ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ক্ষতির বোঝা গরিবের ঘাড়ে ॥ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব

প্রকাশিত: ১১:০৫, ৬ ডিসেম্বর ২০১৯

ক্ষতির বোঝা গরিবের ঘাড়ে ॥ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব

কাওসার রহমান ॥ উন্নত দেশগুলোর লাগামহীন গ্রীন হাউস গ্যাস নির্গমনে পৃথিবী আজ মহাসঙ্কটের মুখে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, বরফ গলা আর আবহাওয়ার বিরূপ আচরণ গত পাঁচ বছরে অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে। রেকর্ড পরিমাণ উষ্ণ হয়ে উঠেছে পৃথিবী। বায়ুম-লে গ্রীন হাউস গ্যাসের পরিমাণ মানবজাতির ইতিহাসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের এই দৃশ্যমান প্রভাবগুলো পৃথিবীকে এমন এক অবস্থায় নিয়ে গেছে যে, সেখান থেকে ফিরে আসার পথগুলো ক্রমেই ক্ষীণ হয় আসছে। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি সম্পাদনকারী দেশগুলো বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি প্রাক-শিল্পযুগের (১৮৫০-১৯০০) চেয়ে দুই ডিগ্রী সেলসিয়াসের অনেক নিচে রাখতে সম্মত হয়েছে। তবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি দেড় ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার চেষ্টার কথাও বলা হয়েছে। আর এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমন ৪৫ শতাংশ কমানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। এছাড়া ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষ হওয়ার লক্ষ্যও নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু কার্বন নিঃসরণের মাত্রা ১.৫ এর মধ্যে রাখতে রাষ্ট্রগুলো যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং আসলেই যেসব পদক্ষেপ নেয়া জরুরী তার মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য তৈরি হচ্ছে। আর এই পার্থক্যই পৃথিবীকে ‘নো রিটার্নের’ দিকে ধাবিত করছে। কিন্তু সেই বাস্তবতায় বিশ্ববাসীর সচেতনতা ও পদক্ষেপ একেবারেই অপর্যাপ্ত। এ কারণেই জাতিসংঘের এবারের জলবায়ু সম্মেলনকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। কারণ ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী, ২০২০ সালের মধ্যে বিশ্বের সব দেশকে ‘ন্যাশনাল ক্লাইমেট এ্যাকশন প্ল্যান’ তৈরির কাজ শেষ করতে হবে। অর্থাৎ হাতে আছে আর মাত্র এক বছর। ফলে যেসব দেশ এখনও এই কাজ শেষ করতে পারেনি, তাদের ওপর চাপ তৈরির শেষ সুযোগ এবারের সম্মেলন। এই সম্মেলনে সকল অংশগ্রহণকারী নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে কার্বন নিঃসরণের হার কমানোর জন্য দ্রুত এবং বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত না নিতে পারলে, ভবিষ্যৎ হবে ভয়ঙ্কর। উল্লেখ্য, গত ২ ডিসেম্বর স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে শুরু হয়েছে দুই সপ্তাহব্যাপী জলবায়ু সম্মেলন। যা কনফারেন্স অব দ্য পার্টিজ বা কপ নামে পরিচিত। দ্রুতগতিতে পরিবর্তিত হচ্ছে জলবায়ু জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, বিশ্বের জলবায়ু দ্রুতগতিতে পরিবর্তিত হচ্ছে এবং পৃথিবীজুড়ে নজিরবিহীন দাবানল, বন্যা, সাইক্লোন, খরা এসবের মধ্যে তারই চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) জানিয়েছে, গ্রীন হাউস গ্যাস মজুদ ইতোমধ্যেই বিশ্বের ইতিহাসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। ২০১৮ সালে এই গ্যাস মজুদের পরিমাণ ৪০৭.৮ পিপিএস-এ পৌঁছে গেছে। ২০১৯ সাল নাগাদ এটি ৪১০ পার্টস পার মিলিয়নে (পিপিএম) পৌঁছে যাবে বলে বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন। মূলত গত পাঁচ বছরে (২০১৫-২০১৯) বায়ুম-লে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ২০ শতাংশ বেড়ে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। অন্যদিকে প্রাক শিল্প যুগের চেয়ে বৈশ্বিক তাপমাত্র ১.১ ডিগ্রী সেলসিয়াস বেড়ে গেছে। গত পাচ বছরেই এই তাপমাত্রা বেড়েছে ০.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এতে প্রতি বছর মেরু অঞ্চলের বরফ গলনের পরিমাণ ছয় গুণ বেড়েছে। ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত প্রতি বছর যেখানে ৪০ গিগাটন করে বরফ গলেছে, সেখানে ২০০৯ থেকে ১০১৭ সাল সময়ে প্রতি বছর ২৫২ গিগাটন করে বরফ গলছে। এতে ক্রমেই বেড়ে উঠছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা। গত ৬ বছর ধরে পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে, প্রতি বছর গড়ে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চ বাড়ছে ৫ মিলিমিটার করে। অথচ গত ১০ বছর ধরে সমুদ্রপৃষ্ঠের এই উচ্চতা বৃদ্ধির হার ছিল ৪ মিলিমিটার। এতে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়টি সর্বজনীন সমস্যায় পরিণত হচ্ছে এবং ধনী দেশগুলোও এখন জলবায়ু পরিবর্তনের তীব্র অভিঘাত অনুভব করছে। ২০১৭ সালে আটলান্টিক মহাসাগরে সৃষ্ট একের পর এক হারিকেনের আঘাতে যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি ধনী দেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এবছর ইউরোপে রেকর্ড সৃষ্টিকারী তাপমাত্রা, দাবানল, বন্যা আর খরাও তারই প্রমাণ বহন করছে। এ অবস্থায় বিভিন্ন দেশ ও শহর ‘ক্লাইমেট ইমার্জেন্সি’ ঘোষণা করেছে। ইউরোপীয় পার্লামেন্টও ইউরোপে ‘ক্লাইমেট এ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইমার্জেন্সি’ ঘোষণা করেছে। তা সত্ত্বেও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় দায়ী রাষ্ট্রগুলোর পদক্ষেপ খুবই অপর্যাপ্ত। জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক কর্মসূচীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরিকল্পনা পর্যায়ে কর্তৃপক্ষ দক্ষতার পরিচয় দিলেও, গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে তাদের কোন ভূমিকাই নেই। বিশেষত কার্বন নিঃসরণ কমানোর ব্যাপারে যে পরিকল্পনা তা বাস্তবায়ন থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছে দেশগুলো। এ কারণে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস দাবি তুলেছেন খননের মাধ্যমে জ্বালানি আহরণ বন্ধ করার। তিনি বলেছেন, ‘খননের মাধ্যমে জ্বালানি আহরণ এখনই বন্ধ করতে হবে এবং এর পরিবর্তে নবায়নযোগ্য এবং জলবায়ুবান্ধব পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে জ্বালানির চাহিদা পূরণে।’ জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সংস্থা ইউএনইপি বলছে, বৈশ্বিক উষ্ণতা ১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে রাখতে হলে ২০২০ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস নিঃসরণ ৭.৬ শতাংশ হারে কমাতে হবে। অন্যথায় প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী পৃথিবীর তামপাত্রা ১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে রাখা যাবে না। তাই প্যারিস চুক্তির লক্ষ্য অর্জন করতে হলে দেশগুলোকে সামগ্রিকভাবে কার্বন হ্রাস বর্তমানের চেয়েও ৫ গুণ বেশি হারে কমাতে হবে। অন্যথায়, বর্তমান হারে যদি কার্বন নির্গমন চলতে থাকে তাহলে এই শতাব্দী শেষে বৈশ্বিক উষ্ণতা দ্বিগুণ বেড়ে যাবে। যা মানব জাতির অস্তিত্বকে বিলীন করে দিতে পারে। প্রাক শিল্প যুগের চেয়ে বৈশ্বিক উষ্ণতা ১.৫ ডিগ্রীর মধ্যে রাখতে হলে ২০৩০ সাল নাগাদ প্রতি বছর গ্রীন হাউস গ্যাস নিঃসরণ ৪.৫ শতাংশ হারে কমাতে হবে। আর ২০৫০ সাল নাগাদ এই গ্যাসের নির্গমন শূন্যে নামিয়ে আনতে হবে। জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০১৯ সাল থেকেই জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে বাংলাদেশে। এবছর বিশ্ববাসীর সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষও অনুভব করেছে রেকর্ড পরিমাণ উষ্ণতা। এবছর দুটি প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় আঘাত করেছে বাংলাদেশকে। বঙ্গোপসাগরীয় দেশগুলোতে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে সমুদ্র উপকূলীয় জেলাগুলো পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। লোনা পানি দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করছে। ফলে ফসল উৎপাদন কমে যাচ্ছে। সুপেয় পানির প্রচ- অভাব দেখা দিচ্ছে। মানুষের শরীরে বোগ ব্যাধি বাড়ছে। কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বহু মানুষ কাজের সন্ধানে অন্যত্র চলে যাচ্ছে। বদলে যাচ্ছে তাদের পেশা। ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, সাইক্লোনসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করে সমুদ্র উপকূলীয় মানুষ বসবাস করছে। গরিবের ঘাড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের বোঝা মৌলিক চাহিদাগুলো ঠিকমতো মেটাতে না পারলেও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় বাংলাদেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রায় ১৭ কোটি মানুষ বববাস করে। ঘনবসতির এই দেশের উপকূলীয় গ্রামগুলোতে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ঝুঁকি বাড়ছে। আর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলার জন্য গ্রামীণ পরিবারগুলোকে বছরে গড়ে দুই বিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে হচ্ছে। আন্তর্জাতিক পরিবেশ ও উন্নয়ন সংস্থার (আইআইইডি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের গ্রামীণ অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বরাদ্দ ছিল এক দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার। এ সময় এ খাতে আন্তর্জাতিক অর্থায়নের পরিমাণ ছিল বছরে ১৫৪ মিলিয়ন ডলার। