ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাগেরহাট-কচুয়া সড়ক বেহাল ॥ ভোগান্তি

প্রকাশিত: ০৯:৪৮, ১২ জুলাই ২০১৯

বাগেরহাট-কচুয়া সড়ক  বেহাল ॥ ভোগান্তি

বাবুল সরদার, বাগেরহাট ॥ বাগেরহাটের সাইনবোর্ড-কচুয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের বেহাল অবস্থা। খানাখন্দ, গর্ত আর কাদা মাটিতে সড়কটি এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়ছে সড়কে চলাচলকারী হাজার হাজার মানুষ। শুধু ভোগান্তি নয় দুর্ঘটনাও ঘটে এ কারণে। এক বছর ধরেই সড়ক ও জনপথ বিভাগ, বাগেরহাটের সাড়ে সাত কিলোমিটার সড়কের এ বেহাল। এলাকাবাসীর দাবি দ্রুত সড়কটির সংস্কার না হলে অনেক বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবে রাস্তা সংস্কার ও সম্প্রসারণের জন্য কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পূর্ণ করা হবে বলে জানিয়েছে সড়ক বিভাগ, বাগেরহাট। পথচারীরা বলছে, খানাখন্দে ভরা সড়কটি। একটু বৃষ্টি হলেই পিচঢালা এ রাস্তা পরিণত হয় কাদাময় সড়কে। সাইনবোর্ড থেকে কচুয়ার দিকে যেতে দোবাড়িয়াসহ কয়েকটি স্থানে প্রায়ই ফেসে যায় ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও মালবাহী যানবাহন। তখন সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। পথচারীদের রাস্তার পাশে নেমে চলাচল করতে হয়। সম্প্রতি দেখা যায়, সাইনবোর্ড বাজার থেকে কচুয়ার দিকে যেতে অসংখ্য বড় বড় গর্ত। কিছু স্থানে কাঁচা রাস্তার মতো কাদাও রয়েছে। সড়কটির দোবাড়িয়া নামক স্থানে ফ্রেশ কোম্পানির একটি কাভার্ড ভ্যান ফেসে গেছে। ঘণ্টা খানেক চেষ্টার পরে একটি বুলডোজারের সহায়তায় কাভার্ড ভ্যানটিকে ওই জায়গা থেকে সরানো হয়। এছাড়া দুপুরে একটি ইটবাহী ট্রাকও ফেসে যায় একই জায়গায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ট্রাকের ইট নামিয়ে ট্রাকটি গন্তব্যে নেয় চালক। আলমাস আহমেদ, লুবনা আক্তার, লাবনী, মৌসুমি আক্তার, আব্দুর রহিমসহ কয়েক শিক্ষার্থী বলে, স্কুল ও কলেজে যাওয়ার সময় প্রায়ই গর্তের মধ্যে পড়ে ভ্যান উল্টে যায়। কয়েকবার দুর্ঘটনায়ও পড়েছি। এছাড়া ট্রাক ও অন্যান্য বড় গাড়ি যাওয়ার সময় গর্তের পানি ছিটে এসে আমাদের পোশাক নষ্ট করে দেয়। রাস্তাটি সংস্কার করা হলে একটু শান্তিমতো স্কুলে যেতে পারতাম বলে আক্ষেপ করে শিক্ষার্থীরা। ভ্যানচালক কিশোর দাস বলেন, ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। কিন্তু সড়কে বড় বড় গর্ত হওয়ার কারণে প্রায়ই ভ্যান উল্টে যায়। ভ্যানের ট্যায়ার ও টিউব আগে থেকে কম সময়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি আমরা। ট্রাকচালক মহিদুল ইসলাম বলেন, নিয়মিত কচুয়াবাজারে বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যাই। আবার কচুয়া থেকে নিয়ে আসি। কিন্তু সড়ক এত খারাপ যে মাঝে মাঝেই দুর্ঘটনায় পড়তে হয়। গতকালও আমার ট্রাক ফেসে গেছিল। কাঁচামাল ব্যবসায়ী লতিফ শিকদার বলেন, ব্যবসা করতে হলে বাগেরহাট, সাইনবোর্ড ও কচুয়ার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করতে হয়। কিন্তু সাইনবোর্ড থেকে কচুয়া পর্যন্ত রাস্তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় পরিবহন খরচ অনেক বেশি পড়ে যায়। সড়কটি দ্রুত সংস্কার করা না হলে এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। হোসাইন খান বলেন, কচুয়া উপজেলার অর্থনৈতিক এবং সামাজিক উন্নয়নের জন্য উক্ত রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাস্তার কাজ শেষ হলে যেমন কমবে মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় ভ্যানচালক ও ব্যবসায়ীদের জীবনমানেরও উন্নতি হবে। বাগেরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে সাইনবোর্ড থেকে কচুয়া পর্যন্ত সাড়ে সাত কিলোমিটার সড়ক সংস্কার, সম্প্রসারণ ও কচুয়া বেইলি ব্রিজ ভেঙ্গে কনক্রিটের সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। এ বছরের ২১ জানুয়ারি যার কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১২ ফটু চওড়া সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়ককে ১৮ ফুট চওড়া করা হবে। ইতোমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রানা বিল্ডার্স কাজ শুরু করছে। ২০২০ সালে ৩০ জুন পর্যন্ত এ কার্যাদেশের মেয়াদ রয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষের আশা প্রকাশ করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, রাস্তাটিকে চলাচলের উপযোগী করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে। তারা বালু ও ইটের খোয়া ফেলে আপাতত সড়কটিকে চলাচলের উপযোগী করতে কাজ করছে।
×