ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

‘বিদেশে দেশের কর্মীদের স্বার্থ দেখুন- তাদের বন্ধু হোন, মনিব নয়’

প্রকাশিত: ১১:০৬, ২২ আগস্ট ২০১৯

‘বিদেশে দেশের কর্মীদের স্বার্থ দেখুন- তাদের বন্ধু হোন, মনিব নয়’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ইস্কাটনে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘শ্রম কল্যাণ সম্মেলনের (২০১৯) দ্বিতীয় দিন ২৬ দেশে কর্মরত ২৯ শ্রম কাউন্সিলর ও ফার্স্ট সেক্রেটারিদের সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, দেশের মানুষের আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে সরকার নানা রূপকল্প ও কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর দশটি বিশেষ উদ্যোগ তার মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগের উপযুক্ত স্থান। বিদেশী বিনিয়োগকারীরাও আগ্রহ নিয়ে দেশে বিনিয়োগ করছেন। সরকার বিনিয়োগের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছে। প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশ এখন নানা সূচকে এগিয়ে আছে। এই সূচক ধরে রাখতে আপনাদের ভূমিকা অনেক বেশি। কারণ দ্বিতীয় বৃহত্তম রেমিটেন্স আসে ম্যানপাওয়ার সেক্টর থেকে। সম্মেলনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়েজ আহম্মদ বলেন, প্রবাসী কর্মীরা রেমিটেন্সের মাধ্যমে দেশের দারিদ্র্য বিমোচন ও বিদেশের মাটিতে দেশের ভাবমূর্তি উন্নয়নে ভূমিকা রাখছেন। তাদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে হবে। তাদের সুবিধা-অসুবিধায় আপনাদের ভূমিকা অনেক বেশি। আপনারা বিদেশে দেশের কর্মীদের বন্ধু। মনিব হয়ে কাজ করবেন না। প্রায় এক কোটি কর্মী বিদেশের মাটিতে হার ভাঙ্গা পরিশ্রম করে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছেন। তাদের টাকায় আপনাদের বেতন ভাতা হয়। তাই বিদেশে আপনারা দয়া করে নিজেদের আরাম আয়েশকে গুরুত্ব না দিয়ে দেশের কর্মীদের স্বার্থে কাজ করবেন। আপনাদের তৎপরতা ও কর্ম দক্ষতায় বিভিন্ন দেশ যাতে বাংলাদেশ থেকে আরও কর্মী নিয়োগ করেন। জনশক্তি আমাদের সম্পদ। এই সম্পদ কাজে লাগিয়ে দেশকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করতে হবে, বিষয়টি মাথায় রেখে আপনারা কাজ করলে দেশের উন্নয়নে তা হবে বড় ভূমিকা। আবুল কালাম আজাদ বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সবাইকে নিবেদিত হয়ে কাজ করতে হবে। জাতির পিতার স্বপ্নলালিত সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্য বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে বড় বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। নিজস্ব টাকায় পদ্মা সেতু হচ্ছে। আপনাদের মনে রাখতে হবে পদ্মা সেতু হলে দেশের অর্থনীতি আরও গতিশীল হবে। এ জন্য আমাদের সম্মিলিত কাজ করতে হবে। জনশক্তি আমাদের সম্পদ। এই সম্পদের যেন কোন অপব্যবহার না হয় সেদিকে নজর রাখবেন। দেশের কোন কর্মী বিপদে পড়লে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন। উন্নত দেশ গড়ার দায়িত্ব দেশের সব মানুষের। শুধু সরকারই যে একটা দেশকে উন্নত দেশ করতে পারবে তা কিন্তু নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে গেছেন। এখন আমাদের কাজ। সবাই মিলে কাজ করলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশে পরিণত হবে। সম্মেলনে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব রৌনক জাহানের সভাপতিত্বে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক সেলিম রেজা, বোয়েসেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মরণ কুমার চক্রবর্তী, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, নজীবুল ইসলাম, যুগ্মসচিব ফজলুল করিম, নাসরীন জাহান, মোশাররফ হোসেন ও যাহিদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রতিবছরই বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের শ্রম কাউন্সিলর ও ফার্স্ট সেক্রেটারিদের এমন একটি সম্মেলন হয়। প্রতিবছরই তাদের নানা বিষয়ে দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় তারা কর্মস্থলে ফিরে গিয়ে যা করার তাই করেন। আসলে তো তাদের কর্মীদের কল্যাণেই কাজ করার কথা। আমরা বিভিন্ন হাইকমিশন ও দূতাবাস থেকে নানা ধরনের অভিযোগ পাই যে শ্রম কাউন্সিলর ও ফার্স্ট সেক্রেটারিরা কর্মীদের সুযোগ সুবিধা দেয়ার নামে আরও হয়রানির মধ্যে ফেলে দেন।
×