ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ব্রিফিংয়ে কাদের

বিএনপি প্রার্থী নিজেই প্রতিপক্ষের অফিসে লাথি মেরেছেন

প্রকাশিত: ১১:০৪, ২৮ জানুয়ারি ২০২০

বিএনপি প্রার্থী নিজেই প্রতিপক্ষের অফিসে লাথি মেরেছেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গত রবিবার রাজধানীর গোপীবাগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসি) নির্বাচনের প্রচারে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের জন্য বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনকে দুষলেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, বিএনপি প্রার্থী নিজেই প্রতিপক্ষের অফিসে লাথি মেরেছেন, ভিডিও ফুটেজে তা আছে। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) উচিত সঠিক তদন্ত করে সত্য উদঘাটন করা। সোমবার সচিবালয়ের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক ইস্যুতে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কাদের এসব কথা বলেন। এ সময় চলমান রাজনীতি, সীমান্ত হত্যাসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন তিনি। ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিতে রীতিমতো উত্তাপ ছড়াচ্ছে। এরি ধারাবাহিকতায় গত রবিবার দুপুরে গোপীবাগে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেনের সমর্থকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ বাধে। এতে এক সংবাদকর্মীসহ ডজনখানেক লোক আহত হন। সংঘর্ষের পর সাবেক বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, তাদের জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে আওয়ামী লীগের লোকজন বিনা উস্কানিতে হামলা করেছে। তবে তিনি এ ধরনের হামলায় ভীত নন বলেও জানান ইশরাক। এ সংঘর্ষের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচন হওয়ার পথে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে না। ভিডিও ফুটেজ আছে। ফুটেজে যা কিছু আছে তাতে প্রমাণ হয় না যে আওয়ামী লীগের সমর্থকরা আগে হামলা করেছে। তিনি বলেন, আমি মনে করি না, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের কোন সংঘর্ষ বা সংঘাত হয়নি। একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এটার ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। ভিডিও ফুটেজে যেটা পাওয়া গেছে সেটাতো গুলিটা কোন পক্ষ থেকে আসছে, তারপর অফিসে লাথি মারা- এটিও ফুটেজে আছে। প্রতিপক্ষের অফিসে প্রার্থী নিজেই লাথি মেরেছেন। সেটাও কিন্তু ফুটেজে আছে। এটা নিয়ে আমরা আমাদের কথা বলব। আপাতদৃষ্টিতে মনে হবে প্রত্যেকেই নিজের পক্ষে কথা বলছে। বিএনপি তাদের কথা বলছে। বিদেশী রাষ্ট্রদূতদের তারা (বিএনপি) বোঝাতে চাইছে যে, আক্রমণটা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে ভিডিও ফুটেজে যা কিছু আছে, তাতে কিন্তু সেটা মনে হয় না। ওবায়দুল কাদের বলেন, এখানে নির্বাচন কমিশনের উচিত সঠিক তদন্ত করে সত্য উদঘাটন করা। সত্য উদঘাটন করে অপরাধ যারই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে নির্দেশ দিতে পারে নির্বাচন কমিশন। সংঘর্ষের ঘটনাটির বিষয়ে বিএনপির কর্মীরা বলছেন, মতিঝিল এলাকায় প্রচার চালিয়ে দুপুর ১টার দিকে ইশরাক মিছিল নিয়ে গোপীবাগে নিজের বাসার দিকে যাওয়ার সময় সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের মোড়ে ‘আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা’ তাদের ওপর হামলা করেন। বিএনপি মনোনীত মেয়রপ্রার্থী ইশরাক হোসেনের গণসংযোগের সময় উভয়পক্ষের মধ্যে হামলার ঘটনাটি অনাকাক্সিক্ষত। এটি নির্বাচনে কোন প্রভাব ফেলবে না। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে অপরাধীদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন কমিশনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই, এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের বক্তব্য সঠিক নয়। তিনি যা বলেছেন সেটি তার মনগড়া কথা। নির্বাচন কমিশনে কখনও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকে না। কোন দেশে এটি আছে তা আমারা জানা নেই। এখনও বিএনপির কিছু কমিশনার প্রার্থী ঠিকমতো ক্যাম্পেইন করতে পারছেন না, তাদেরকে পুলিশ হয়রানি করছে, এ বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে আমরা পুলিশকে এই ধরনের কোন নির্দেশনা দেইনি। তাছাড়া পুলিশ এখন নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে চলছে। তাই তাদের অভিযোগগুলো অন্ধকারে ঢিল ছোড়ার মতো। এর কোন ভিত্তি নেই। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ৭৬ বছরে পা দিলেন, এ সম্পর্কে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তার (মির্জা ফখরুল) জন্য শুভকামনা। তিনি আরও অনেকদিন বাঁচুন। তিনি সুস্থভাবে বাঁচুন আমি আল্লাহর কাছে সেই প্রার্থনা করি।’ সীমান্ত হত্যার বিষয়ে জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, সীমান্ত হত্যার বিষয়ে ফরেন মিনিস্টার কথা বলেছেন। তিনিই আসলে রিয়াল অথরিটি। কাজেই এই ইস্যুতে আমার কথা বলা ঠিক হবে না। ইভিএম নিয়ে রবিবার কয়েক কূটনীতিকের কাছে বিএনপি অভিযোগ করেছে, এ বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ইভিএমের বিষয়ে বিএনপির দায়ের করা রিট হাইকোর্ট খারিজ করে দিয়েছে। এই সিস্টেম নিয়ে বিতর্কের আর কোন সুযোগ নেই।
×