ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

খাবার ফেলে পালালেন বরসহ বিয়েবাড়ির সবাই

প্রকাশিত: ০৮:২৫, ৬ মে ২০১৯

 খাবার ফেলে পালালেন  বরসহ বিয়েবাড়ির  সবাই

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ মণিরামপুরের স্বরূপদহ গ্রামে একাদশ শ্রেণীর মেয়ের বিয়ের আয়োজন করেছিলেন বাবা। জাল জন্ম সনদ তৈরি করিয়ে অভয়নগরের নওয়াপাড়া পৌর এলাকার নাসির বাঘার ছেলে অনিক বাঘার সঙ্গে মেয়ের বিয়ে ঠিক করেন তিনি। সেই অনুযায়ী শনিবার রাত দশটার দিকে চলছিল বিয়ের আয়োজন। খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে হাজির হন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান উল্লাহ শরিফী। ইউএনওকে দেখে খাবার প্লেট ফেলে পালিয়ে যান বরসহ দুই পক্ষের সবাই। এদিকে, বিয়ে পড়ানোর জন্য হাজির হয়েছিলেন যে কাজী, সেই মাহবুবুর রহমানকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সঙ্গে আদালত কাজীর লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মণিরামপুর মহিলা ডিগ্রী কলেজে একাদশ শ্রেণীতে পড়ুয়া মেয়ের জন্মসনদ অনুযায়ী বয়স ১৬ বছর ১১ মাস ১৯ দিন। কিন্তু বাবা এক বছর বয়স বাড়িয়ে দিয়ে জাল জন্ম সনদ তৈরি করিয়ে মেয়েকে বিয়ে দিচ্ছিলেন। শনিবার রাত দশটার দিকে স্বরূপদহ গ্রামে কনের বাড়িতে চলছিল বিয়ের আয়োজন। খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান উল্লাহ শরিফী ঘটনাস্থলে যান। ততক্ষণে বিয়ে পড়ানো শেষে চলছিল খাওয়ার আয়োজন। বিয়ে পড়িয়েছিলেন পৌরসভার নিকাহ রেজিস্ট্রার মাহবুবুর রহমানের ছেলে আবিদ হাসান সবুজ। ইউএনওকে দেখে বরসহ সবাই খাবার প্লেট রেখে পালিয়ে যান। পালিয়ে যান কনের বাবাও। ইউএনও বিষয়টি জানতে চাইলে ভুয়া জন্ম সনদ বের করে আনে কনেপক্ষ। তার আগেই মেয়েটির মূল জন্ম সনদ পৌঁছে যায় ইউএনওর হাতে। তিনি সেটি বের করলে লাজবাব হয়ে যান জাল সনদপত্র দেখানো বিয়েবাড়ির লোকজন। তাছাড়া ভুয়া যে জন্ম সনদটির বুনিয়াদে কাজী বিয়ে পড়িয়েছেন, তাতেও বিয়ের জন্য ১১ দিন বয়স কম ছিল মেয়েটির। এই বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান উল্লাহ শরিফী বলেন, যেহেতু আদালত ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগে বিয়ে পড়ানোর কাজ শেষ হয়ে গেছে, তাই বয়স পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত মণিরামপুর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ নূরুজ্জামানকে ওই ছাত্রীর খোঁজখবর রাখতে বলা হয়েছে। কাজী মাহবুবুর রহমানকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই সঙ্গে তার লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। ইউএনও বলেন, জাল জন্ম সনদের বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে। তদন্তে যারা দোষী হবেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
×