ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন বছরের ৪ দিনে ২৪৭ জন ফিরলেন সৌদি আরব থেকে

প্রকাশিত: ১০:৩৭, ৬ জানুয়ারি ২০২০

নতুন বছরের ৪ দিনে ২৪৭ জন ফিরলেন সৌদি আরব থেকে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সৌদি আরব থেকে ফিরেছেন আরও একদল বৈধ শ্রমিক। গৃহকর্তার নির্যাতন ও পুলিশী ধরপাকড়ের মুখে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে দেশে ফিরতে হয়েছে। এবার এসেছেন ১৫ নারীসহ ১০৬। শনিবার রাত এগারোটা ২০ ও দেড়টায় সৌদি এয়ারলাইন্সের দুটি ফ্লাইটযোগে দেশে ফেরেন তারা। এ নিয়ে চার দিনে ২৪৭ বাংলাদেশী দেশে ফিরলেন। আজ ও আগামীকাল ফেরার অপেক্ষায় রয়েছে আরও দুই শতাধিক। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাদের অনেককেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়তে দেখা যায়। আর সকল নারীকর্মীর অভিযোগ সেই আগের মতোই। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মুখেই তাদের দেশমুখো হতে হয়েছে। সৌদি আরবের ‘সেফ হোমে’ থাকা নারায়ণগঞ্জের সোনিয়া আক্তার ও খাদিজা, সিরাজগঞ্জের রাশেদাসহ ১৫ নারীর সঙ্গে দেশে ফেরেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সেলিনা আক্তার ও শামিমা বেগম জানান, গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে সৌদি আরব গিয়ে তারা নিয়োগকর্তার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন। নির্যাতন সইতে না পেরে সেখান থেকে পালিয়ে আশ্রয় নেন জেদ্দায় বাংলাদেশ দূতাবাসের সেফহোমে। মাস চারেক আগে সৌদি গিয়ে টিকতে পারেননি চান্দিনা উপজেলার হানিফ। সৌদিতে তার পাসপোর্টের তিন মাসের এন্ট্রি ভিসার মেয়াদ শেষ হলে মালিক আর আকামা বাড়াননি। কর্মস্থল থেকে রুমে ফেরার পথে পুলিশ ধরলে তাকে দেশে পাঠানো হলো। ফিরেছেন টাঙ্গাইলের হামিদুল্লাহ, কুমিল্লার তোফাজ্জল, সিলেটের শুভ দেবনাথ। তাদের সবার অভিযোগ, আকামা তৈরির জন্য কফিলকে (নিয়োগকর্তা) টাকা দিলেও কফিল আকামা তৈরি করে দেয়নি। পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর কফিলের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও দায়িত্ব নিচ্ছে না বরং কফিল প্রশাসনকে বলেন ‘ক্রুশ’ (ভিসা বাতিল) দিয়ে দেশে পাঠিয়ে দিতে। একসঙ্গে এসেছেন শহীদ মিয়া (৪০)। আড়াই বছর আগে সাড়ে চার লাখ টাকা খরচ করে টাইলস ফিটিংয়ের কাজ নিয়ে গিয়েছিলেন সৌদি। দুর্ভাগ্যজনক তাকেও ফিরতে হয়েছে। ঢাকায় অবতরণের পর বরাবরের মতো ফেরত আসাদের মাঝে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে খাবার পানিসহ নিরাপদে বাড়ি পৌঁছানোর জন্য জরুরী সহায়তা দেয়া হয়। এ বিষয়ে ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচীর প্রধান শরিফুল হাসান জানান, ’১৯ সালে ২৪ হাজার ২৮১ বাংলাদেশীকে সৌদি আরব থেকে ফেরত পাঠানো হয়। আর নতুন বছর শুরুর চার দিনে ফিরলেন ২৪৭। ফেরত আসা সবার বর্ণনা প্রায় একই রকম। সবাই ফিরেছেন খালি হাতে। তারা সবাই ভবিষ্যত নিয়ে এখন দুশ্চিন্তায়। একইভাবে ব্যর্থ হয়ে যারা ফিরছেন তাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত।
×