ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বলিউডের ছবি একই সঙ্গে মুক্তি দাবি

বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সিনেমা হল

প্রকাশিত: ১১:০৯, ৬ ডিসেম্বর ২০১৯

বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সিনেমা হল

গৌতম পাণ্ডে ॥ মনে করেছিলাম আমাদের দেশের সিনেমা তো গেছে, কলকাতার সিনেমা হয়ত এখনও ভাল আছে, কিন্তু এসে দেখি সেখানেরও একই দশা। ভাল কোন গল্প নেই। একঘেঁয়েমি অভিনয়। আমার পরিবার নিয়ে এসেছিলাম ভারতীয় আমদানিকৃত ছবি ‘পাসওয়ার্ড’ দেখতে। খুবই হতাশ হয়েছি। দেশে এখন নতুন ভাল সিনেমা তেমন হচ্ছে না। হৃদয় ছোঁয়া গল্পের ছবি নেই। অভিনয়, সাউন্ড, মেকিং সব কিছুতেই যেন চিড় ধরেছে আমাদের দেশের সিনেমায়। কোন কিছুতে মন ছুঁয়ে যায় না। এমন চলতে থাকলে সিনেমা দেখার আর কোন আগ্রহই থাকবে না। শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মধুমিতা সিনেমা হলে সপরিবারে ভারতীয় আমদানিকৃত ‘পাসওয়ার্ড’ সিনেমা দেখতে এসে এমনই কথা বললেন ওয়ারীর রফিক সরদার। দেশের চলচ্চিত্র শিল্প এখন সঙ্কটকাল অতিক্রম করছে। তবে এটাই বাস্তবতা, দর্শক শূন্যতা ও ব্যবসায়িক লোকসানের মুখে একের পর এক বন্ধ হচ্ছে প্রেক্ষাগৃহ। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি বন্ধ হয়েছে রাজধানীর কাকরাইলের রাজমণি সিনেমা হল। দেশে ১৪শ’ হলের এখন বাকি আছে একশ’টির মতো। বাকি হল মালিকদের মুখেও বিদায়ের সুর। কোন কোন জেলা শহরে সিনেমা হলই বিলুপ্ত। লোকসানের বোঝা বইতে না পেরে প্রযোজকরা সিনেমায় টাকা লগ্নি করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। এ বছরের জানুয়ারি থেকে নবেম্বর পর্যন্ত দেশীয় ছবি মুক্তির সংখ্যা ৩৬টির মতো। এরমধ্যে একটি ছবিও ব্যবসাসফল হয়নি। চলচ্চিত্রের এই করুণ পরিণতির জন্য প্রযোজক-পরিচালক দায়ী করছেন হল মালিকদের। অন্যদিকে হল মালিকরা অভিযোগ তুলছেন মানহীন ছবিতে দর্শক মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। আবার চলচ্চিত্র শিল্পীরা ছবি প্রদর্শনের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছে। চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট অনেকেই বলছে, এর দায় সরকারের। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে খরা চলছে। সিনেমা হল মালিকরা মনে করছেন, দেশে ভাল সিনেমা তৈরি হচ্ছে না। যার জন্য দর্শক হলমুখী হচ্ছে না। এ জন্য ভারতীয় সিনেমার বাজার উন্মুক্ত করে দেয়া উচিত। বলিউড সিনেমা বাংলাদেশে একই সঙ্গে মুক্তি দেয়া হলে প্রতিযোগিতার বাজার তৈরি হবে। এর ফলে দেশে ভালমানের সিনেমা তৈরি হবে। পাশাপাশি সিনেমা হলগুলো চাঙ্গা হবে। চলচ্চিত্র শিল্প বাঁচাতে সিনেমা হল বাঁচানো জরুরী। অন্যদিকে ভারতীয় সিনেমার অবাধ প্রবেশ দেশের চলচ্চিত্র শিল্পকে ধ্বংস করে দেবে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। নতুন সিনেমা সঙ্কটের কারণে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি এর আগে দেশের সব প্রেক্ষাগৃহ বন্ধের ঘোষণা দেয়। যার ফলে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয় দেশের চলচ্চিত্রাঙ্গনে। এক বৈঠকে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের আশ্বাসে প্রেক্ষাগৃহ বন্ধের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি। মন্ত্রণালয় থেকে