ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রিমিয়ার ক্রিকেট লীগ

বোলিংয়ে ফরহাদ, ব্যাটিংয়ে সাইফ সেরা

প্রকাশিত: ১২:১৮, ২৫ এপ্রিল ২০১৯

বোলিংয়ে ফরহাদ, ব্যাটিংয়ে সাইফ সেরা

মোঃ মামুন রশীদ ॥ মঙ্গলবার শেষ হয়েছে ওয়ালটন ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগ (ডিপিএল)। গতবারের চ্যাম্পিয়ন আবাহনী লিমিটেড শিরোপা ধরে রেখেছে। দলটিতে বর্তমানে জাতীয় দলে থাকা ৭ ক্রিকেটার আছেন। তবে ব্যাটি-বোলিং নৈপুণ্যে সেরা হতে পারেনি দলটির কোন ক্রিকেটার। প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাবের ওপেনার সাইফ হাসান সর্বাধিক ৮১৪ রান করে সবার ওপরে। আর বোলিংয়ে একই দলের পেসার ফরহাদ রেজা ৩৮ উইকেট নিয়ে হয়েছেন সেরা। ডিপিএলে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে ব্যাটিংয়ে সবার সেরা আবাহনীর বাঁহাতি ওপেনার সৌম্য সরকার। শুরুর দিকে খুব বাজে পারফর্ম করলেও টানা দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি ও রেকর্ড গড়া ডাবল সেঞ্চুরিতে ১৩ ম্যাচে ৫১১ রান করেছেন তিনি। এরপরও অবস্থান ১২ নম্বরে। তবে বোলিংয়ে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের অবস্থা এতটা নাজুক নয়। পেস অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ১৩ ম্যাচে ২৫ উইকেট নিয়ে ৩ নম্বরে এবং ১৪ ম্যাচে ২১ উইকেট নিয়ে ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা আছেন ৮ নম্বরে। ডিপিএলের শুরুর দিকে জাতীয় দলের ব্যাটসম্যানরা একেবারেই নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি। এরচেয়ে যারা অতীতে জাতীয় দলে খেলেছেন এবং এখনও প্রত্যাশায় আছেন ফেরার তারাই আলো ছড়িয়েছেন। এছাড়া তরুণ উদীয়মানদের জন্য এবারের ডিপিএল যেন উদার ছিল। অনেক তরুণ ক্রিকেটার দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখিয়েছেন। যার মধ্যে ২০ বছর বয়সী দোলেশ্বরের ডানহাতি ওপেনার সাইফ অন্যতম। তিনি এবার ডিপিএলে সর্বাধিক রান সংগ্রাহক। সবমিলিয়ে সর্বাধিক ২৭টি ছক্কাও হাঁকিয়েছেন তিনি। সর্বাধিক চার হাঁকিয়েছেন আরেক তরুণ ওপেনার মোহাম্মদ নাইম। লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের হয়ে খেলা ১৯ বছর বয়সী এ বাঁহাতি ৯৫টি চার হাঁকিয়েছেন, ৮০৭ রান করে তালিকার দুই নম্বরে তিনি। জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সম্মান বাঁচিয়েছেন সৌম্য। আগের ম্যাচে ১০৬ এবং মঙ্গলবার শেষদিনে অপরাজিত ২০৮ রানের ইনিংস খেলে তিনি ১২ নম্বরে উঠে আসেন। তিনিই জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে সর্বাধিক রান করেছেন। এবার লীগে হয়েছে ৩৫টি সেঞ্চুরি, যার মধ্যে সর্বাধিক ৩টি করে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন আবাহনীর জহুরুল ইসলাম, দোলেশ্বরের সাইফ, রূপগঞ্জের নাইম, ব্রাদার্সের ফজলে রাব্বি ও প্রাইম ব্যাংকের এনামুল হক বিজয়। সর্বাধিক ৮টি ফিফটি হাঁকিয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার মোহামেডানের রকিবুল হাসান। তিন শতাধিক রান করেছেন, এমন ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি স্ট্রাইকরেট সোহাগ গাজীর। মোহামেডানের হয়ে খেলা এ ক্রিকেটার ১২৩.৯৬ স্ট্রাইকরেটে ৩৮৮ রান করেছেন। তিন শতাধিক রান করাদের মধ্যে সর্বাধিক গড় ফজলে রাব্বির। তিনি ৭৫.৩৭ গড়ে ৬০৩ রান করে তালিকায় ৫ নম্বরে। বোলিংয়ে শুরু থেকেই দুর্দান্ত দাপট দেখিয়েছেন পেস অলরাউন্ডার ফরহাদ রেজা। ধারাবাহিকভাবে দারুণ বোলিং করে তিনি লীগ শেষে ১৬ ম্যাচে ৩৮ উইকেট নিয়ে হয়েছেন সেরা। অনেক পেছনে থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন রূপগঞ্জের পেসার মোহাম্মদ শহীদ। ১৫ ম্যাচে তার শিকার ২৭ উইকেট। দুই ম্যাচ কম খেলে দারুণ ফর্মে থাকা আরেক পেসার সাইফউদ্দিন ২৫ উইকেট নিয়ে তিনে। বরাবরের মতো এবার স্পিনারদের সেভাবে গর্জে উঠতে দেখা যায়নি। তবে স্বীকৃত স্পিনারদের পেছনে ফেলে চমকে দিয়েছেন বিকেএসপির তরুণ বাঁহাতি হাসান মুরাদ। বিকেএসপির এ ১৭ বছর বয়সী স্পিনার ১৩ ম্যাচে ২২ উইকেট নিয়ে চার নম্বরে। সেরা বিশে থাকা বোলারদের মধ্যে ইকোনমি রেটে অবশ্য তিনি সবার ওপরে। মাত্র ৩.৭৫ করে ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন এ কিশোর। আরেক বাঁহাতি স্পিনার নাবিল সামাদ রূপগঞ্জের হয়ে ১৫ ম্যাচে এবং মোহামেডানের অফস্পিনার গাজী ১৬ ম্যাচে ২২ উইকেট করে শিকার করেছেন। প্রথমদিকে বাংলাদেশ জাতীয় দলের পেসস্তম্ভ মাশরাফি বিন মর্তুজা তেমন সফল না হলেও শেষদিকে জ্বলে উঠেছিলেন। এ কারণেই ১৪ ম্যাচে ২১ উইকেট নিয়ে শেষ পর্যন্ত ৮ নম্বরে উঠে এসেছেন তিনি। সবচেয়ে ভাল গড় শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের পেসার দেলোয়ার হোসেনের। ১০ ম্যাচে মাত্র ১৪.৮৯ গড়ে ১৯ উইকেট শিকার করে তার অবস্থান অবশ্য ১০ নম্বরে। সবচেয়ে ভাল স্ট্রাইকরেটও (১৯.১) তার দখলে। সর্বাধিক ২ বার করে ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন সাইফউদ্দিন ও খেলাঘর সমাজকল্যাণ সমিতির ১৯ বছর বয়সী ডানহাতি পেসার রবিউল হক।
×