ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পরিকল্পনা জানালেন

ঢাকাকে শিশুবান্ধব নগরীতে পরিণত করতে চান মেয়র আতিকুল

প্রকাশিত: ১৩:৩৮, ১৯ জুন ২০১৯

ঢাকাকে শিশুবান্ধব নগরীতে পরিণত করতে চান মেয়র আতিকুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানী ঢাকাকে শিশুবান্ধব নগরীতে পরিণত করতে চান ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। এ লক্ষ্যে আগারগাঁও নতুন রাস্তায় শিশুদের জন্য ৯ দশমিক ৩৮ কিলোমিটার সবুজ বেষ্টনীতে ঘেরা সাইকেল লেন করা হচ্ছে। যার কাজ ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে এছাড়া শিশুদের খেলার জন্য পর্যাপ্ত মাঠ তৈরি বা সংস্কার করা, প্রতিটি মাঠে শিশুদের খেলার পরিবেশ রাখা, প্রতিটি পার্কে শিশুদের খেলার সামগ্রী রাখা ও শিশুদের খেলার আলাদা স্থান তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন মেয়র। মঙ্গলবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট অডিটরিয়ামে শিশুদের নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মেয়র এসব পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। বেসরকারী সংস্থা সেভ দ্যা চিলড্রেন, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউশন অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) এবং সিএন্ডএ ফাউন্ডেশন ও সিপ কতৃক ‘শিশুদের স্বপ্নের শহর’ শীর্ষক এই সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে শিশুবান্ধব স্বপ্নের নগর গড়তে অত্যন্ত যুগোপযোগী ও শিশুবান্ধব নগর গড়তে বিশেষ প্রেজেন্টেশন তুলে ধরেন নগর পরিকল্পনাবিদ ইকবাল হাবিব ও বিআইপির সাধারণ সম্পাদক ড. মুহাম্মদ আদিল খান প্রমুখ। এতে শিশুরা কেমন ঢাকা দেখতে চায় তা তুলে ধরেন। সকাল থেকে শুরু হয়ে দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানে সারাদেশের ৭ শ’ শিশু প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র বলেন, ঢাকাকে পরিবেশবান্ধব ও পরিচ্ছন্ন নগরী গড়তে চাই। সেজন্য আমরা এখন থেকে দেয়ালে কেউ কিছু লিখলে বা গাছে পেরেক মেরে বিজ্ঞাপন দিলে ওই প্রতিষ্ঠানকে খুঁজে বের করে জরিমানা করা হবে। আমি ইতোমধ্যেই ডিএনসিসির সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছি। তিনি বলেন, ঢাকা শহরে যে গাছ লাগানো আছে, সেই গাছের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। পেরেক দিয়ে গাছে লাগানো হয়েছে এখানে কোচিং করানো হয়। টিউশনি করানো হয়। এভাবে গাছগুলো নষ্ট করা হচ্ছে। শিশুদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমরা সবাই মিলে প্রতিবাদ করো। এখন থেকে গাছের মধ্যে যদি কোন সাইনবোর্ড থাকে, সেই সাইনবোর্ডের ছবি তুলে সিটি কর্পোরেশনে পাঠিয়ে দাও। যারা বিজ্ঞাপন দেবে তাদের জরিমানা করা হবে। মেয়র বলেন, বিভিন্ন দেয়ালে দেখা যায়, এখানে উইপোকা ছারপোকার ওষুধ দেয়া হয়। এখানে কোচিং করানো হয়। এখানে ডাক্তার পাওয়া যায়। এসব লিখে ঢাকা শহরকে নিজেরা কেন নষ্ট করছি! এসব যারা লেখেন তাদের দেখলে আপনারা আমাদের জানান। আমি নির্দেশনা দিয়েছি, যারা এ ধরনের বিজ্ঞাপন দেবে তাদের জরিমানা করা হবে। ঢাকা শহরে যত বিজ্ঞাপন আছে, বিজ্ঞাপনদাতাদের ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হবে। আতিকুল ইসলাম বলেন, আগারগাঁও নতুন রাস্তায় ৯ দশমিক ৩৮ কিলোমিটার সাইকেল লেন করা হচ্ছে। এরইমধ্যে কাজ শুরু হয়ে গেছে। সাইকেল লেন থাকবে সজুব বেষ্টনীতে ঘেরা। এছাড়া শিশুবান্ধব নগরী গড়তে নগর এ্যাপের ফলো মি অপশনের মাধ্যমে প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। পাশাপাশি আগারগাঁওয়ে পৃথক সাইকেল লেনসহ সড়ক করা হবে। শীঘ্রই ডিএনসিসির পরিচ্ছন্নতায় প্রযুক্তির ব্যবহার চালু হচ্ছে জানিয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, স্মার্ট সিটিতে স্মার্ট পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আমরা ঝাঁড়ু দেয়ার কাজে প্রযুক্তির ব্যবহার করে যেন ধুলাবালি না ওড়ে সেই ব্যবস্থা করতে উন্নত দেশের ন্যায় শীঘ্রই সেই প্রযুক্তি নির্ভর ঝাঁড়ু চালু করব। নগর এ্যাপ সম্পর্কে নগর পিতা বলেন, আমরা শীঘ্রই নগর এ্যাপ সচল করছি। এই এ্যাপে ‘ফলো মি’ নামে একটা বাটন থাকবে। সেই ফলো মি তে বাচ্চারা চাইলে তার পাঁচজন অভিভাবক বা নিকট জনকে এ্যাড করতে পারবে। কেউ সমস্যায় পড়লে ‘ফলো মি’ অপশনে চাপলেই ওই পাঁচজনের কাছে ম্যাসেজ চলে যাবে। এতে করে আমাদের বাচ্চারা কে কোথায় আছে তা জানা সম্ভব হবে। শিশুদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বর্তমানে যেসব ভাল কাজ হচ্ছে তার সুফল যেমন পাচ্ছে শিশুরা তেমনি খারাপ বা অন্যায় কাজেরও প্রতিবাদ করছে শিশুরা। তিনি শিশুদের উদ্দেশে বলেন, তোমরা যেখানেই নগরের সমস্যা চোখে দেখবে সঙ্গে সঙ্গেই ছবি তুলে নগর এ্যাপে পাঠিয়ে দিবে আমি সঙ্গে সঙ্গেই তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করব। তিনি বলেন, তোমরা প্রত্যেকেই একেজন মেয়রের ভূমিকায় এলাকার নানা সমস্যা তুলে ধরতে পারো। আমরা প্রতিটি নতুন ওয়ার্ডে শিশুবান্ধব খেলার মাঠ তৈরি করব। এতে আমাদের শিশুর মানসিক বিকাশে বেশ ভূমিকা রাখবে।
×