ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সরকারী কর্মকর্তাদের এককালীন সুদমুক্ত গাড়ি ঋণে এক শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ

প্রকাশিত: ১০:০৪, ২৯ এপ্রিল ২০১৯

 সরকারী কর্মকর্তাদের এককালীন সুদমুক্ত গাড়ি ঋণে এক শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ এখন থেকে সরকারী কর্মকর্তাদের গাড়ি কেনার জন্য সুদমুক্ত এককালীন ৩০ লাখ টাকা ঋণের ওপর এক শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ প্রদান করতে হবে। এই সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ করে অর্থ বিভাগের নির্দেশনায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। গত ২৫ এপ্রিল এই সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ করে আদেশ জারি করা হয়েছে। এর ফলে প্রাধিকারপ্রাপ্ত অর্থাৎ সচিব, অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম-সচিব ও উপসচিবদের গাড়ি কেনার জন্য সুদমুক্ত ৩০ লাখ টাকার ঋণ নিতে ৩০ হাজার টাকা সার্ভিস চার্জ দিতে হবে। আদেশে বলা হয়েছে, প্রাধিকারপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তাদের সুদমুক্ত বিশেষ অগ্রিম এবং গাড়ি সেবা নগদায়ন নীতিমালা, ২০১৮ (সংশোধিত)’ অনুযায়ী প্রাধিকারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের গাড়ি কেনা এবং এর আনুষঙ্গিক অন্যান্য খরচাদি যেমন রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস, ট্যাক্স টোকেন ইত্যাদি সকল খরচ নির্বাহের জন্য এককালীন সুদমুক্ত ঋণ বাবদ ৩০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হলো। এ সুদমুক্ত ঋণ সুবিধা গ্রহণের ক্ষেত্রে ১ শতাংশ সার্ভিস চার্জ দিতে হবে। এতে অর্থ বিভাগের নির্দেশনা রয়েছে।’ গাড়ি কেনার ঋণ ছাড়াও প্রাধিকারপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তারা গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ, তেল খরচ ও চালকের বেতন বাবদ মাসে ৫০ হাজার টাকা করে পাবেন। প্রাধিকারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে যুগ্ম-সচিব, অতিরিক্ত সচিব এবং সচিবদের ধরা হলেও ২০১৭ সালের জুনে উপসচিবদেরও সরকারী গাড়ি ব্যবহারের দিক থেকে প্রাধিকারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঘোষণা করা হয়। ২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট ‘প্রাধিকারপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তাদের সুদমুক্ত বিশেষ অগ্রিম এবং গাড়িসেবা নগদায়ন নীতিমালা, ২০১৭ (সংশোধিত)’ প্রণয়ন করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ওই নীতিমালা অনুযায়ী, গাড়ি কেনার জন্য ঋণ পেতে হলে সরকারী কর্মকর্তাকে আগে সার্বক্ষণিক গাড়ি ব্যবহারের প্রাধিকারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হতে হবে। চাকরিজীবনে একবারই সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা ঋণ পাওয়া যাবে, যা সর্বোচ্চ ১২০টি সমান কিস্তিতে শোধ করা যাবে। ঋণ নেয়ার পর প্রতি মাসের বেতন থেকে সরকার কিস্তির টাকা কেটে রাখবে। চাকরির মেয়াদকালে সব টাকা আদায় না হলে তা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার গ্র্যাচুইটি বা পেনশনের টাকা থেকে তা কেটে রাখা হবে। এই সার্ভিস চার্জ নিয়ে ঋণ গ্রহীতা কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা বলছেন, অতীতে নেয়া হয়নি। আমরা কেন এই সার্ভিস চার্জ দেব। এদিকে কর্মকর্তারা বলছেন, সার্ভিস চার্জ এ শতাংশ নয়। এর মধ্যে শুভঙ্করের ফাঁকি রয়েছে। সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, ৩০ লাখ টাকায় ১২০ কিস্তিতে মোট ১ লাখ ৩২ হাজার টাকা কর্তন করা হবে। এতে প্রতি কিস্তিতে এক হাজার একশত টাকা করে সার্ভিস চার্জ কাটা হবে। এতে কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভ আরও বেড়েছে। তারা বলছেন, এক শতাংশ সার্ভিস চার্জ হলে মোট ৩০ হাজার টাকা পরিশোধ করার কথা। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত ৪ হাজার ১৫ কর্মকর্তা এই গাড়ির ঋণ নিয়েছেন। এর মধ্যে ৩ হাজার ৪৮৫ কর্মকর্তা ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে নিয়েছেন ৫৩০ কর্মকর্তা। এছাড়া প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ৩১৭ কর্মকর্তা।
×