ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কিছু ব্যবসায়ী অচল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে : শিল্পমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৪:৪৬, ২ ডিসেম্বর ২০১৯

কিছু ব্যবসায়ী অচল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে :  শিল্পমন্ত্রী

অনলাইন রিপোর্টার ॥ শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, ‘দেশে অচল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে অধিক মুনাফা অর্জন করার চেষ্টা করছে কিছু ব্যবসায়ী। বড় বড় দেশে এ প্রবণতাগুলো নেই। কিন্তু আমাদের দেশে এগুলো বিদ্যমান। এক ধরনের অসাধু ব্যবসায়ীরা এটা করে। অধিক মুনাফা করার জন্য তারা জনগণকে জিম্মি করে ব্যবসা করতে চায়।’ ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘ব্যবসা আপনার করবেন, এর লাভও আপনারা নেবেন। আপনারা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তিগতভাবে এগিয়ে যান। সরকার সব ধরনের সুবিধা দেবে। তবে জনগণকে জিম্মি করবেন না। এটা হতে দেয়া যাবে না।’ আজ সোমবার শিল্প মন্ত্রণালয় এবং ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য উন্নয়ন নীতিমালা-২০১৯ অবহিতকরণ’ বিষয়ক কর্মশালার প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন। দেশে একটি টেকসই, পরিবেশবান্ধব ও কমপ্লায়েন্ট চামড়া শিল্পখাত গড়ে তোলাই আমাদের সরকারের লক্ষ্য জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘শিল্প মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তাদের সব ধরণের নীতি সহয়তা প্রদান অব্যাহত রেখেছে। ট্যানারি স্থানান্তরের জন্য সরকারের প্রতিশ্রুত ক্ষতিপূরণের অর্থও ইতোমধ্যে উদ্যোক্তাদের দেয়া হয়েছে। এরপরও কতিপয় অসাধু ট্যানারি মালিক কমপ্লায়েন্ট কারখানা স্থাপনে গড়িমসি করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে নিয়ম মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘চুক্তি অনুযায়ী কারখানা নির্মাণসহ উৎপাদন কার্যক্রম শুরুতে ব্যর্থ হওয়ায় সাভার চামড়া শিল্প নগরীর ১১টি প্লটের বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে। চামড়া শিল্পের অপার সম্ভাবনা কাজে লাগাতে শিল্প মন্ত্রণালয় চামড়া ও চামড়াজাতপণ্য উন্নয়ন নীতিমালা ২০১৯ প্রণয়ন করেছে। এর আলোকে চামড়া শিল্পের পরিবেশগত উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।’ নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, ‘বাংলাদেশ তৈরি পোশাক শিল্প আরএমজি সেক্টরকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র আছে। এটি মোকাবিলা করে এ শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। একই সঙ্গে ২০২৪ সালের মধ্যে চামড়াজাত পণ্য রফতানির মাধ্যমে পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা সরকার নির্ধারণ করেছে সেটি অর্জন করতে হবে।’ চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য শিল্প দেশের অর্থনীতিতে দ্বিতীয় বৃহত্তম বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনকারী গুরুত্বপূর্ণ খাত। ২০২১ সালের মধ্যে এই খাত থেকে ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য মাত্রা অর্জনে সরকার কাজ করছে বলেও উল্লেখ করেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘আগামীতে যে ট্যানারি স্থাপিত হবে সেগুলো হবে আধুনিক ট্যানারি। সাভার শিল্প নগরীতে বরাদ্দ করা ১১টি প্লট সরকার বাতিল করেছে। কারণ এ সমস্ত প্লট মালিকরা শর্ত অনুযায়ী কাজ করেনি।’ মন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। এ হত্যার উদ্দেশ্য ছিল দেশের স্বাধীনতা এবং অর্থনীতিকে ধ্বংস করা। সব ষড়যন্ত্র কাটিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’ বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মো. শাহিন আহমেদ বলেন, ‘সরকার ও গণমাধ্যমের সহযোগিতা পেলে দেশের চামড়া শিল্প ফিরে পাবে তার হারানো ঐতিহ্য।’ রাজধানীর পল্টন টাওয়ারে ইআরএফের নিজস্ব কার্যালয়ে কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুল হালিম। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার ও ইআরএফের সভাপতি সাইফুল ইসলাম দিলাল। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ। ইআরএফ’র সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশেদুল ইসলামের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বেগম পরাগ। সেমিনারে বিভিন্ন গণমাধ্যমের ৮০ জন রিপোর্টার অংশগ্রহণ করেন।
×