আশ্বাস দেয়া হয় ভারতে একটি দেশীয় ছবি রফতানির বিপরীতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কলকাতার একটি ছবি আমদানির দীর্ঘসূত্রতার প্রক্রিয়া থেকে সরে এসে জমাকৃত ছবির ছাড়পত্র ১০ দিনের মধ্যে দেয়ার দাবি বাস্তবায়ন করার নির্দেশনা দেয়া হয়। যাতে কলকাতায় ছবিটি মুক্তি পাওয়ার দুই-তিন মাস পর যেন এখানে আনতে না হয়, কাছাকাছি সময়ে যেন তারা আনতে পারে এবং সিনেমা হলে সেগুলো যেন দর্শক দেখতে পারে। কিন্তু চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির এখনকার ভাষ্য, এ প্রক্রিয়া এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। ভারতে ছবি রিলিজ হওয়ার প্রায় দুই/তিন মাস পরই এখানে রিলিজ হচ্ছে। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি মধুমিতা সিনেমা হলের মালিক ইফতেখান উদ্দিন নওশাদ বলেন, প্রথমে চলল ভারতীয় আমদানিকৃত ছবি ‘কিডন্যাপ’, পরে চলল ‘শেষ থেকে শুরু’, এর পর চলল ‘বিবাহ অভিযান’ এখন চলছে ‘পাসওয়ার্ড’। এসব ছবির কোনটিতেই দর্শক নেই। ভারতে মুক্তি পাওয়ার এক বা দেড় মাস পরে ছবি আসে। আগে যেমন ছবিগুলো রিপিট করা হতো, এখন ওগুলো ইউটিউবে দিয়ে দেয়। এ কারণেই দর্শক মুখ ফিরিয়ে নেয়। যে কারণে হল বন্ধ রাখা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। তারপরও আমি মনে করি হলগুলো তো ছবি পাচ্ছে। ছবিগুলো যদি কলকাতা আর আমাদের দেশে একসঙ্গে রিলিজ হয় তাহলে এখন যে ব্যবসা হচ্ছে তার চেয়েও ভাল ব্যবসা হবে। হিন্দী ছবির বেলায়ও তাই একসঙ্গে রিলিজ হতে হবে। তিনি বলেন, সম্প্রতি হিন্দী ছবিও কলকাতায় ব্লকবাস্টারে খুব একটা ভাল যাচ্ছে না। তার পরও মনে করি, সামথিং ইজ বেটার দ্যান নাথিং। এখন তো আমাদের দেশে কোন ছবিই নেই। আমাদের ব্যবসাটা খুব খারাপ যাচ্ছে। আমরা অধিকাংশ হল মালিক কিন্তু ব্যাংক থেকে লোন নিয়েছি। আমরা যদি না বাঁচতে পারি তাহলে ঢাকার বাইরের হলগুলো তো মরার পথে। সরকার আমাদের যে আশ্বাস দিয়েছে, কিন্তু তার কোন বাস্তবায়ন এখন পর্যন্ত নেই। আমাদের প্রডিউসাররা তো বুঝেই গেছে যে বাংলা ছবি চলে না। হিন্দী ছবি দিয়ে দেখুক যদি না চলে তখন অন্য কথা। এখন তো দেখছি হলিউডের ছবি যেগুলো সিনেপ্লেক্সে চলছে, ওগুলো মোটামুটি ভাল ব্যবসা করছে। আমরা এখন হলিউডের ছবির দিকে যাওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছি। আমরা সেই ধরনের মেশিন লাগাব। বেস্ট সাউন্ড দেব। যখন হলিউডের ছবি চালাব তখন বাংলা সিলেকটেড ছবিগুলো চালাব। সরকার তো শুধু আশ্বাস দিয়েই যাচ্ছে। কিন্তু কখন যে এটার বাস্তবে রূপ নেবে বুঝতে পারছি না। আমরা এখন লাইফ সাপোর্টে আছি। হলিউডের ছবি যদি উইদাউট পারমিশনে দিতে পারেন তাহলে ভারতীয় ছবিতে অসুবিধা কিসের। ভারত থেকে আর্ট ফিল্মগুলো এলে তো ভাল ব্যবসা করবে। হলিউডের জন্য এক রকম নিয়ম আর বাংলা ছবির জন্য আরেক নিয়ম। তাহলে তো হবে না। ঢাকার বাইরে যে হলগুলো খুব প্রাইম এলাকায় আছে ওদেরকে আশ্বাস দিয়ে রাখছি। যদি তারা এসব হল একবার ভেঙ্গে ফেলে, তাহলে তো আর বানাবে না। যদি ছবি না আসে তাহলে কিভাবে হল চলবে। আমার মতে একেবারে ওপেন করে দেয়া উচিত। আমাদের দেশে ইন্ডিয়ান এ্যাড বাংলা করে চলছে, তাহলে ছবির ক্ষেত্রে অসুবিধা কোথায়? এই শিল্পকে যদি বাঁচাতে হয়, মধ্যবিত্তদের যদি হলে আনতে