ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

লিবিয়া থেকে ফিরলেন ১৪৮ জন

প্রকাশিত: ১১:৩৬, ৩০ জানুয়ারি ২০২০

লিবিয়া থেকে ফিরলেন ১৪৮ জন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সৌদি আরবের পর এবার যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করায় লিবিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন ১৪৮ বাংলাদেশী। জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা- আইওএমের ভলান্টারি হিউম্যানিটারিয়ান রিটার্ন (ভিএইচআর) কর্মসূচীর মাধ্যমে নিরাপদে দেশে ফিরেছেন তারা। আইওএমের ভাড়া করা বিমানে মঙ্গলবার লিবিয়ার মিসারত বিমানবন্দর থেকে রওনা দিয়ে বুধবার দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তারা। এদের মধ্যে রয়েছেন- যুদ্ধাহত, সমুদ্রপথে ইউরোপ যেতে ব্যর্থ এমনকি লিবিয়ার জেলে বন্দী থাকা বাংলাদেশীরাও। ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুরের মোঃ আকবর চার বছর আগে লিবিয়ায় গিয়েছিলেন পরিবারের ভাগ্য বদলাতে। তিনি বলেন, গ্রামের দালালের মাধ্যমে লিবিয়ায় গিয়েছিলেন, তবে বেতন ছিল খুবই কম। কোনমতে সেখানে নিজে চলতে পারলেও পরিবারের জন্য কিছুই পাঠাতে পারতেন না। যে কারখানায় কাজ করতেন হঠাৎ সেখানে একদিন বিমান হামলা হয়। চার বাংলাদেশীসহ ১৩ জন মারা যান। আকবর বলেন- সে এক ভায়াবহ অভিজ্ঞতা। অল্পের জন্য সেদনি বেঁচে গিয়েছি। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম দেশে ফিরে আসব। পরে লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে আইওএমের সঙ্গে যোগাযোগ করে স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করেন আকবর। তিনিও ১৪৮ জনের সঙ্গে দেশে ফিরেছেন। এ বিষয়ে আইওএমের ঢাকা কার্যালয় জানায়, ফিরে আসা ব্যক্তিরা আইওএমের মাধ্যমে সামাজিক সেবা, তৎক্ষণিক সেবা, ফিরে আসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ৈৈতরি করা, স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং বাংলাদেশ সরকারের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সহায়তা পেয়েছে। এছাড়া ঢাকায় পৌঁছানোর পর আইওএম বাড়ি ফিরতে প্রত্যেককে চার হাজার ৭৩০ টাকা, খাবার, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও মানসিক সেবা দিয়েছে। ভবিষ্যতে ফিরে আসা এসব ব্যক্তিকে অর্থনৈতিক সহযোগিতাও করবে আইওএম। যাতে তারা দেশেই আয় করে জীবন চালাতে পারে। আইওএম বাংলাদেশের চীফ অব মিশন গিওর্গি গিগাওরি বলেন, লিবিয়ার প্রতিকূল অবস্থা অব্যাহত থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বাংলাদেশীদের সুরক্ষা ও সহায়তা দিতে সর্বদা আমরা তৎপর। যারা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে তাদের তাৎক্ষণিক সব ধরনের সহযোগিতা নিশ্চিতের চেষ্টা করছি আমরা। একই সঙ্গে ফিরে আসা ব্যক্তিদের দীর্ঘমেয়াদে সহযোগিতাও করব আমরা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে বাংলদেশ সরকার ও লিবিয়া কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় ২০১৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এক হাজার ৪০০ জনের বেশি বাংলাদেশীকে দেশে ফিরতে সহযোগিতা করছে আইওএম। বিশ্বব্যাপী ভিএইচআর প্রোগ্রামের সহযোগিতায় ঝুঁকিপূর্ণ অভিবাসীদের প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ও সহায়তা দিয়ে থাকে আইওএম।
×