ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জনপ্রত্যাখ্যাত বিএনপি ক্ষমতায় আসার ষড়যন্ত্র করছে ॥ কাদের

প্রকাশিত: ১০:২৪, ২৭ জানুয়ারি ২০২০

  জনপ্রত্যাখ্যাত বিএনপি ক্ষমতায় আসার ষড়যন্ত্র  করছে ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি চক্রান্তের চোরাপথ দিয়ে ক্ষমতায় আসার ষড়যন্ত্র করছে। বিএনপিকে জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে, প্রত্যাখ্যাত হয়ে তারা ষড়যন্ত্র করছে। এদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। রবিবার রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মোটরচালক লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা সিটি নির্বাচনে সরকার সম্পূর্ণ হস্তক্ষেপবিহীন, নিরপেক্ষ করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের কথাও জানান তিনি। বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশে আবার রক্তস্রোত বইবে দাবি করে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে কাদের বলেন, ‘আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে। অপরাজনীতির হোতা বিএনপি নামক অপশক্তি যেন আর ক্ষমতায় আসতে না পারে। জঙ্গীবাদের পৃষ্ঠপোষক এই অপশক্তি। এই অপশক্তি সাম্প্রদায়িক অপশক্তির পৃষ্ঠপোষক, এই বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক অপরাজনীতির সূচনা করেছে।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও জঙ্গী পৃষ্ঠপোষকতার রাজনীতি-বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতি। এদেশের মানুষ তাদের এই রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করেছে। বাংলাদেশে এই অপশক্তি যদি আবার ক্ষমতায় আসতে পারে, তবে দেশ আবারও অন্ধকারে তলিয়ে যাবে। বিএনপি নামক অপশক্তি যদি আবারও ক্ষমতায় আসে এই দেশে রক্তস্রোত বয়ে যাবে। এরা যদি আবার ক্ষমতায় আসে, তবে বাংলাদেশ আবারও সারাবিশ্বে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসে চ্যাম্পিয়ন হবে। ঢাকা সিটি নির্বাচনে জয় পেতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা ভোটারদের ঘরে ঘরে যাচ্ছেন জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকারের সব এজেন্সি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা সিটি নির্বাচনে কোন ধরনের হস্তক্ষেপ যেন কেউ না করে। এ ব্যাপারে তিনি সবাইকে ক্লিয়ার মেসেজ দিয়েছেন। কাজেই এখানে সংশয়ের কোন কারণ নেই। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, নির্বাচনে জনগণ যা চায় তাই হবে। এত কাজ করার পরও জনগণ যদি ভোট না দেয়, জোরাজুরি, জবরদস্তি করে জনসমর্থন আদায় করে ক্ষমতায় থাকার কোন ইচ্ছা আমার নেই। কাজেই আমরা সরকারের পক্ষ থেকে কোন ধরনের হস্তক্ষেপ করব না, এটা পরিষ্কার। আগেও বলেছি, এখনও স্পষ্টভাবে বলছি। ‘সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে সরকারী সংস্থাকে বাধ্য করে ব্যবহার করা হচ্ছে’- বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই দল (বিএনপি) আন্দোলনেও ফেল, নির্বাচনেও ফেল। আন্দোলনে ফেল করলে নির্বাচনেও ফেল করে। বিএনপি ফেলের মধ্যেই আছে। তাদের ভাগ্যে বিজয় কবে আসবে জানি না। নেতিবাচক রাজনীতির কারণে মানুষ আর তাদের সঙ্গে নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন অর্জন বিএনপি নেতিবাচক রাজনীতির ওপর সঙ্কটের যে কালোছায়া ফেলেছে, সে থেকে বিএনপির নিস্তারের কোন উপায় নেই। ওবায়দুল কাদের বলেন, আসলে নির্বাচনে বিএনপির অবস্থা কি হবে সেটা তারা বুঝে গেছে। বিএনপি নেতারা বুঝে গেছেন, এই নির্বাচনের বিজয়ের ব্যাপারে তারা যথেষ্ট সন্দিহান। বিজয়ী হতে পারবে না বলেই তারা আজকে বিভিন্ন ধরনের নালিশ করার পথ বেছে নিয়েছে। কিন্তু তারা যত অপপ্রচারই করুক দেশের মানুষ শেখ হাসিনাকেই চায়, আওয়ামী লীগকেই চায়। বাকশাল নিয়ে বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, উনি (মওদুদ) কী ভুলে গেছেন, এই বাকশালের কেন্দ্রীয় কমিটিতে তার দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের নামটাও ছিল। এটা কোন একদলীয় ব্যবস্থা নয়। এটা ছিল জাতীয় দল কৃষক-শ্রমিক, মেহনতী ও শোষিত মানুষের পক্ষের একটা সুশৃঙ্খল জাতীয় দল। এট ছিল একটা সাময়িক ব্যবস্থা। অপরাধ একটাই কৃষক আর শ্রমিকের নাম ব্যবহার করে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগকে পুনর্বিন্যাস করেছে, এটাই তাদের গাত্রদাহ। এটা আগেও ছিল, এখনও আছে। গাড়ি চালাতে গিয়ে বেপরোয়া না হতে চালকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, বেপরোয়া হলে দুর্ঘটনা অনিবার্য। গরিব মানুষরাই বেশি গাড়ি চালায়, নিজের জীবনের কথা, পরিবারে কথা এবং আপনার গাড়ির যাত্রী, সবার কথা ভাবতে হবে। আপনারা সতর্কভাবে গাড়ি চালাবেন। গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোনে কথা না বলতে চালকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এক হাতে কানে মোবাইল ফোন লাগিয়ে আরেক হাতে স্টিয়ারিং থাকলে দুর্ঘটনা অনিবার্য। গাড়ি চালানোর সময় কোন মাদক গ্রহণ করবেন না। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় মাদক গ্রহণ করে স্টিয়ারিং ধরেন ফলে দুর্ঘটনা হয়। কাজেই এই কাজটি আপনারা করবেন না। আওয়ামী মোটরচালক লীগের সভাপতি আলী হোসেনের সভাপতিত্বে সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এমপি, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুস সবুর, মোটরচালক লীগের সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার হোসেন চৌধুরী প্রমুখ।
×