ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ক্রয়ক্ষমতার সীমায়

প্রকাশিত: ০৩:৫৮, ২৪ মে ২০১৮

ক্রয়ক্ষমতার সীমায়

প্রতি বছর রমজান মাস আসার প্রাক্কালে সাধারণ মানুষের মধ্যে দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি নিয়ে দুর্ভাবনা কাজ করে। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের মানুষের মধ্যে দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতির কারণে নাভিশ্বাস উঠে যায়। যদিও সরকারীভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া হয়, তবুও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা যথাযথভাবে মানা হয় না। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হয়। বাজারে সঙ্কট না থাকলেও অসাধু ব্যবসায়ীরা এ অপকর্ম অব্যাহতভাবে করে চলেছে। এমনিতে নির্ধারিত মূল্যে জিনিসপত্র কেনাটাই অনেকের জন্য কষ্টকর। তার ওপর যখন অধিক মুনাফার লোভে বিক্রেতারা বেশি দামে পণ্য বিক্রি করেন তখন তা ক্রেতা সাধারণের জন্য অসহনীয় হয়ে পড়ে। সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার চেষ্টা চালালেও কিছু মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের জন্য তা বারবার হোঁচট খাচ্ছে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের লোকজনের গাফিলতির কথা শোনা যায়। আবার নিয়মিত মনিটরিংয়ের অভাবের কথাও জানা যায়। ফলে দায়ী ব্যবসায়ীরা যেমন পার পেয়ে যান, তেমনি আবার একই ধরনের অপকর্মে যুক্ত হয়ে পড়েন। বিভিন্ন ধর্মীয় বা সামাজিক উৎসবের সময় এক শ্রেণীর ব্যবসায়ীরা অতি মুনাফার জন্য মরিয়া হয়ে যান। তাদের কাছে ধর্মীয় নির্দেশনা বা জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতার বিষয়টি গৌণ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ যেন অসহায়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট বিভাগ একটু দূরদর্শী ও সতর্ক হলে অসাধু ব্যবসায়ীদের এ সকল অপকর্ম থেকে জনগণ রক্ষা পেতে পারে। আর বিক্রেতারা যদি ক্রেতার দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করতেন তাহলে হয়ত লাগামহীনভাবে মূল্য বৃদ্ধি করতেন না। দাম বৃদ্ধির এই হার স্থানভেদে পার্থক্য থাকলেও নির্দিষ্ট কিছু দ্রব্যের মূল্য সবক্ষেত্রে একই হারে বেড়ে থাকে। ক্রেতা সাধারণের তখন অধিক মূল্যে পণ্য কেনা ছাড়া কোন পথ থাকে না। অবশ্য টিসিবি কয়েকটি পণ্য স্বল্পমূল্যে ভোক্তা সাধারণের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ অনুসারে ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে যাচ্ছে। কখনও কখনও বাজারে সঙ্কট সৃষ্টি হলে প্রতিষ্ঠানটি পণ্য আমদানির মাধ্যমে পরিস্থিতি মোকাবেলার চেষ্টা করে। তবে টিসিবির পণ্য বাজারে আসার পূর্বেই মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা তাদের কাজটি সেরে ফেলেন। ফলে জনগণ এর সুফল ভোগ করতে পারে না। সারাদিন রোজা রাখার পর স্বাভাবিকভাবেই কিছু ভাল খাবারের প্রত্যাশা সকলের থাকে। আর এই দিকটিকে টার্গেট করে বিক্রেতারা দ্রব্যের মূল্য বাড়িয়ে দেন। বাজারে সঙ্কট তৈরি হয়। অবস্থা দেখে মনে হয় সাধারণ ক্রেতারা বিক্রেতাদের কাছে এক প্রকার জিম্মি হয়ে যান। এ অবস্থা নিয়ন্ত্রণে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও ব্যবসায়ীদের সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে পারলে দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা সম্ভব হবে। মোহাম্মদপুর, ঢাকা থেকে
×