যেমন তুলে এনেছি, তেমনি আবার নিচে পড়ে যাবেন। সে হিসেবে কেউ কোন মন্ত্রণালয় থেকে ছিটকে পড়েনি। তবে কাজের দক্ষতা এবং প্রয়োজনীয়তার ওপর ভিত্তি করে প্রধানমন্ত্রী এই রদবদল করেছেন বলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন। বছরের শুরুতে মন্ত্রিসভায় রদবদল হতে পারে বলে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। তখন বলা হয়, আগামী ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শুরুর আগেই মন্ত্রিসভায় রদবদল ও সম্প্রসারণের কাজ সম্পন্ন করা হতে পারে বলে নেতৃবৃন্দরা অনেকে বলেন। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে বলা হয়, মন্ত্রিসভায় রদবদলের ক্ষেত্রে টানা তৃতীয় মেয়াদের এ সরকারের গত এক বছরের কাজের মূল্যায়ন করা হবে। আর মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে দলের ২১তম জাতীয় সম্মেলনের পর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন এবং পরবর্তী সাংগঠনিক অবস্থা বিবেচনায় নেয়া হতে পারে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে আসার মতো যোগ্য বলে দলটির উচ্চপর্যায়ে বিবেচিত হওয়ার পরও সেখানে স্থান মেলেনি এমন দু-একজন নেতার ঠাঁই হতে পারে মন্ত্রিসভায়। তখন গণভবন সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বর্তমান মন্ত্রিসভার কাজের মূল্যায়নে একাধিক মন্ত্রণালয়ের দুর্বলতার চিত্র ফুটে উঠেছে। এসব মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা কয়েকটি স্পর্শকাতর ইস্যুতে সফলতা দেখাতে পারেননি বলে মনে করছেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা। এ কারণে সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। গণভবনের সূত্রটি তখন জানিয়েছিলেন, আগামী ১৭ মার্চ শুরু হবে বছরব্যাপী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সরকারের বছরজুড়ে জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের বিভিন্ন কর্মসূচী রয়েছে। এসব কর্মসূচী নিয়ে আওয়ামী লীগ ও সরকারের ব্যস্ততা রয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শুরুর আগেই মন্ত্রিসভায় রদবদল ও সম্প্রসারণের কাজটি সম্পন্ন করতে চান। তারই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার রদবদল করা হলো। এটি আওয়ামী লীগের তৃতীয় মেয়াদের দ্বিতীয় রদবদল।
×