ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দুর্নীতিকে ‘লালকার্ড’ দেখাতে চান রাজশাহীর এমপিরা

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ২০ জানুয়ারি ২০১৯

দুর্নীতিকে ‘লালকার্ড’ দেখাতে চান রাজশাহীর এমপিরা

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ চারবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুর্নীতির বিরোধী বার্তাকে স্বাগত জানিয়েছেন রাজশাহীর সংসদ সদস্যরা। প্রত্যেকে স্ব স্ব অবস্থান থেকে দুর্নীতি প্রতিরোধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন তারা। সাংসদরা বলেছেন, দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে কোন নির্দেশনা মেনে তাদের অবস্থান থেকে নিজ সংসদীয় এলাকায় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ কার্যকর করতে তারা তাদের অবস্থান থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন। তারা বলছেন, স্থানীয় পর্যায়ে যাতে কোন ধরনের দুর্নীতি ও অনিয়ম না হয় সেই বিষয়গুলোও তারা নজরে রাখবেন। বিশেষ করে এলাকাবাসীকে সম্পৃক্ত করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনসচেতনামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করবেন। কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ পেলে লাল কাগজের চিঠি দিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হবে। রাজশাহী-৫ আসনের প্রথমবার নির্বাচিত সাংসদ ডাঃ মনসুর রহমান বলেন, ‘দুর্নীতি প্রতিরোধে আমার অবস্থান থেকে যা যা করা সম্ভব তার সবই করা হবে। বিশেষ করে স্থানীয় পর্যায়ে যত ধরনের দুর্নীতির তথ্য পাওয়া যাবে সেসব বন্ধের বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি একটি ইউনিয়নে অনুষ্ঠানে আমার বক্তব্যে বলেছি, বয়স্ক ভাতা কার্ড পেতে যদি কোন ধরনের দুর্নীতির খবর পাওয়া যায় তাহলে তার কাছ থেকে বরাদ্দ কেড়ে নেয়া হবে। আর অন্যান্য যে দুর্নীতির বিষয় রয়েছে সেগুলো বিষয়েও বড় ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ রাজশাহী-৩ আসনের দ্বিতীয়বার নির্বাচিত সাংসদ আয়েন উদ্দিন বলেন, ‘গত পাঁচ বছরে আমার বিরুদ্ধে টিআর ও কাবিখা থেকে দুর্নীতির কেউ কোন অভিযোগ করতে পারেনি। আশা করি এবারও কোন ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার কেউ কোন অভিযোগ দিতে পারবে না। আমার নির্বাচনী এলাকায় কাউকে দুর্নীতি করতে দেব না। দুর্নীতির কোন তথ্য পেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। রাজশাহী-৪ আসনের তৃতীয়বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য প্রকৌশলী এনামুল হক বলেন, ‘শীঘ্রই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে। তার নির্বাচনী এলাকার কোন মানুষ যাতে দুর্নীতি ও হয়রানির শিকার না হন তার সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে। তৃণমূল পর্যায় থেকে দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রথমে জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে পৃথকভাবে সমাবেশ করে শতর্ক করে দেয়া হবে।’ রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকারকে যে ধরনের সহযোগিতা করার সুযোগ আছে তার সবই করা হবে। একই কথা বলেছেন রাজশাহী-১ আসনের তিনবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী। তিনি বলেন, কোন দুর্নীতি চলবে না। দুর্নীতির মূলোৎপাটন করা হবে। দুর্নীতিকে ‘লালকার্ড’ দেখানো হবে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল খালেক বলেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা বাস্তবায়ন করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারবেন সাংসদরা। সাংসদরা যদি এ বিষয়ে সতর্ক ও আন্তরিক হন তাহলে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা সম্ভব। কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১০ বছরে অনেক উন্নয়নমূলক কর্মকা- বাস্তবায়ন করলেও দুর্নীতিকে এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। এজন্যই দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি জিরো টলারেন্স অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এলাকার উন্নয়নে যত ধরনের উন্নয়নমূলক কর্মকা- হয় তার সবই বাস্তবায়ন হয় সাংসদের মাধ্যমে। উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড বাস্তবায়িত করতে যাতে কোন ধরনের দুর্নীতি না হয় সে বিষয়ে সাংসদরা কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে পারেন। তিনি আরও বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে নিয়োগের ক্ষেত্রেও দুর্নীতির কথা শোনা যায়। এসব বিষয়েও সাংসদরা ব্যবস্থা নিতে পারেন। যাতে যোগ্য ব্যক্তিরা চাকরি পান। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের প্রকল্পের টাকা আসে সেসবও যেন ঠিকঠিক মানুষের কাছে পৌঁছে সে বিষয়েও কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারেন সাংসদরা। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, রাজশাহীর সাংসদরা এ বিষয়ে আন্তরিকতার সঙ্গেই কাজ করবেন।’
×