স্টাফ রিপোর্টার ॥ নৌকার প্রার্থীদের বিজয়ী করতে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের প্রতিনিয়ত গোপন বৈঠক চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। শনিবার নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, নির্বাচন কমিশন থেকে বিএনপি-ঐক্যফ্রন্টকে চরম অসহযোগিতা করা হবে যা পুলিশ ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। পুলিশ সূত্রের খবর অনুযায়ী ৩৩টি সিট নৌকার কনফার্ম আছে এবং ৬০ থেকে ৬৫টিতে কনটেস্ট হবে, বাকি আর কোন আসন পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। কাজেই সাংঘাতিক কিছু করা ছাড়া এবারের নির্বাচন উৎরাতে পারবে না আওয়ামী লীগ।
রিজভী বলেন, গোপন বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যদি ধানের শীষের অনুকূলে ভোটের হাওয়া ঠেকানো না যায়, তবে মিডিয়া ক্যু করে নৌকাকে জেতানো হবে। বিটিভির মাধ্যমে ফলাফল ঘোষণা করে সব মিডিয়াতে তা রিলিজ করার ব্যবস্থা করা হবে। একবার ফল ঘোষণা করতে পারলে তারপরে নির্মমভাবে সব ঠা-া করা হবে। প্রশাসন এবং পুলিশের বিতর্কিত ও দলবাজ কর্মকর্তারা জনসমর্থনহীন আওয়ামী লীগকে ফের ক্ষমতায় বসানোর জন্য নানা ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে।
রিজভী বলেন, যশোর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী আবু বকর আবুকে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে বুড়িগঙ্গায় ভাসিয়ে দেয়া হয়েছে। রিজভী বলেন, বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস কাদের চৌধুরী সাবেক সংসদ সদস্য। এজন্য তিনি কারাগারে কারাবিধি অনুযায়ী ডিভিশন পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু তাকে আটক করার পর প্রথমে ডিভিশন দেয়া হলেও শুক্রবার তা বাতিল করে সাধারণ কয়েদিদের সঙ্গে আমদানি ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। রমনা থানা ছাত্রদল নেতা মোঃ জুয়েল রানাকে ২১ নবেম্বর কুড়িল বিশ্বরোড থেকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ, এখনও তার কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। রিজভী বলেন, দেশের মানুষ ১২ বছর ধরে গণতন্ত্রের অধিকার হারা। তাই এবারই সুযোগ সেই অধিকার ফিরিয়ে আনার। সেজন্য সব বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে, লড়াই করে হলেও জনগণকে ভোট দিতে হবে। আর দেশের জনগণকে বুঝতে হবে এবারই ভোট দেয়ার শেষ সুযোগ, আপনারা আর সুযোগ পাবেন না। তাই ভোট দেয়ার সময় কেউ যদি বাধা দেয়, তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
রিজভী বলেন, গণতন্ত্রের অধিকার হারানোটা দেশের মানুষের জন্য দুঃখজনক। গত আড়াই বছর ধরে বিএনপি কোন প্রকার সংঘাতের পথে না গিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে গেছে এবং এখনো শান্তিপূর্র্ণ অবস্থানে আছে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলে ধানের শীষের জোয়ারে নৌকা ভেসে যাবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আটঘাট বেঁধে রেখেও জনগণকে বিশ্বাস করে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনে আসতে চাইছে না। তাদের নিজেদের প্রতি আস্থা নেই, তারা জনগণকে বিশ্বাস করে না। মানুষ তাদের ভোট দেবে, এ কথাটা তারা বিশ্বাস করতে চায় না। সে কারণে তারা এখন গ্রেফতার ও হুমকি চালিয়ে যাচ্ছে। ভোটের দিন যারা এজেন্ট হবেন, তাদের এলাকায় না থাকতে বলা হচ্ছে। নতুবা নির্বাচনের আগেই তাদের গ্রেফতারের হুমকি দেয়া হচ্ছে। রিজভী বলেন, সরকারের কাছে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে যে সাতদফা দাবি জানানো হয়েছে, তার একটি দাবিও মেনে নেননি তারা। এ সরকার পরাজয়ের ভয় পায়। গোয়েন্দা সংস্থায় তাদের নিজেদের লোক দিয়ে করানো রিপোর্টও তাদের বিপক্ষে। সেখানে একটি রিপোর্টও আসেনি, যেখানে তারা নির্বাচনে জয়লাভ করবে। তাই তারা এখন মরিয়া হয়ে আছে।
নৌকাকে বিজয়ী করতে পুলিশ প্রশাসনে গোপন বৈঠক চলছে ॥ রিজভী
প্রকাশিত: ০৪:১৯, ২৫ নভেম্বর ২০১৮
শীর্ষ সংবাদ: