ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় শোক দিবস ও আইভি স্মরণে জাতীয় মহিলা সংস্থার আলোচনা

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ৩১ আগস্ট ২০১৮

জাতীয় শোক দিবস ও আইভি স্মরণে জাতীয় মহিলা সংস্থার আলোচনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদাতবার্ষিকীতে জাতীয় শোক দিবস এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত জাতীয় মহিলা সংস্থার প্রয়াত চেয়ারম্যান শহীদ আইভি রহমানের ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় জাতীয় মহিলা সংস্থার উদ্যোগে সংস্থার বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব অডিটরিয়ামে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রেবেকা মমিন (এমপি)। এ সময় তিনি তার বক্তৃতায় জাতীয় শোক দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরেন এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে ধারণ করে নতুন প্রজন্মকে এদেশকে এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান। সেইসঙ্গে তিনি আরও বলেন, আইভি রহমান নারী জাগরণের একজন সাহসী কর্মী ছিলেন। বাংলাদেশের কিছু কুসন্তান তাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। ষড়যন্ত্রকারী ওই সব ঘাতকরা আজও বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র করছে। বাংলার মানুষ কোন হত্যাকারীকে ক্ষমা করবে না।’ নাছিমা বেগম এনডিসি বলেন, আগস্ট মাস শোকের মাস এই মাসে আমরা হারিয়েছি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের। যা পাকিস্তানী সৈন্যরা করতে সাহস পায়নি তা ঘটিয়েছে এদেশের কতিপয় বিপথগামী সেনা কর্মকর্তারা। ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। আমরা হারিয়েছি বঙ্গবন্ধুকে হারিয়েছি বঙ্গমাতাকে। বঙ্গবন্ধুর বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠার পেছনে ছিল বঙ্গমাতার অসামান্য অবদান। প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে ২১ আগস্ট যে গ্রেনেড হামলা চালানো হয় তাতে অনেকে আহত ও নিহত হন। তাদের মধ্যে নারী জাগরণের দিশারী আইভি রহমানও ছিলেন। বাংলার মানুষ আইভি রহমানের হত্যাকারীদের ক্ষমা করবে না। ষড়যন্ত্রকারী ওইসব ঘাতক আজও বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র করছে। বাংলার মানুষ কোন হত্যাকারীকে ক্ষমা করবে না। তাদের বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। অনুষ্ঠানের সভাপতি জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান অধ্যাপক মমতাজ বেগম (এ্যাডভোকেট) তার বক্তৃতায় বলেন, জাতির পিতা সোনার বাংলা গড়ার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন আজ তারই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তা বাস্তবায়ন করে চলেছেন। তিনি আরও বলেন, ১৫ আগস্টের খুনীরা থেমে থাকেনি তারা ২০০৪-এর ২১ আগস্ট মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে খুন করতে চেয়েছিল। আল্লাহর অশেষ রহমতে সেদিন তিনি বেঁচে গিয়েছেন। কিন্তু সেদিনের গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন অসংখ্য নেতাকর্মী। সেদিন নিহত হন বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান আইভি রহমান। এ সময় তিনি আইভি রহমানের কর্মময় জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন এবং জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ার থাকাকালে নারী উন্নয়নে তার অসামান্য অবদানের কথা স্মরণ করেন। ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে নারকীয় গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হয়ে চারদিন হাসপাতালে জীবন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। জেবুন্নাহার রহমান আইভি। ১৯৪৪ সালের ৭ জুলাই ভৈরবের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে তার জন্ম। বাবা জালাল উদ্দিন আহমেদ ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ ও মা হাসিনা বেগম ছিলেন গৃহিণী। তার একমাত্র ছেলে নাজমুল হাসান পাপন বর্তমানে কিশোরগঞ্জ-৬ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি। আইভি রহমানের দুই মেয়ে তানিয়া ও ময়না। আইভি রহমান ১৯৫৮ সালের ২৭ জুন নবম শ্রেণীতে অধ্যয়নকালে জিল্লুর রহমানের সঙ্গে তার বিবাহ হয়। ১৯৮০ সাল থেকে বেশ কয়েক বছর মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত জাতীয় মহিলা সংস্থা এবং জাতীয় মহিলা সমিতির চেয়ারম্যান ছিলেন আইভি রহমান। আলোচনা সভায় অন্যদের মাঝে বক্তব্য রাখে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন ও পরিকল্পনা) মাহমুদা শারমীন বেনু, জাতীয় মহিলা সংস্থার নির্বাহী কমিটির সদস্য নারী নেত্রী সাবেরা বেগম, স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় মহিলা সংস্থার নির্বাহী পরিচালক জনাব জাহানারা পারভীন। আলোচনা সবার পর যথারীতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ও পরিবারের অন্যান্য সদস্য এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত শহীদ আইভি রহমানসহ অন্যান্য শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
×