ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি সন্ত্রাস ছড়ানোর রাজনীতি করছে ॥ মমতা

প্রকাশিত: ১০:২৩, ১৪ এপ্রিল ২০১৯

 পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি  সন্ত্রাস ছড়ানোর রাজনীতি করছে ॥ মমতা

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জী শনিবার নির্বাচনী প্রচারের অংশ হিসেবে শাসক বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন। রাজ্যজুড়ে ইতোমধ্যেই রামনবমীর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া ও কলকাতা২৪ অনলাইন। রামনবমী উপলক্ষে এবারও সশস্ত্র মিছিলের ডাক দিয়েছে বিজেপি। মমতার অভিযোগ বিজেপি সহিংসতা ও সন্ত্রাস ছড়ানোর রাজনীতি করছে পশ্চিমবঙ্গে। কিন্তু সেটা কোনভাবেই বরদাশত করা হবে না বলে তিনি হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন। কিছু রাজনৈতিক দল রাজ্যে মিথ্যা ধর্মের নামে সহিংসতা আমদানি করছে বলেও অভিযোগ করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘ধর্ম মানে যুদ্ধ নয়, মানবিকতা। ধর্ম বেচে খেলে হবে না। আমরা ধর্ম বেচে রাজনীতি করি না।’ এ সভা থেকে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ক্ষমতাচ্যুত করার ডাক দেন মমতা। এর আগে তিনি বলেছিলেন ৫৪৩ আসনের মধ্যে বিজেপি ১শ’র বেশি আসন পাবে না। মমতা এদিন বললেন, প্রথম দফার ভোটে ৯১ আসনের মধ্যে ১০টিও পাবে না বিজেপি। যে দল যেখানে শক্তিশালী সেখানে তাদের ভোট করার আহ্বানও জানান মমতা। তিনি বলেন, ‘তৃণমূল যেখানে শক্তিশালী সেখানে কংগ্রেসকে কেন ভোট দেবেন। এনআরসি নোটবন্দী নিয়েও মোদি-অমিত শাহ জুটিকে আক্রমণ করেন তৃণমূল নেত্রী। বিহারে বিজেপি-জনতা দল সংঘর্ষ ॥ নির্বাচনের আগেই রামমন্দির ইস্যুতে বিহারে সংঘর্ষে জড়িয়েছে বিজেপি এবং জনতা দল (ইউনাইটেড) সমর্থকেরা। সভা চলাকালীন নেতাদের লক্ষ্য করে চেয়ার ছোড়াছুড়ি ও মঞ্চ ভাংচুরের মতো ঘটনা ঘটে। সেখানে রামমন্দির তৈরির প্রশ্নে বিজেপি এবং জেডিইউ সমর্থকদের মধ্যে মতভেদ থেকে শুরু হয়ে যায় হাতাহাতি। জেডিইউ নেতা সঞ্জয় বর্মা রামমন্দির নিয়ে তার বক্তব্য জানাতে ক্ষেপে ওঠে বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। তারা টেবিলে উঠে তার বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করে। কিছুক্ষণের মধ্যে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে সভাস্থল। শুরু হয় চেয়ার ছোড়াছুড়ি। কেউ কেউ মঞ্চে উঠেও সংঘর্ষে জড়িয়ে গেলেন। অযোধ্যায় বিতর্কিত জমিতে রামমন্দির তৈরি এবং জম্মু ও কাশ্মীরকে বিশেষ সুবিধা দিতে ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ এবং ৩৫এ ধারা নিয়ে দুই দলের বিরোধিতা যথেষ্ট পুরনো। যদিও সেই বিরোধিতাকে দূরে সরিয়েই জোট তৈরি করে এই মুহূর্তে বিহারে ক্ষমতাসীন বিজেপি এবং জেডিইউ। এই নির্বাচনে রামমন্দির তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিজেপি। একই সঙ্গে কড়া অবস্থান নিয়েছে ৩৭০, ৩৫এ এবং নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে। বিভিন্ন জনসভায় সারাদেশে এনআরসি চালু করা হবে বলেই জানাচ্ছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। বিভিন্ন ইস্যুতে নিজেদের মতভেদের কথা অবশ্য স্বীকার করে নিয়েছেন জেডিইউ নেতা কে সি ত্যাগী। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের মধ্যে মতভেদ আছে। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে আমরা আগেও আপত্তি জানিয়েছিলাম। এখনও তাই জানাচ্ছি। আগামী দিনেও আমাদের বিরোধিতা জারি থাকবে।’ কংগ্রেসের কথা শুধুই চমক ॥ কংগ্রেস যে ‘ন্যায়ে’র কথা বলছে, তা শুধু ভোটের চমক, কাজের নয়। কারণ কংগ্রেস কখনও ন্যায় দিতে পারেনি, এবার ন্যায় দেবে বিজেপিই। শনিবার তামিলনাড়ুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার নির্বাচনী জনসভা থেকে এভাবেই সরব হলেন রাহুল গান্ধীর দেয়া প্রতিশ্রুতির প্রতিবাদে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, কংগ্রেস কি এখনও ১৯৮৪ সালের শিখ দাঙ্গায় ন্যায় দিতে পেরেছে। মোদি বলেন, শুধু শিখ দাঙ্গাই নয়, দলিতদের ওপর নির্যাতন এবং ভোপাল গ্যাস ট্র্যাজেডির কোন বিচার পাননি মানুষ। এতদিন কংগ্রেস কোন ন্যায় দিতে পারেনি। এখন ন্যায় প্রকল্প এনে দেশকে ন্যায় দেয়ার অঙ্গীকার করছে। বলছেন, এবার ন্যায় পাবে মানুষ। তিনি বলেন, বহু কুখ্যাত ঘটনা কংগ্রেস শাসনের সময় ঘটেছিল। যদি রাহুল বিজেপির হিন্দুত্ব লাইনকে লক্ষ্যবস্তু করার জন্য তামিল গর্ব এবং দ্রাবিড় উত্তরাধিকারকে আহ্বান জানান, তাহলে মোদিও তৈরি তার মোকাবেলায়। মোদি বলেন, আমি মহান এমজিআর এবং জয়ললিতাজির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করি। ভারতের এই দুই আইকন দেশকে গর্বিত করেছে। তারা গরিবদের জন্য কাজ করেছেন। তাদের সামাজিক কল্যাণ প্রকল্পের দ্বারা লাখ লাখ মানুষ দারিদ্র্য থেকে মুক্ত হয়েছে। মুসলিমদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যে মানেকাকে নোটিস ॥ মানেকা গান্ধীকে নোটিস পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের তরফ থেকে সুলতামপুরের জেলা শাসক কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠান। মানেকা বলেছিলেন, মুসলিমরা যেন তাকেই ভোট দেন। যদি তা না হয়, তাহলে তাদের কোন অনুরোধ শুনতে তিনি বাধ্য থাকবেন না। বৃহস্পতিবার প্রচার সভায় মানেকা গান্ধীর একটি ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী যেখানে শোনা যায় মানেকা বলছেন, আমি জিতছি। আমি মানুষের সমর্থন আর ভালবাসায় জিতছি। তবে আমার জয় যদি মুসলিম ভোটারদের ছাড়া হয়, তাহলে খুবই খারাপ লাগবে। তখন ‘দিল খাট্টা’ হয়ে যাবে। অভিযোগ পাওয়ার পরেই ব্যবস্থা নেয় নির্বাচন কমিশন। সুলতানপুরের জেলা শাসক তাকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠান। পরে অবশ্য মানেকা গান্ধী নিজের বক্তব্যের সাফাই দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তার বক্তব্যকে বিকৃত করা হয়েছে। তিনি মুসলিমদের ভালবাসেন। তিনি বিজেপির সংখ্যালঘু সেলের একটি বৈঠক ডেকেছিলেন। তিনি বলতে চেয়েছিলেন, এই নির্বাচনে তিনি জিতছেন। তাতে যেন সভাই সঠিকভাবে অংশগ্রহণ করেন। বাংলায় ভোটের গড় ৮০.৯ শতাংশ ॥ নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে বাংলায় ভোটের গড় ৮০.৯ শতাংশ। আর প্রথম দফায় সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে (৫০.০৩ শতাংশ) পাশের রাজ্য বিহারে। ত্রিপুরা থেকে শুরু করে নাগাল্যান্ড, মনিপুর এবং সিকিমে ভোট পড়েছে কমবেশি শতাংশ। অরুণাচল প্রদেশে ভোট পড়েছে ৭৯.১ শতাংশ। মেঘালয় এবং মিজোরামে ভোট পড়েছে ৬০ শতাংশ। দেশের সবচেয়ে বড় রাজ্য উত্তরপ্রদেশেও ভোট হয় বৃহস্পতিবার। প্রদত্ত ভোটের হার ৫৯.৮ শতাংশ। এদিকে অন্ধ্রপ্রদেশে ১৭৫ বিধানসভা আসন এবং ২৫ লোকসভা আসনে ভোট নেয়া হয় একই দিনে। গড়ে ভোট পড়েছে ৭৮.৮ শতাংশ। সিকিমে ২০১৪ সালে ভোট পড়েছিল ৮৩.৬ শতাংশ। এবার প্রদত্ত ভোটের পরিমাণ ৬৯ শতাংশের মতো। অরুণাচলপ্রদেশে ২০১৪ সালে ভোট পড়েছিল ৬৭.৪ শতাংশ। এবার ভোট পড়েছে ৫৭ শতাংশ।
×