নিজস্ব সংবাদদাতা, দৌলতপুর, কুষ্টিয়া, ৮ আগস্ট ॥ দৌলতপুরে পরকীয়ায় জড়িয়ে গোপন অভিসারের সময় প্রেমিকার হাতে পুরুষাঙ্গ কর্তনে হাবিবুর রহমান (৩৫) নামের এক যুবকের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে দৌলতপুর উপজেলার দৌলতখালী দাড়েরপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত প্রেমিকা মাছুরা খাতুনকে (৩৬) রাতেই আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে পুলিশের কাছে পুরো ঘটনা স্বীকার করে নানা তথ্য দিয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার আল্লারদর্গা শিল্প এলাকার মৃত সাইদ মাস্টারের ছেলে হাবিবুর রহমান ও দৌলতখালী দাড়েরপাড়া এলাকার মৃত ইয়ার আলীর মেয়ে দুই সন্তানের জননী মাছুরা খাতুনের মধ্যে বেশ কিছুদিন আগে পরকীয়া গড়ে ওঠে। মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার দৌলতখালী দাড়েরপাড়া গ্রামে মাছুরা খাতুন তার বোনের বাড়িতে হাবিবুরকে ডেকে নেয়। পরে মাছুরা ও হাবিবুর ওই ফাঁকা বাড়িতে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। একপর্যায়ে মাছুরা ক্ষিপ্ত হয়ে প্রেমিক হাবিবুরের পুরুষাঙ্গ ব্লেড দিয়ে কেটে দেয়। এ সময় হাবিবুরের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে দ্রুত কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় রাত ৮ টার দিকে তার মৃত্যু হয়। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে নেয়। পুলিশ জানায়, ঘাতক মাছুরা হাবিবুরের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ানোর পর বেশ কিছুদিন অবৈধভাবে মেলামেশা করে। একপর্যায়ে তারা উপজেলার হোসেনাবাদ এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে মাস দুয়েক থাকে। এরপর সে মাছুরাকে তার বোনের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু ইদানীং তাকে খুব একটা পাত্তা দিচ্ছিল না হাবিবুর। মাছুরা বিয়ে করার কথা বললে হাবিবুর নানা টালবাহানা করে আসছিল। এ কারণে প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠে মাছুরা খাতুন। মঙ্গলবার মাছুরা কৌশলে হাবিবুরকে বোনের বাড়িতে ডেকে নিয়ে বিয়ের কাবিন করার দাবি জানিয়ে যথারীতি শারীরিক সম্পর্কেও জড়ায়। এ সময় হাবিবুরের গোপনাঙ্গ মাছুরা মুখে দিয়ে কামড় দেয় ও ব্লেড দিয়ে তার পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলে । এর আগে পার্শ্ববর্তী মিরপুর গ্রামের আনারুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে মাছুরার বিয়ে হলেও পরবর্তীতে তাদের মধ্যে ডিভোর্স হয়ে যায়। মাছুরা খাতুনের পরকীয়া ও পরবর্তী কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ হয়ে তার ছোট মেয়ে মাস চারেক আগে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলেও পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, মাছুরা খাতুন দীর্ঘদিন ধরে দৌলতখালী দাড়েরপাড়া গ্রামে তার বোনের বাড়িতে বসবাস করে আসছিল। প্রবাসী দুলাভাইয়ের অনুপস্থিতিতে সে একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। ওই বাড়িতে অনেকের অবাধ যাতায়াত ছিল। তার এসব সম্পর্কের কথা জেনে যাওয়ায় হাবিবুর তাকে বিয়ে করতে অসম্মতি জানানোয় শেষমেষ এমন নিষ্ঠুরভাবে ক্ষোভের বহির্প্রকাশ ঘটান তিনি। মাছুরা ওই এলাকার এক সময়ের আলোচিত আরব ডাকাতের বোন। দৌলতপুর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আব্দুর রহিম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় অভিযুক্ত মাছুরা খাতুনকে আটক করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মামলা গ্রহণ করা হবে।