হয় তাহলে দেশীয় ছবির পাশাপাশি অন্য সব দেশের ছবি ওপেন করে দেয়া উচিত। মধ্যবিত্তরা তো সিনেপ্লেক্সে যাবে না, ওদের বঞ্চিত করলে তারা কিন্তু সিনেমা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। ওপেন করে দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিটাকে বাঁচিয়ে রাখা উচিত। তারপর বিভিন্ন নিয়ম চালু করতে অসুবিধা কোথায়? চাবিকাঠি তো সরকারের হাতে। আমি মনে করি, পরিকল্পিতভাবে চলচ্চিত্র শিল্পটাকে শেষ করে দেয়া হচ্ছে। হল বাঁচলে আমাদের দেশে সিনেমা শিল্প বাঁচবে। আমাদের দেশের ছবি আরও ভাল হবে, উন্নতমানের হবে। এখন তো কোন কম্পিটিশন নেই। তখন আর নকল করতে পারবে না। তখন অরিজিনাল ছবিগুলো আসবে। ভাল গল্প আসবে। একই সুরে সুর মিলিয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক-পরিবেশক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু বলেন, সাপটা চুক্তির আওতায় চলচ্চিত্র আমদানি-রফতানি হচ্ছে। সার্কভুক্ত দেশের ক্ষেত্রে চলচ্চিত্র আমদানি করতে পারে আবার রফতানিও করতে পারে। এই আইনটি বিদ্যমান। এ আইনের উদ্দেশ্যটা ছিল খুব মহৎ। এটার উদ্দেশ্য ছিল সার্কভুক্ত দেশের মধ্যে আমাদের সংস্কৃতি অন্যদেশ জানবে এবং অন্যদেশের সংস্কৃতির সঙ্গেও আমরা পরিচিত হব। এটা যখন পুরোপুরি বাণিজ্যিক রূপ ধারণ করেছে তখন সেই মহৎ উদ্দেশ্যটা আর নেই। এই ফ্যাসিলিটি নিয়ে আমরা আনছি ‘দুর্গামায় কি জয়’, ‘কেলোর কির্তী’,‘ইনেস্পেক্টর নোটি কে’, ‘পাসওয়ার্ড’র মতো সব আজেবাজে ছবি, যেগুলো দর্শক দেখছে না। সরকার যে উদ্দেশে এই আমদানি-রফতানির সাপটা চুক্তি করেছে এটা কিন্তু বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এখানে কিন্তু সরকারের উদ্দেশ্য প্রতিফলিত হচ্ছে না। সরকার এই সুযোগটা দিয়ে আমাদের প্রডিউসারদের নিঃস্ব করছে, এটা উচিত না। যদি আমদানি-রফতানি দিয়েই দেয় তাহলে সমসাময়িক রিলিজ দিয়ে দিক। কলকাতায়ও রিলিজ হবে একই সঙ্গে বাংলাদেশেও রিলিজ হবে। তাহলে প্রডিউসাররা কয়টা পয়সা পাবে। আমাদের প্রডিউসার যারা যাচ্ছে এই আমদানি-রফতানি করার জন্য তারা কিন্তু আমাদের লোকাল শিল্পীদের বা চলচ্চিত্রকর্মীদের হাতে টর্চার্ড হয়েই যাচ্ছে। একজন নায়কের যদি কল টাইম থাকে সকাল ৯টায়, তিনি আসেন বিকেল ৫টায়। একজন নায়িকা যদি মনে করেন গোসল করার জন্য মাম পানি চাই। এই টর্চারের তো আর শেষ নেই আমাদের। আমরা টর্চার্ড হয়েই কিন্তু ছবির আমদানিতে যাচ্ছি। সেখানে গিয়েও আমরা লস করছি। কারণ সেখানে টাকা উঠছে না। কারণ পুরনো ছবি কেউ দেখে না। আমরা যখন এই সাপটা চুক্তিতে নেই, তখন আমাদের সুযোগ করে দেয়া উচিত সায়মনটেনান্সলি ছবি রিলিজ, যেন আমাদের লগ্নিকৃত টাকাটা ওঠে। সেটাও হচ্ছে না। যে চলচ্চিত্রগুলো আমদানি করা হচ্ছে সেগুলো যদি সমসাময়িক রিলিজের ব্যবস্থা করি নীতিমালা চেঞ্জ করে তাহলে আমাদের প্রডিউসাররা কিছু ব্যবসা করতে পারবে আমদানি করে। তা না হলে এটা কোনভাবেই সম্ভব নয়। বাংলাদেশের দর্শক পুরনো ছবি দেখতে চায় না। তারা কোন না কোনভাবে এই ছবিগুলো দেখে ফেলে। তাদের হলে যাওয়ার আগ্রহ থাকে না। সরকারের উদ্দেশ্য যখন বাস্তবায়ন হয়নি, দেশীয় শিল্পী কলাকুশলী দ্বারা যে টর্চার্ড হচ্ছি যখন আমদানিই করছে প্রডিউসাররা তখন সমসাময়িক রিলিজের পারমিশন দেয়া হোক। পরিচালক সমিতির সভাপতি চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সদস্য মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, বাংলাদেশের সিনেমার দৈন্যের জন্য হল মালিকরাই বেশি দায়ী। তাদের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে প্রযোজকরা সিনেমা বানাতে আগ্রহী হচ্ছে না। হল মালিকরা শুধু শাকিব খানের ছবি ছাড়া অন্য ছবি চালাতে চায় না। সিনেমাকে ধ্বংস করার চক্রান্তে লিপ্ত হল মালিকরা। তারা ভারতীয় ছবি আমদানির জন্য পরিচালক-প্রযোজকদের সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ করছে। হলের সংস্কার, গাড়ি রাখার জায়গাসহ দর্শক আকৃষ্ট করার কোন কিছুই করতে চায় না তারা। কোন এক সময়ে নতুন ছবি রিলিজ হলে হল মালিকরাই নিজ উদ্যোগে প্রচার বা পোস্টার লাগাত। এখন তারা প্রযোজকদের ওপর সঁপে দেয়। শুধু সিনেমা হচ্ছে না বললেই তো আর হবে না। দশ বছরের ব্যবসাসফল ছবি ‘আয়নাবাজি’। অভিযোগ আছে এখনও হল মালিকদের কাছে টাকা পাওনা রয়েছে। এমন বৈষম্য থাকলে নতুন সিনেমা বানাতে প্রযোজকরা কি আগ্রহ দেখাবে? এমন বৈষম্য দূর হওয়া আবশ্যক। সিনেমা হলে ই-টিকেটের ব্যবস্থা করতে হবে, প্রযোজদের ফিফটি পার্সেন্ট শেয়ার করতে হবে, এক সপ্তাহের মধ্যে টাকা পরিশোধ করতে হবে। চলচ্চিত্র পরিচালক মোর্শেদুল ইসলাম একই সুরে সুর মিলিয়ে বলেন, এক কথায় বলতে গেলে আমাদের চলচ্চিত্র ভালর দিকে যাচ্ছে। ভাল কিছু ছবি যে হচ্ছে না এটা বলা যাবে না। সিনেমা প্রদর্শনের বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে হল সঙ্কট। সিনেমা হল নেই, ছোট পরিসরের মানসম্মত ভাল হল তৈরি করতে হবে। দর্শক ভাল পরিবেশে সিনেমা দেখতে চায়। এর জন্য সরকারী উদ্যোগ তো বটেই, পাশাপাশি ব্যক্তি উদ্যোগে হল তৈরি করতে হবে। আর ই-টিকেটিং চালু করতে হবে। প্রযোজকরা সিনেমা বানিয়ে লগ্নি করা টাকা ফেরত পান না প্রদর্শকদের কারণে। প্রযোজক-পরিবেশক সমিতির সাবেক আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন দিলু বলেন, আমাদের সিনেমায় যাচ্ছেতাই অবস্থা বিরাজ করছে। একে অপরকে দোষারোপ ছাড়া আর কিছুই হচ্ছে না। আমি তো সেন্সর বোর্ডের একজন সদস্য ছিলাম। যে সব ছবি আসে তার বেশিরভাগ মানহীন। নেই ভাল গল্প, সংলাপ, অভিনয় ও মেকিং। আকাশ সংস্কৃতির যুগে ঘরে বসে বিশ্বের ভাল ভাল ছবি দেখা যায়, সেখানে কষ্ট করে হলে গিয়ে বাজে ছবি দর্শক কেন দেখবে? তার ওপর হল মালিকদের ঔদাসীন্য। কিছুদিন আগে যৌথ প্রযোজনায় কিছু ছবি হচ্ছিল, তাও এত এত নিয়মনীতির কারণে বন্ধ হয়ে গেল। দুই/তিন বছর পরে একটি ভাল ছবি হলে কি আর বাংলাদেশের সিনেমা বাঁচবে? সবার মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া চলচ্চিত্র শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা মুশকিল। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক চিত্রনায়ক জায়েদ খান বলেন, দেশের চলচ্চিত্র উন্নয়নে আমাদের চেষ্টার কোন ঘাটতি নেই। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি কিভাবে এই শিল্পকে আরও উন্নত করা যায়। দেশের চলচ্চিত্র এগিয়ে যাচ্ছে। অনেকে মনে করছেন, চলচ্চিত্র শুধু আর্ট নয় ইন্ডাস্ট্রিও। আধুনিক বিশ্বায়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলচ্চিত্র শিল্পের পুনরুজ্জীবন ঘটাতে ক্রিকেট, ফুটব ল ও গার্মেন্টস খাতের মতোই প্রণোদনা প্রয়োজন।
×