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে বাংলাদেশের দরিদ্র মানুষদের ব্যয়ের বোঝা কাঁধে নিতে হচ্ছে। অনেক পরিবারকে খাদ্য কেনার পরিবর্তে বা স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় ব্যয় না করে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর মেরামত এবং প্রাণী ও ফসল উৎপাদনে অতিরিক্ত ব্যয় করতে হচ্ছে। তারা এই অর্থ তাদের ঘরগুলো বন্যার স্তরের ওপরে তুলতে ব্যবহার করছেন এবং কেউ কেউ অনানুষ্ঠানিক উৎস থেকে উচ্চ সুদে ঋণ নিচ্ছেন, যা তাদের আরো দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। অথচ জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বাংলাদেশ পাচ্ছে না। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সব থেকে ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশের এক কোটি নয় লাখেরও বেশি শিশু, যাদের এক-চতুর্থাংশের বয়স পাঁচ বছরের কম। বন্যা এবং নদী ভাঙ্গনের কারণে অনেক পরিবারকে শহরের বস্তিতে গিয়ে গাদাগাদি, ঠাসাঠাসি করে বসবাস করতে হচ্ছে। সেখানে তারা স্বাস্থ্যকর খাবার, শিক্ষা, পর্যাপ্ত স্বাস্থসেবা, স্যানিটেশন এবং নিরাপদ খাবার পানির সঙ্কটে রয়েছে। এসব বস্তিতে বসবাসকারী শিশুরা অপুষ্টির ঝুঁকিতে রয়েছে। সেখানে শিশুশ্রম, বাল্যবিয়ে, সহিংসতা ছাড়াও শিশুদের বিভিন্ন ধরনের নিপীড়নের শিকার হতে হচ্ছে। পরিবর্তিত জলবায়ু পরিস্থিতি, অপরিকল্পিত নগরায়ণসহ নানাবিধ কারণে শিশুসহ তাদের পরিবারের মধ্যে হেপাটাইটিস এ, কলেরা, আমাশয়, টাইফয়েড, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া জ্বরসহ বিভিন্ন ধরনের রোগবালাই ছড়িয়ে পড়ছে। ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে খরা ও বন্যায় বাংলাদেশের কৃষিখাত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বাংলাদেশের ৬০ শতাংশেরও বেশি মানুষ কৃষির ওপর জীবিকা নির্বাহ করে। এর অর্থ এই যে, দরিদ্র পরিবারের শিশুদের ক্ষুধায় মুখে পড়ার ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে। খাদ্য উৎপাদন কম হওয়ায় দাম বেড়ে যাচ্ছে এবং দরিদ্র পরিবারগুলোর ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়ে। বাংলাদেশসহ ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো এই বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশের মতো দুর্বল দেশগুলোতে জাতীয়ভাবে গ্রহণ করা অভিযোজনমূলক উদ্যোগে সহায়তা করার জন্য খুব কম পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় গঠন করা তহবিলগুলোতে পর্যাপ্ত মূলধনের অভাব রয়েছে। সরাসরি এবং সহজে তহবিল পাওয়ার জন্য যেসব শর্ত এবং মানদ- রয়েছে তা পূরণ করে দুর্বল দেশগুলোর পক্ষে অর্থ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। এ সুযোগে বেশিরভাগ অর্থই সক্ষম দেশগুলোর কাছে চলে যাচ্ছে। মাদ্রিদ জলবায়ু সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ক্ষতিগ্রস্ত দেশে হিসাবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ববাসীকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, প্রতি মুহূর্তে আমাদের নিষ্ক্রিয়তা পৃথিবীর প্রতিটি জীবিত মানুষকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এখনই সময় কাজ করার। তিনি বলেছেন, ‘সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে থাকা আমাদের মতো দেশগুলোর সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার পাওয়ার কথা থাকলেও ধারণার চেয়েও কম সহায়তা পাচ্ছি। এ লক্ষ্যে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য একটি নতুন সিভিএফ এবং ভি-২০ ট্রাস্ট তহবিল গঠনের দাবি জানিয়েছেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্বের নেতাদের জলবায়ু পরিবর্তনে ভয়াবহ হুমকির কথা আবারও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। তিনি বলেছেন, আমরা দ্রুত এমন একটা জায়গায় পৌঁছে যাচ্ছি যেখান থেকে আর ফেরার কোন সুযোগ নেই। প্রকৃতির বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ থামাতে হবে এবং আমরা জানি সেটা সম্ভব। এজন্য খনি খনন বাদ দিয়ে সবাইকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং প্রাকৃতিক সমাধানের দিকে মনোযোগ দেয়ার আহ্বান জানান তিনি। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী, ২০২০ সালের মধ্যে বিশ্বের সব দেশকে ‘ন্যাশনাল ক্লাইমেট এ্যাকশন প্ল্যান’ তৈরির কাজ শেষ করতে হবে। যেসব দেশ এখনও এই কাজ শেষ করতে পারেনি, তাদের ওপর চাপ তৈরির শেষ সুযোগ এবারের সম্মেলন।
×