ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মেয়র নির্বাচন

প্রকাশিত: ০৮:৫৭, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯

মেয়র নির্বাচন

পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ হওয়ার সময়েই নিয়মমাফিক ঢাকা দুই সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠানের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা। তদনুযায়ী ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন। তফসিল অনুযায়ী ৩১ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার তারিখও নির্ধারণ করা হয়। যাচাই-বাছাই হবে ২ জানুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৯ জানুয়ারি। সাংবিধানিক সমস্ত নিয়ম-কানুনকে অনুসরণ করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধি-ব্যবস্থা গ্রহণ করার পথে এখন নির্বাচন কমিশন। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পরীক্ষামূলক পদ্ধতি হিসেবে যে ইভিএম চালু করা হয়েছিল সীমাবদ্ধ পরিসরে, এবার তা হবে সবক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ কর্মযোগে তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ বিস্তার ও সংযোজন বর্তমান সরকারের অন্যতম নির্বাচনী অঙ্গীকার। তেমন লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ এখন সময়ের যৌক্তিক দাবি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তাঁর টেকসই উন্নয়নের অভীষ্টে দেশকে সব ধরনের প্রযুক্তির সহায়তা দিতে প্রস্তুত। ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণের নগর অভিভাবক নির্বাচন পুরো রাজধানীর সামগ্রিক উন্নয়ন পরিকল্পনার এক আবশ্যকীয় কর্মসংযোজন। আধুনিক বাংলাদেশ তৈরির মহাপরিকল্পনায় রাজধানী ঢাকাকে বাসযোগ্য, পরিবেশবান্ধব এবং নিরাপদ নগরী হিসেবে নতুনভাবে ঢেলে সাজানোর যে রূপরেখা তার যথার্থ নির্দেশনার নগর পিতাদের দায়-দায়িত্ব অপরিসীম। উন্নয়নের সুনির্দিষ্ট পথপরিক্রমায় চালিত করার এক অভাবনীয় শক্তিও বটে। ফলে নির্বাচনের সুষ্ঠু কর্মপরিকল্পনা মেয়র ও কাউন্সিলরদের যাচাই-বাছাইয়ের জায়গাও হবে সুষ্ঠু, নগরবান্ধব এবং যোগ্যতার মাপকাঠিতে। নিয়ম অনুযায়ী দলীয় প্রতীকেই এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতি ও অমানবিক অপরাধের বিরুদ্ধে যে শুদ্ধি অভিযানে নেমেছেন. সেখান থেকেই উঠে আসবে যথার্থ সৎ, মানবিক, আদর্শ, নিষ্ঠাবান এবং জনদরদী নেতৃত্ব। যা ২০৩০ সালের টেকসই উন্নয়নের অভীষ্ট লক্ষ্যে সারাদেশকে জোরালোভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবে। কোন মেয়রই নিয়মানুযায়ী পদে থেকে নির্বাচন করতে পারবেন না। নিজ পদ থেকে পদত্যাগ করে তাকে নতুনভাবে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। অবশ্যই তা দলীয় ভিত্তিতে। তবে স্বতন্ত্র হিসেবে যদি কোন প্রার্থী মেয়র নির্বাচনে আসতে চান। সেটাও গ্রহণযোগ্যতা পাবে। এ ছাড়া কাউন্সিলরদের বিধিবিধান ভিন্ন মাত্রার। নির্বাচনের আগে যেমন তাদের আগের পদ ছাড়তে হবে না একইভাবে দলীয় ভিত্তিতে নির্বাচনে যাওয়াও জরুরী নয়। এসব আইন-কানুনের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনই সর্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে সূক্ষ্ম নজরদারিতে তাদের দায়দায়িত্ব পালন করে যাবে। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ যা তা হলো সব দল ও মানুষের অংশগ্রহণে নির্বাচনকে যৌক্তিক এবং অর্থবহ করে তোলাও নির্বাচন কমিশনের একান্ত কর্তব্য। বড় দল বিএনপি এবং জাতীয় পার্টিসহ অন্য সব দলেরও অংশগ্রহণের সার্বিক সুযোগ-সুবিধা থাকা বাঞ্ছনীয়। যাতে নির্বাচন কোনভাবেই প্রশ্নবিদ্ধ হতে না পারে। নির্বাচন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হয়। যথার্থ নিয়মকে অনুসরণ সততা, স্বচ্ছতা, গ্রহণযোগ্যতাকে সর্বাধিক প্রাধান্য দেয়া দেশ ও মানুষের স্বার্থেই মঙ্গলজনক হবে। ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ৫ বছর মেয়াদী এই নির্বাচনের মাঝপথে উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক মারা গেলে তার জায়গায় বর্তমানে আতিকুল ইসলাম নিজেকে প্রস্তুত করেন এই পদটির জন্য। মেয়াদের সময় বিবেচনায় রেখে নতুন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তফসিল থেকে আরম্ভ করে অনুষ্ঠানের দিনক্ষণও নির্ধারণ করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সেভাবেই নব নির্বাচিত নগর অভিভাবকদ্বয় ও কাউন্সিলরদের নতুন যাত্রা শুরু হবে। নির্বাচন সর্বাঙ্গীণ প্রস্তুতির সঙ্গে সফলতার যৌক্তিক পথেই এগিয়ে যাবে, এমন প্রত্যাশাই নগরবাসীর।
×