ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিবন্ধী মেয়ের ধর্ষণের বিচার চাইতে গিয়ে মিথ্যা মামলার কবলে পিতা

প্রকাশিত: ১১:৪৮, ১৬ জানুয়ারি ২০২০

প্রতিবন্ধী মেয়ের ধর্ষণের বিচার চাইতে গিয়ে মিথ্যা মামলার কবলে পিতা

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলের কাছে এক নামে পরিচিত টিএসসিতে প্রায় চার দশক ধরে চা বিক্রি করে আসা স্বপন মামা। তার প্রতিবন্ধী মেয়ের ধর্ষণের বিচার চাইতে গিয়ে বর্তমানে উল্টো মিথ্যা মামলায় হাজিরা দিচ্ছেন তিনি ও তার পরিবার। তার পাশে দাঁড়িয়ে ধর্ষণের বিচার ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বুধবার বেলা ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে টিএসসিভিত্তিক সকল সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও ডাকসু নেতারা। এ সময় ডাকসুর সহ-সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, সদস্য রাকিবুল হাসান রাকিব, রাইসা নাসের, তানভীর হাসান সৈকত, বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ ভুক্তভোগী স্বপন মামা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আবির রায়হান। তিনি বলেন, স্বপন মামার প্রায় মানসিক ভারসাম্যহীন নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষণ করে তার গ্রামের এক লম্পট ব্যক্তি। বিচার চাইতে থানায় মামলা করেন ব্যথিত পিতা, আমাদের স্বপন মামা। অভিযুক্ত ধর্ষক গ্রেফতার হওয়ার পর সুবিচার পাওয়ার দিন গুনলেন স্বপন মামা ও তার পরিবার। অথচ সম্প্রতি জামিনে ছাড়া পেয়ে সেই অভিযুক্ত ধর্ষক উল্টো স্বপন মামা ও তার ছেলের নামে মিথ্যা, হয়রানিমূলক মাদকের মামলা করেছে। সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচী ঘোষণা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফিল্ম সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক বিএম জুবলি রহমান। তিনি বলেন, অভিযুক্ত ধর্ষকের জামিন বাতিল ও তার দায়ের করা নির্জলা মিথ্যা, হয়রানিমূলক মামলা থেকে স্বপন মামাসহ অভিযুক্তদের অব্যাহতি দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাচ্ছি। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় মানববন্ধন, দুপুর তিনটা থেকে টিএসসি ভিত্তিক সকল সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের অংশগ্রহণে আয়োজিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রতিবাদ কর্মসূচী। সংবাদ সম্মেলনে স্বপন মামা বলেন, আমি এ ক্যাম্পাসে অনেক দিন ধরে আছি। এ ক্যাম্পাসের সঙ্গে আমি জড়িত। আমার প্রতিবন্ধী মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছে। আসামিকে ধরা হলেও ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আমি বিচার তো পাইনি, উল্টো আসামিরা আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। তিনি বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন করছি, আমি যেন সঠিক বিচার পাই। প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর স্বপন মামার প্রতিবন্ধী মেয়েকে একই গ্রামের বাচ্চু মিয়া (৭০) ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। অভিযুক্তসহ তার দুই ভাইকে আসামি করে মামলা করার পর বাচ্চু মিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর ছয় মাস পর অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আসামিকে গত বছরের ২৭ নবেম্বর জামিন দিয়ে দেন। এরপর আসামিপক্ষের লোকজন ধর্ষণের শিকার মেয়ের বাবা স্বপন, তার ছেলে রনি এবং চাচাত ভাইকে আসামি করে প্রথমে মাদকের ও ডাকাতির মামলা করে।
×