ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বশেমুরকৃবিতে বিক্ষোভ, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ॥ আল্টিমেটাম

প্রকাশিত: ০৯:১৭, ২৭ মে ২০১৯

 বশেমুরকৃবিতে বিক্ষোভ,  ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ॥  আল্টিমেটাম

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ শ্রেণী ক্লাসে অনুপস্থিতির জরিমানা কমানোসহ বিভিন্ন দাবিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরকৃবি) শিক্ষার্থীরা রবিবার ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন, অবস্থান ধর্মঘট এবং বিক্ষোভ করেছে। এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করেছে। শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেয়া না হলে আন্দোলন কর্মসূচী অব্যাহত রাখার আল্টিমেটাম ঘোষণা করেছে আন্দোলনরতরা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানায়, গাজীপুরের সালনাস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ^বিদ্যালয় (বশেমুরকৃবি) কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছে কোন শিক্ষার্থী ৮০ শতাংশের নিচে ক্লাসে উপস্থিত থাকলে সেসব শিক্ষার্থীদের জরিমানা দিয়ে চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। এরমধ্যে যেসব শিক্ষার্থী তাদের শ্রেণীকক্ষে ৭০-৭৯শতাংশ উপস্থিতি হলে দুই হাজার টাকা এবং ৬০-৬৯ শতাংশ উপস্থিতি হলে তাদের পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। শিক্ষার্থীরা এ বিষয়টি সুরাহা করতে শিক্ষকদের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা করতে গেলেও শিক্ষকরা কোন কথা বলেনি। এছাড়া পাবলিক এ বিশ্ববিদ্যালয়টি স্বায়ত্তশাসিত হলেও কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিভিন্ন সময়ে নানা বিধান আরোপ করে যাচ্ছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হয়েও এখন পর্যন্ত কোর্স ক্রেডিট সিস্টেমে বছরে তিনটি টার্ম শেষ করতে হয়। প্রতি টার্ম শুরুর ১৭ দিনের মাথায় ১ম মিড, ১ম মিড শেষ হবার ১৫ দিনের মাথায় ২য় মিড, আবার ২য় মিড শেষ হবার ২৭ দিনের মাথায় ফাইনাল পরীক্ষায় বসতে হয় শিক্ষার্থীদের। এই মিডের মধ্যেও শিক্ষার্থীদের ক্লাস, ল্যাব ক্লাস, কুইজ পরীক্ষা যথারীতি চলতে থাকে। পাশাপাশি ৮০ শতাংশ ক্লাসে উপস্থিত না থাকলে চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিতে দেয়া হয় না। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আরও জানায়, ৪ বছরে ২৪০ ক্রেডিট পড়ার কথা অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চিন্তাই করতে পারেন না। সেখানে স্নাতক পর্যায়ে চারটি অনুষদের মধ্যে কৃষি ও কৃষি অর্থনীতি অনুষদে চার বছরে ২৪০, ফিশারিজ অনুষদে ২৩০ এবং ভেটেরিনারি অনুষদে পাঁচ বছরে ২৮৩ ক্রেডিট পড়ানো হয়। তাদের অভিযোগ, বছরে তিনটি টার্মের (প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির মতো) শুরুতে প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ফি বাবদ প্রায় ১২ হাজার টাকা আদায় করে নিচ্ছে প্রশাসন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাসে অনুপস্থিতির জরিমানা কমানোসহ বিভিন্ন দাবিতে গত ২১ মে থেকে আন্দোলনে নামে। রবিবারেও তারা রবিবার ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন, অবস্থান ধর্মঘট এবং বিক্ষোভ করেছে। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ জানান, ২০০৫ সাল থেকে আন্ডার গ্র্যাজুয়েট এবং ১৯৯১ সাল থেকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েটদের জন্য ওই বিধান চলে এসেছে। ওই বিধান অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ৮০ শতাংশের নিচে হলে কেউ পরীক্ষাই দিতে পারত না। কিন্তু পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৩তম সিন্ডিকেট সভায় সেক্ষেত্রে নির্ধারিত জরিমানা ধার্য্য করে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। যা আগামী জুলাই থেকে চালু হবে। গত ২০ মে এ বিষয়ে অফিস আদেশ দেয়া হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ^বিদ্যালয়ে এ জরিমানার বিধান রয়েছে। আর টার্ম পরীক্ষার বিষয়টিও আগে থেকেই চালু আছে, যা আমেরিকার কোর্স ক্রেডিট সিস্টেম অনুযায়ী চলছে। সম্পূর্ণ আবাসিক এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ক্লাসমুখী করতেই এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব থেকে এটি করা হয়নি।
×