ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতে সাংস্কৃতিক উৎসবের সমাপনীতে মুনতাসীর মামুন

মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার স্মৃতিচিহ্ন মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছে

প্রকাশিত: ০৯:১০, ২৮ মার্চ ২০১৯

মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার স্মৃতিচিহ্ন মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ বিশিষ্ট লেখক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন বলেছেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার স্মৃতিচিহ্ন মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। গণহত্যা নিয়ে অনেক রাজনীতি হয়েছে। গণহত্যা নিয়ে রাজনীতির পরম্পরায় সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এবং তাঁর চার সহচরকে হত্যা করা হয়েছে। গণহত্যা নিয়ে যদি রাজনীতি না হতো, তাহলে হয়ত তাঁদের শহীদ হতে হতো না। গণহত্যার রাজনীতি এই মানুষগুলোকে বাঁচতে দেয়নি। বাংলাদেশে ধর্মের নামে যত মানুষ হত্যা হয়েছে, পৃথিবীতে আর কোথাও এমন হয়নি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজশাহীতে আয়োজিত বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা দিবসের ওপর আলোচনা সভায় সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ভাষা সৈনিক আবুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। অনুষ্ঠানে সকল অপশক্তিকে রুখে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন আরও বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে বিএনপি এমন একটা দল, যারা গণহত্যাকে সমর্থন দিয়েছে। আর মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতে ইসলামীর ভূমিকা কী ছিল সেটা সবাই জানেন। দুঃখের বিষয়, এদেশে আমরা স্বাধীনতা বিরোধীদের রাজনীতি করতে দেই। বিএনপি-জামায়াত গণহত্যা নিয়ে রাজনীতি করে। তিনি বলেন, রাজশাহীসহ সারাদেশে বিএনপি-জামায়াতকে প্রতিরোধ-প্রতিহত করতে হবে। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বলে সকল অপশক্তিকে রুখে দিতে হবে। রাজশাহীর প্রশংসা করে তিনি বলেন, আমি দেশের অনেক অঞ্চল ঘুরেছি। সব শহরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভাল লেগেছে রাজশাহীকে। আমি মানুষের কাছে জানতে চেয়েছি এমন পরিচ্ছন্ন শহর কে গড়েছে, সবাই বলেছেন মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের কথা। তিনি বলেন, মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন আমার দেখা একমাত্র সংস্কৃতিবান মেয়র। রাজশাহী শহর তার উদ্যোগে এতদিন ধরে প্রাণবন্ত থাকল। এই শহরটার রাস্তাঘাট এত সুন্দর ও পরিষ্কার যে দেখলেই ভাল লেগে যায়। এসব কিছুর পেছনে অবদান মেয়র লিটনের। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই শহরে লিটনের মতো মানুষকে বিএনপির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়। এত ছিমছাম শহরে বিএনপি রাজত্ব করে, রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়কে রক্তাক্ত করে। যেই বিএনপি পৃথিবীর ইতিহাসে এমন একটা দল, যারা গণহত্যাকে সমর্থন দিয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া গণহত্যাকে সমর্থন দিয়েছে। একই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আগামী বছর বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন হবে। এই উদ্যাপনের প্রস্তুতি হিসেবেই রাজশাহীতে ১০দিনব্যাপী বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠিত হলো। আগামীতে আবারও ১০ দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক উৎসব উদ্যাপন করা হবে। আর মুজিববর্ষে বছরব্যাপী বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে রাজশাহীতে। মেয়র আরও বলেন, সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের মাধ্যমে সকল অপশক্তিকে রুখে দেয়া সম্ভব, মানুষের মন পবিত্র হয়। শুধু উন্নয়ন করলে হবে না, সঙ্গে মানুষের মনকেও পরিষ্কার করতে হবে। অনুষ্ঠানে সম্মনিত অতিথিদের মধ্যে ছিলেন কবি আসাদ মান্নান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন উৎসব উদ্যাপন পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক রুহুল আমিন প্রামাণিক ও সদস্য সচিব কবি আরিফুল হক কুমার। আলোচনা সভা শেষে উৎসব চলাকালে অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ, চিত্রাঙ্কন, কবিতা আবৃত্তি ও নৃত্য প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন। এর আগে গণহত্যা ও ২৫ মার্চ বিষয়ক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।
×