ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

এশিয়া কাপ থেকে বিদায়ে চাপে সরফরাজ

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

এশিয়া কাপ থেকে বিদায়ে চাপে সরফরাজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ যে দলটি গত বছর ইংল্যান্ডের মাটিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতে বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছিল, এশিয়া কাপে মাত্র কয়েকটি পরিবর্তন ছিল সেই দলে। যদিও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতার পর সোনালি প্রজন্মের দল হিসেবে দাবি করেছিলেন পাকিস্তানের অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ। সেই দলটি ফাইনালে উঠতে পারেনি। সুপারফোরে তিন ম্যাচের দুটিতেই হেরে বিদায় নিয়েছে পাকরা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটিও ছিল কষ্টসাধ্য জয়ের। এখন তাই চাপের মুখে সরফরাজ। পাক অধিনায়ক সেটা দেশে ফেরার আগেই বুঝতে পেরেছেন। বুধবার বাংলাদেশের কাছে হারের পর সংবাদ সম্মেলনে এসব নিয়েই কথা বলেছেন সরফরাজ। এশিয়া কাপের প্রথম থেকেই উদ্বিগ্ন ছিলেন সরফরাজ। ঘুমাতে পারেননি ঠিকমতো। আর বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচটির আগের রাতে তো ঘুমানো অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। পাকিস্তান দলের অধিনায়ক হিসেবে একেবারে নিজের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং ম্যাচটি ছিল তার। জিতলে অধিনায়ক থাকার চাপটা একেবারেই কমে যেত, আর হারলে তোপের মুখে পড়বেন সেটাও নিশ্চিত ছিল। কারণ ভারতের বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচেই বাজেভাবে হেরে যাওয়াতেই চরম সমালোচিত হচ্ছিল পাকরা। শুধু হংকংয়ের মতো খর্বশক্তির দল ছিল গ্রুপে, সে জন্যই তো সুপারফোর খেলার সুযোগ পেয়েছিল তারা। নাহলে অন্যরকম হতে পারতো পরিস্থিতি। সেটা সুপারফোরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে পরিষ্কার ফুটে উঠেছে। কম অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হওয়ায় ম্যাচটিতে পাকরা শেষ ওভারে গিয়ে জিতেছিল। এরপরও বাংলাদেশের বিপক্ষে বুধবার আবুধাবীতে জিতলেই ফাইনাল খেলার সুযোগ পেয়ে যেত পাকিস্তান। সুযোগ থাকতো ফাইনালে গিয়ে ভারতের ওপর প্রতিশোধ তোলার। কিন্তু সেটিতো হলো না। গত দেড় বছরে ব্যাট হাতেও তেমন সুবিধা করতে পারেননি সরফরাজ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচজয়ী ফিফটি হাঁকানোর পর থেকে তার ব্যাটিং গড় মাত্র ১৭.২! এ কারণে তার ব্যাটিং অর্ডারেও নির্দিষ্ট কোন স্থান নেই। ৪, ৫ ও ৬ নম্বরে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খেলেছেন তিনি। নিজের পারফর্মেন্স এবং দলের অবস্থার কারণে এখন তীব্র চাপটা বেশ ভালভাবেই অনুভব করছেন সরফরাজ। তিনি বলেন, ‘দেখুন, অধিনায়কত্বের চাপটা সবসময়ই থাকে। পাকিস্তানী অধিনায়করা সে যেই থাকুক- অনেক বেশি চাপে থাকে। অবশ্যই যখন নিজে পারফর্ম করতে পারবেন না এবং দলও হারতে থাকবে তখন চাপটা অনেক বেড়ে যায়। সত্য কথাটা হচ্ছে আমি যদি এখন বলি গত ৬ রাত আমি নির্ঘুম কাটিয়েছি, কেউ আমাকে বিশ্বাস করবে না। এটাই জীবনের অংশ এবং এভাবেই সব এগিয়ে যাবে। আমি আবার বলব যে আমাদের কখনও প্যানিক বাটনে চাপ দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না।’ ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরের পর থেকে তিন ফরমেটেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন সরফরাজ। তখন থেকে দলের নৈপুণ্যে উত্থান-পতন রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে তারচেয়ে শুধু ইংল্যান্ড অধিনায়ক জো রুট ও ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলিই বেশি ম্যাচ খেলেছেন। শুধু মা অসুস্থ থাকার কারণে ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজটাই খেলেননি সরফরাজ। কিন্তু তিনি দলে থাকা অবস্থায় উইকেটরক্ষক হিসেবেও কোন বিকল্প রাখা হয়নি দলে। তাই সরফরাজের নির্ঘুম রাত কাটানো খুবই স্বাভাবিক। এশিয়া কাপে দলের এমন বিদায়ের পর হয়তো সরফরাজের বিশ্রামটাই বেশি জরুরী। তিনি বলেন, ‘এটা চিন্তা করা আমার কাজ নয়, নির্বাচক কমিটি ও পিসিবির কাজ এটি। তাদেরই সিদ্ধান্ত নিতে দিন। আমার কাজ খেলা এবং আমি খেলব, খেলেই যাব।’
×