ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

৩,৫০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনা-দর্শনা ডাবল লাইন রেলপথ নির্মাণ অনুমোদন

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ৯ মে ২০১৮

৩,৫০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনা-দর্শনা ডাবল লাইন রেলপথ নির্মাণ অনুমোদন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা-খুলনা রেল করিডরের খুলনা থেকে দর্শনা পর্যন্ত ডাবল লাইন নির্মাণের উদ্যোগ অবশেষে আলোর মুখ দেখছে। বর্তমান সিঙ্গেল লাইনের কারণে দুটি ট্রেন চলাচলে দীর্ঘসময় লাগে। তাই ডাবল লাইন নির্মাণ হলে কমবে সেই দুর্ভোগ, বাঁচবে সময়, বাড়বে পণ্য পরিবহন-এমনটাই আশা সংশ্লিষ্টদের। প্রকল্পের আওতায় খুলনা থেকে যশোর, ঝিনাইদহ হয়ে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা পর্যন্ত ১২৬ কিলোমিটার রেলপথ ডাবল লাইনে উন্নীত করা হবে। ৩ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা ব্যয় ধরে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের এ বিষয়ে বছরখানেক আগে পাঠানো একটি প্রকল্পে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। প্রকল্প বাস্তবায়নে ভারত সরকারের প্রতিশ্রুত দ্বিতীয় লাইন অব ক্রেডিটের ২ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা ব্যবহার করা হবে। এ ছাড়া সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে ৮১৭ কোটি টাকা। আগামী ৫ বছরে প্রকল্পের কাজ শেষ করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে। মঙ্গলবার শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এটিসহ মোট ১৩টি প্রকল্পে অনুমোদন দেয়া হয়। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সভায় নয়টি নতুন ও চারটি সংশোধিত প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের নির্দেশনা দিয়ে দুইটি প্রকল্প ফেরত পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পাওয়া খুলনা-দর্শনা ডাবল লাইন রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের গুরুত্ব উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু হওয়ার পরে এ রেললাইনের যাত্রী ও বাণিজ্যিক পরিবহনের ব্যস্ততা বহুগুণ বেড়ে যাবে। প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় খুলনা-দর্শনা ১২৬ দশমিক ২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ব্রডগেজ সেকশনে ডাবল লাইন রেলপথ নির্মাণ করা হবে। এটি করা হলে পশ্চিমাঞ্চলের তেল ভিত্তিক পাওয়ার প্ল্যান্টগুলোতে এবং সেচসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে দ্রুত ও সহজে তেল সরবরাহ করা যাবে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের ওপর চাপ কমাতে মংলা বন্দরের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্থাপনের জন্য খুলনা-মংলা ৫৩ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প চলমান রয়েছে। এর ফলে এ বন্দর দিয়ে নেপাল ও ভুটান তাদের আমদানি-রফাতানি কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে, যা সার্বিকভাবে দেশের প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সহায়ক হবে। অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্প ॥ পাহাড়তলী ওয়ার্কসপ উন্নয়ন প্রকল্প (২য় সংশোধিত), যার ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছে ৩১৮ কোটি ২৬ লাখ টাকা। নওগাঁ সড়ক বিভাগাধীন একটি আঞ্চলিক ২টি জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প, নতুন এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩১৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা। জয়পুরহাট (হিচমি) পুরান আইপল-পাঁচবিবি হিলি মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প, যার ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এ ছাড়া অনুমোদন পাওয়া নড়াইল-ফুলতলা জেলা মহাসড়ককে যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৭ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। উল্লাপাড়া রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৯২ কোটি ২৩ লাখ টাকা। রংপুর সিটি কর্পোরেশনের জলাবদ্ধতা নিরসন ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় ২১০ কোটি টাকা। এগুলোর বাইরে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের আয়রণ ব্রিজ পুনঃনির্মাণ পুনর্বাসন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৮৩৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা। জাতীয় জীন ব্যাংক স্থাপন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৬০ কোটি টাকা। বাংলাদেশে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। শেখ হাসিনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, মেলান্দহ, জামালপুর স্থাপন প্রকল্পের সংশোধিত ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। ১৫টি জেলা শিল্পকলা একাডেমি নবায়ন, সংস্কার ও মেরামত প্রকল্পের সংশোধিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা। সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্প: জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা সড়ক ৪ লেন মহাসড়কে উন্নীতকরণ প্রকল্পের ব্যয় দ্বিতীয় বারের মতো সংশোধন করা হয়েছে, দুই হাজার ১৭২ টাকা ব্যয়ের প্রকল্পটির বর্তমান ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৫৯৩ কোটি ১৬ লাখ টাকা। পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে সরকারী তহবিল থেকে ৭ হাজার ৯১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৭ হাজার ৯৩ কোটি ৬ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
×