ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

আজ থেকে শিল্পকলায় দশ দিনব্যাপী জাতীয় পিঠা উৎসব

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ২৩ জানুয়ারি ২০১৯

আজ থেকে শিল্পকলায় দশ দিনব্যাপী জাতীয় পিঠা উৎসব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ষড়ঋতুর বাংলাদেশে প্রকৃতির রূপ বদলের সঙ্গে ঋতুভেদে বাঙালীর খাদ্যাভ্যাসেও যুক্ত হয় উৎসবের আমেজ। সেই সূত্র ধরে শীতকালে ঘরে পিঠা খাওয়ার ধুম। এভাবেই ভোজনরসিক বাঙালীর হাজার বছরের সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের অনন্য এক ঐতিহ্য বাহারি পিঠা। তবে সময়ের ব্যবধানে আধুনিতা জীবনধারার বাস্তবতায় দূরে সরে যায় সেই ঐতিহ্য। নাগরিক ব্যস্ত জীবনে কমে যায় পিঠা-পুলির উৎসব। ঐতিহ্য থেকে দূরবর্তী হওয়ার সেই প্রেক্ষাপটে শেকড়সংলগ্ন হওয়ার লক্ষ্যে আজ বুধবার থেকে শিল্পকলা একাডেমির উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে শুরু হচ্ছে জাতীয় পিঠা উৎসব। বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় এবার উৎসবের যুগপূর্তি ঘটছে। যুগপূর্তির এই উৎসবে দেখা মিলবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ২০০ ধরনের পিঠা। যৌথভাবে দশ দিনব্যাপী এ উৎসবের আয়োজক জাতীয় পিঠা উৎসব উদ্্যাপন পরিষদ ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। মঙ্গলবার বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে পিঠা উৎসবের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন উৎসবের আহ্বায়ক একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি ম. হামিদ। উৎসবের বিস্তারিত তুলে ধরেন পিঠা উৎসব আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব খন্দকার শাহ আলম। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন একাডেমির সচিব কাজী আসাদুজ্জামানসহ উৎসব উদ্্যাপন পরিষদের সদস্যরা। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দশ দিনব্যাপী এ পিঠা উৎসব প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলছে। নানা রকমের রকমের বাহারি পিঠার সঙ্গে উৎসব আঙিনায় প্রতিদিন বিকেল চারটা থেকে চলবে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। উন্মুক্ত মঞ্চে পরিবেশিত হবে নাটক, নৃত্য, অবৃত্তি, সঙ্গীত, কৌতুক, জাদু প্রদর্শনীসহ নানা অনুষ্ঠান। প্রতিদিনের এই পরিবেশনায় থাকবে ২০টি নাট্য সংগঠনের জনপ্রিয় নাটকের অংশ বিশেষের প্রদর্শনী। নৃত্য পরিবেশন করবে ৩০টি নৃত্য সংগঠনের শিল্পীরা। গানে গানে পিঠাপ্রেমীদের মন মাতাবে শতাধিক কণ্ঠশিল্পী। উৎসব আঙিনায় ঠাঁই পাবে ২০টি ডবল ও ২২টি সিঙ্গেল ইউনিটের পিঠার স্টল। আজ বুধবার বিকেল চারটায় যুগপূর্তি জাতীয় পিঠা উৎসব ১৪২৫ উদ্বোধন করবেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিষেশ অতিথি থাকবেন নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, মঞ্চসারথি আতাউর রহমান, বরেণ্য চিত্রশিল্পী সমরজিৎ রায় চৌধুরী ও নৃত্যগুরু আমানুল হক। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা থাকবেন জাতীয় ম. হামিদ। স্বাগত বক্তব্য দেবেন খন্দকার শাহ্ আলম। একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী বলেন, বাঙালীর ঐতিহ্য প্রবাহেরই একটি অংশ হচ্ছে পিঠা। সেই এদেশের লোকসংস্কৃতিরও অংশ সকলের প্রিয় এই খাদ্যটি। আর পিঠাশিল্পীদের বানানো প্রতিটি পিঠায় থাকে প্রাণের ছোঁয়া, মিশে থাকে আবেগÑএটি পৃথিবীতে বিরল। এ সময় তিনি পিঠাশিল্পীদের পিঠার মান ঠিক রাখা এবং প্রতিটি স্টলে রুচিশীল পরিবেশ সৃষ্টির প্রতিও আহ্বান জানান। উদযাপন কমিটির সভাপতি ম. হামিদ বলেন, আমরা ঘরে যে পিঠা খেতাম, সেটা এখন বাইরে চলে এসেছে। তবে এখান থেকে আমরা ঘরেও পিঠা নিয়ে যেতে পারি। আমাদের আঞ্চলিক পিঠাগুলোকে আরো বিকশিত করতে হবে। আর এখন এটি একটি মিলিত শিল্পে পরিণত হয়েছে। উৎসবের বাজেট প্রসঙ্গে আয়োজকরা জানান, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ৪ লাখ টাকার অনুদান, শিল্পকলা একাডেমির বিশেষ তহবিল, স্টল বরাদ্দ থেকে প্রাপ্ত অর্থ এবং পরিষদের সদস্যদের ব্যক্তিগত চাঁদা উৎসবের ব্যয়ভার মেটানো হবে। দশ দিনের এই পিঠা উৎসব চলবে আগামী পয়লা ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
×