নিজস্ব সংবাদদাতা, জামালপুর, ১১ মে ॥ জামালপুরে দরিদ্র এক কাজের মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মাজেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে শনিবার দুপুরে সদর থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। ওই কাজের মেয়েটি বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। তার বয়স আনুমানিক ১৯ বছর। ধর্ষণের পর কৌশলে মেয়েটিকে বিয়ে দেয়ার দুই মাসের মধ্যে একটি মৃত কন্যাসন্তান প্রসব করায় ঘটনা ফাঁস হয়। এতে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী শুক্রবার রাতে ওই শিক্ষা কর্মকর্তার বাড়ি ঘেরাও করে। এ ঘটনার পর তাকে মাজেদুল ইসলাম ভয়ে গা-ঢাকা দিয়েছেন।
গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, জেলার মেলান্দহ উপজেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলামের বাড়ি জামালপুর সদর উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামে। তিনি স্থানীয় মোতালেব মাস্টারের ছেলে। তার স্ত্রী স্থানীয় শ্রীরামপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। তাদের দুই শিশু সন্তান রয়েছে। শিক্ষা কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলাম গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ২ হাজার টাকা মাসিক মুজুরিতে প্রতিবেশী অবিবাহিত এক মেয়েকে কাজের মেয়ে হিসেবে নিয়োগ দেন। মেয়েটির বাবা বেঁচে নেই। তার মা অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। কাজের মেয়েটি অভিযোগ করে জানান, তার কাজে যোগদানের কয়েকদিন পর বাড়ির মালিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলাম ৮ সেপ্টেম্বর দিনের বেলা তাকে জোর করে ধর্ষণ করেন। সেদিন ছিল শনিবার। শনিবার তার অফিস ছুটি থাকায় এবং তার স্ত্রী ওইদিন স্কুলে থাকায় একাধিক শনিবারে তাকে ধর্ষণ করেছেন। ফলে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। বিষয়টি মাজেদুল ইসলাম টের পেয়ে কাউকে না বলার জন্য তাকে হুমকি দেন। শিক্ষা কর্মকর্তা নিজের অপকর্মকে ভিন্ন খাতে নিতে কৌশলে বেশ টাকা-পয়সা খরচ করে গত ৮ মার্চ মেয়েটিকে একই ইউনিয়নের পিঙ্গলহাটি গ্রামের এক দরিদ্র যুবকের কাছে বিয়ে দেন। বিয়ের পর থেকে মেয়েটি স্বামীর বাড়িতে সংসার করে আসছিলেন। কিন্তু তার স্বামীকে ঘটনা খুলে বলতে সাহস পাননি। এক পর্যায়ে শুক্রবার ভোর চারটার দিকে মেয়েটি একটি মৃত কন্যাসন্তান প্রসব করেন। বিয়ের দুই মাসের মধ্যেই নতুন বউয়ের সন্তান প্রসবের বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়। সন্তান প্রসবের কিছুক্ষণের মধ্যে তার স্বামী ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে ও তার মৃত সন্তানসহ তার বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। ভুক্তভোগী মেয়েটি তার মা ও পরিবারের অন্য স্বজনদের কাছে শিক্ষা কর্মকর্তার অপকর্মের ঘটনা খুলে বললে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী শুক্রবার রাতে শিক্ষা কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলামের বাড়ি ঘেরাও করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। রাত সাড়ে ৮টার দিকে সদর থানা পুলিশ এ ঘটনার প্রেক্ষিতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ^াস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।