ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ২৫ মে ২০১৮

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

মোরসালিন মিজান ॥ সারাদিন পানাহার থেকে বিরত থাকা। সন্ধ্যায় ইফতার। নতুন এই নিয়মে বেশ অভ্যস্থ হয়ে ওঠেছে রাজধানীবাসী। সেহরি সাধারণত ঘরেই হয়। আয়োজনটি তাই বিশেষ চোখে পড়ে না। ইফতার খুব দৃশ্যমান। সুন্দর কিছু দিকও আছে এর। পান্থপথের তেমন একটি উদ্যোগের কথা আজ বলা যাক। বসুন্ধরা সিটি শপিংমলের সামনের রাস্তায় লম্বা টেবিল পেতে সেখানে প্রতিদিন ইফতার সামগ্রী সাজানো হচ্ছে। হঠাৎ দেখায় মনে হতে পারে অস্থায়ী দোকান। আদতে তা নয়। এক ধরনের সেবাকর্ম। এখান থেকে দরিদ্রদের মাঝে, সাধারণ পথচারীদের মাঝে বিনা মূল্যে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ মানুষের ইফতারের ব্যবস্থা করছে এসইএল চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশন নামের একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান। ‘পথচারীদের জন্য ইফতার সেবা’ শিরোনামে প্রথম রোজা থেকে চলছে এই কর্মসূচী। সন্ধ্যা নামার আগেই সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের ভিড় জমে যায়। ফাউন্ডেশনের কর্মীরা পথচারীদের হাতে ইফতার সামগ্রী তুলে দেন। গত বুধবার সেখানে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিদিনের ইফতার আয়োজনে থাকছে পানি খেজুর ছোলা মুড়ি পেঁয়াজু বেগুনি আলুর চপ, জিলাপিসহ নানা আইটেম। একদল রিক্সাচালকরা ইফতার সংগ্রহ করছিলেন। হাশেম নামের এক চালক বললেন, রিক্সা রেখে দূরে কোথাও যেতে পারি না। চুরি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই ইফতার আয়োজনটি রাস্তার ধারে। তাই এখান থেকে ইফতার নিয়ে রিক্সায় বসেই খেতে পারি। সাধারণ পথচারী মুহিতুলও ইফতার সামগ্রী হাতে নিয়ে হাঁটছিলেন। বললেন, এখন শেষ সময়। কোন রেস্তোরাঁয় গিয়ে বসার জায়গা পাব না। তাই এখান থেকে ইফতার গ্রহণ করলাম। উদ্যোগের জন্য আয়োজকদের সাধুবাদ জানান তিনি। উদ্যোক্তাদের পক্ষে এসইএল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইবনুল সাঈদ রানা বলেন, পথচারীদের সেবা প্রদানের কথা চিন্তা করেই আমাদের এই উদ্যোগ। সবাই আমাদের অতিথি। যে কেউ আমাদের কাছ থেকে ইফতার গ্রহণ করতে পারেন। রমজানের শেষ দিন পর্যন্ত ইফতার আয়োজন চালু রাখতে চান বলে জানান তিনি। এদিকে, ঈদ উদ্যাপনের প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গেছে। আত্মীয় পরিজনের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে বহু মানুষ যথারীতি গ্রামের বাড়ি যাবেন। অনেকেরই প্রথম পছন্দ ট্রেন। ঈদ-উল-ফিতরের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হচ্ছে আগামী ১ জুন থেকে। ১০ জুন থেকে ঈদযাত্রা। ঢাকা স্টেশনে ২৬টি কাউন্টার খোলা থাকবে। নারীদের জন্য থাকবে দুটি আলাদা কাউন্টার। সকাল ৮টা থেকে টিকেট সংগ্রহ করা যাবে। ঈদে মোট ১ হাজার ৪০৫টি কোচ চলাচল করবে। ২২৯টি লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) ব্যবহার করা হবে। সারাদেশে দৈনিক ২ লাখ ৭৫ হাজার যাত্রী পরিবহনের ব্যবস্থা করা হবে। ঈদ সামনে রেখে বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার এসব তথ্য জানানো হয়। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী মুজিবুল হক বলেছেন, আন্তঃনগর ট্রেনের সাপ্তাহিক বন্ধ প্রত্যাহার করা হয়েছে। ঈদের পাঁচ দিন আগ থেকে ঈদের দিন পর্যন্ত সব আন্তঃনগর ট্রেন সাপ্তাহিক বন্ধের দিনও চলবে। যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের সুবিধার্থে ঈদের তিন দিন আগ থেকে কনটেইনার ও জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন ছাড়া কোন মালবাহী ট্রেন চলাচল করবে না। এবার ট্রেন ছাড়তে দেরি হলে থাকবে বিকল্প ট্রেনের ব্যবস্থা। তিনি বলেন, ঈদে ১০ থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত রেলওয়ের কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি থাকবে না। যাত্রা নির্বিঘœ করতে সব কর্মকর্তা ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করবেন। বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক আমজাদ হোসেন আরও একটু ব্যাখ্যা করে বলেছেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে নির্দিষ্ট সময়ে এবার ট্রেন ছাড়বে। অন্য রুটেও তেমন কোন সমস্যা নেই। তবে ঢাকা-লালমনিরহাট রুটে ট্রেন ছাড়তে একটু বিলম্ব হয়। এটা নিরসনে বিকল্প ট্রেন রেখেছি। বিলম্ব হলেই বিকল্প ট্রেন পরিচালনা করা হবে।
×