ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ইংলিশ-রেকর্ডে পিষ্ট নিউজিল্যান্ড

প্রকাশিত: ১১:৩৩, ৯ নভেম্বর ২০১৯

 ইংলিশ-রেকর্ডে পিষ্ট নিউজিল্যান্ড

শাকিল আহমেদ মিরাজ ॥ লর্ডসের বহুল আলোচিত সেই ফাইনালে দু’দলের নির্ধারিত ১০০ ওভারের পর সুপার ওভারও ‘টাই’ হয়েছিল। বাউন্ডারি সংখ্যায় এগিয়ে থেকে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পড়েছিল ইংলিশরা। না হেরেও কপাল পুড়েছিল কিউইদের। এরপর এই প্রথম মুখোমুখি হয়েছে বিশ্বকাপের দুই ফাইনালিস্ট। নিউজিল্যান্ড সফরে পাঁচ ম্যাচের টি২০ সিরিজ। ফরমেট ভিন্ন। কিন্তু লড়াইটা হচ্ছে সমানে-সমান। এক ম্যাচে এক দল এগিয়ে যাচ্ছে তো পরের ম্যাচেই সমতায় আরেক দল। চার ম্যাচ শেষে সিরিজ এখন ২-২এ চলমান। নেপিয়ারে শুক্রবার ডেভিড মালান ও অধিনায়ক ইয়ন মরগানের (৯১) ব্যাটিংঝড়ে নিজেদের টি২০ ইতিহাসে দলীয় রেকর্ড ৩ উইকেটে ২৪১ রানের পাহাড় গড়ে ইংল্যান্ড। পরে কিউইদের ১৬৫ রানে গুটিয়ে দিয়ে তুলে নেয় ৭৬ রানের জয়। মাত্র ৫১ বলে অপরাজিত ১০৩ রানের দুরন্ত ইনিংস মালানকে এনে দেয় ম্যাচসেরার পুরস্কার। অকল্যান্ডে রবিবার পঞ্চম ও শেষ ম্যাচে হবে সিরিজের ফয়সালা। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ইংল্যান্ডের প্রথম ৩ ওভারে রান ছিল ১৬। চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে জনি বেয়ারস্টোকে ফেরান মিচেল স্যান্টনার। দারুণ কিছু শটে ২০ বলে ৩১ রান করে স্যান্টনার শিকারে পরিণত হন আরেক ওপেনার টম ব্যান্টন। মালান তখনও একরকম দর্শক। ১০ ওভার শেষে তার রান ছিল ২০ বলে ২৪। পরের ১০ ওভারে মরগানের সঙ্গে মিলে তুলোধুনো করেছেন কিউই বোলিংকে। ৩১ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন মালান। পরের পঞ্চাশে ছিলেন আরও বিধ্বংসী। ১৭তম ওভারে ইশ সোধিকে ওড়ান দুই চার ও তিন ছক্কায়। ওই ওভার থেকে আসে ২৮ রান। পরের ওভারে ক্রেন্ট বোল্টকে গ্যালারিতে পাঠিয়ে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৪৮ বলে। ইংল্যান্ডের হয়ে যেটি দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। ২০১৪ টি২০ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হেলসের ৬০ বলে সেঞ্চুরি ছিল আগের রেকর্ড। ৯ ম্যাচের ক্যারিয়ারেই ৫ ফিফটি ও ১ সেঞ্চুরি হয়ে গেল মালানের। এই দু’জন ছাড়া ইংল্যান্ডের হয়ে টি২০তে আর কারও সেঞ্চুরি নেই। আরেক প্রান্তে মরগান শুরু থেকেই ছিলেন আগ্রাসী। মাত্র ২১ বলে ছুঁয়েছেন পঞ্চাশ, ইংল্যান্ডের হয়ে যা দ্রুততম টি২০ ফিফটি। গত বছর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জস বাটলারের ২২ বলে ফিফটি ছিল আগের রেকর্ড। ১৯তম ওভারে ড্যারিল মিচেলকে ১ চার ও ৩ ছক্কায় উড়িয়ে ইংলিশ অধিনায়ক সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন সেঞ্চুরির। অবশ্য পারেননি। আউট হন শেষ ওভারে। তবে সমান ৭টি করে চার ও ছক্কায় খেলেছেন টি২০তে নিজের ক্যারিয়ারসেরা ৯১ রানের ইনিংস। তৃতীয় উইকেটে মরগান ও মালানের জুটিতে এসেছে ৭৬ বলে ১৮২ রান, টি২০তে যে কোন জুটিতেই ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ। ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে রবি বোপারা ও এ্যালেক্স হেলসের দ্বিতীয় উইকেটে ১৫৯ ছিল আগের সর্বোচ্চ। ইংল্যান্ড থামে ২৪১ রানে। টি২০তে তাদের আগের দলীয় সর্বোচ্চ ছিল ২০১৬ টি২০ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২৩০। এদিন শেষ ৪ ওভার থেকেই ৭৬ রান তোলে ইংল্যান্ড, টি২০তে যা নতুন বিশ্বরেকর্ড। ২০১৭ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আফগানিস্তানের ৭৫ রান ছিল আগের সর্বোচ্চ। এই রান তাড়ায়ও ম্যাচ জমিয়ে তোলার আভাস দিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। স্বাগতিকদের শুরুটাও ছিল উড়ন্ত। উদ্বোধনী জুটিতে ৫ ওভারেই তারা পেরিয়ে যায় পঞ্চাশ। পঞ্চম ওভারে টম কুরানের বলে মার্টিন গাপটিলের (১৪ বলে ২৭) বিদায়ে পথ হারানোর শুরু। একের পর এক ব্যাটসম্যানের আসা-যাওয়ায় ৩৫ রানের মধ্যে ৬ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় কিউইরা। শেষদিকে অধিনায়ক টিম সাউদি ৪ ছক্কায় ১৫ বলে ৩৯ রান কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। স্কোর ॥ ইংল্যান্ড ॥ ২৪১/৩ (২০ ওভার; ব্যান্টন ৩১, বেয়ারস্টো ৮, মালান ১০৩*, মরগান ৯১, বিলিংস ০*; সাউদি ১/৪৭, স্যান্টনার ২/৩২)। নিউজিল্যান্ড ॥ ১৬৫ (১৬.৫ ওভার; গাপটিল ২৭, মুনরো ৩০, সেইফার্ট ৩, ডি গ্রান্ডহোম ৭, টেইলর ১৪, মিচেল ২, স্যান্টনার ১০, সাউদি ৩৯, সোধি ৯, বোল্ট ৮, টিকনার ৫*; স্যাম কুরান ১/৩৬, টম কুরান ১/২৬, জর্ডান ২/২৪, পার্কিনসন ৪/৪৭, ব্রাউন ১/২৯) ফল ॥ ইংল্যান্ড ৭৬ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ ডেভিড মালান (ইংল্যান্ড) সিরিজ ॥ পাঁচ ম্যাচের টি২০ ২-২এ চলমান।
×