ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নীলফামারী-২

আওয়ামী লীগে নূর অপ্রতিদ্বন্দ্বী ॥ বিএনপি-জামায়াতে টানাটানি

প্রকাশিত: ০৪:০৮, ২৪ অক্টোবর ২০১৮

আওয়ামী লীগে নূর অপ্রতিদ্বন্দ্বী ॥ বিএনপি-জামায়াতে টানাটানি

তাহমিন হক ববী, নীলফামারী ॥ জেলার সদর উপজেলা নিয়ে নীলফামারী-২ আসন। আসনটিতে রয়েছে ১৫টি ইউনিয়ন, একটি পৌরসভা। দেশবরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এ আসনের একাধারে তিনবারের নির্বাচিত এমপি। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসাদুজ্জামান নূরের নির্বাচনী এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেই কেউ। বিএনপি, জামায়াতেও একক মনোনয়ন প্রত্যাশী। ওই দুই দলে রয়েছে জোটের ভাগাভাগির অস্বস্তি। বিএনপির পক্ষে আসনটি আর জামায়াতের প্রার্থীকে ছাড় দিতে নারাজ। অপরদিকে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টি আগাম হাল ছেড়েছে আসনটি। প্রতিটি নির্বাচনে জামায়াত প্রার্থী দিলেও একটিবারের জন্য জয় ছিনিয়ে আনতে পারেনি। এবারও তাদের এক প্রার্থী জোর কদমে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। অপর দিকে বিএনপির পক্ষেও একক প্রার্থীর জনসংযোগ চলছে। রয়েছে সিপিবি, ইসলামী ঐক্যজোট ও ন্যাপের প্রার্থী। জেলায় আওয়ামী লীগের রাজনীতির অভিভাবক নীলফামারী-২ আসনের সংসদ সদস্য সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের আসনে দলের অন্য কোন নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন না। জেলা শহরে বাড়ি হলেও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট মমতাজুল হক মনোনয়ন চাচ্ছেন আসাদুজ্জামান নূরের আসন বাদে তিনটি আসনের যে কোন একটিতে। শুধু দলীয় নেতাই নয়, জাতীয় পার্টির কোন নেতাই মনোনয়ন চাচ্ছেন না এ আসনে। এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের দেওয়ান কামাল আহম্মেদ বলেন, ‘সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর আমাদের মুরুব্বি, আমাদের অভিভাবক। তিনি এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন করছেন। নূর ভাই যতদিন নীলফামারী-২ (সদর উপজেলা) আসনে নির্বাচন করবেন, ততদিন আমি এ আসনে মনোনয়ন চাইব না।’ সদর আসন বাদে আমি মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি। অপরদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট মমতাজুল হক বলেন, ‘ নীলফামারী-২ বাদে যে কোন আসন থেকে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন চেয়েছি। জেলায় আওয়ামী লীগের রাজনীতির অভিভাবক নূরভাই যে আসনের প্রার্থী আমি সেখানে মনোনয়ন চাওয়ার সাহস রাখি না।’ এদিকে জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ পারভেজ মনোনয়ন চাচ্ছেন নীলফামারী-৩ আসন থেকে। তিনি বলেন, ‘নীলফামারী সদর আসাদুজ্জামান নূরের নির্বাচনী এলাকা। তিনি দীর্ঘদিনের এমপি, সরকারের একজন শক্তিশালী মন্ত্রী। আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটগত সম্পর্ক আছে জাপার। আগামীতে জোটগত নির্বাচন হলে তিনিই (নূর) মনোনয়ন পাবেন। এ কারণে জাপা থেকে কেউ আগ্রহ প্রকাশ করছেন না এ আসনে।’ এ বিষয়ে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, একাধারে আমি এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত হয়ে আসছি। এবারও আমি এই আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী। বিএনপি থেকে এ আসনে দলীয় একক মনোনয়ন প্রত্যাশী শিল্পপতি মোঃ সামসুজ্জামান। তিনি বর্তমানে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) এবং জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। আসনটি থেকে বিএনপি-জামায়াতের জোটগত নির্বাচনে জোটের হয়ে নির্বাচন করে জামায়াতের প্রার্থী। সে সময়ে বিএনপির প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায় জোটের আসন ভাগাভাগি। এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ সামসুজ্জামান বলেন, ‘এ আসনে একাধিকবার জামায়াতের প্রার্থীর পরাজয় ঘটেছে। বর্তমানে জামায়াতের চেয়ে বিএনপি সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী। নেতাকর্মীরা সুসংগঠিত রয়েছে, এবারের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীই প্রয়োজন আসনটিতে।’ আসনটিতে আমরা জামায়াতকে আর ছাড় দিতে চাই না। জামায়াতের পক্ষে মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মনিরুজ্জামান মন্টু। তিনি জোটের প্রার্থী হয়ে ২০০৮ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এ আসনের প্রার্থী নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জোটগত নির্বাচনে আসনটিতে বরাবরই জামায়াতের ভাগে ছিল। এবারেও থাকবে।’ বিএনপি-জামায়াত জোট ও ব্যারিস্টার কামাল হোসেনের ঐক্য হতে বেরিয়ে আসা এই আসনে ন্যাপের পক্ষে প্রার্থী দেয়া হবে। দলটির জেলা সভাপতি ফরহানুল হক ন্যাপের পক্ষে প্রার্থী হতে পারেন। এই আসনে বাম দলগুলোর তেমন উল্লেখযোগ্য প্রার্থী মাঠে না থাকলেও সিপিবির পক্ষে শ্রীদাম দাস প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এই আসনটিতে তাদের প্রার্থী হিসেবে জহুরুল ইসলামের নাম ঘোষণা দিয়েছে।
×