ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

২২তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন সৈয়দ মাহমুদ হোসেন

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

২২তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন সৈয়দ মাহমুদ হোসেন

স্টফ রিপোর্টার ॥ দেশের ২২তম প্রধান বিচারপতি হিসেব শপথ নিলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। শনিবার সন্ধ্যা ৭টা ১১ মিনিটে বঙ্গভবনে তাকে শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। বঙ্গভবনের দরবার হলে এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মন্ত্রিসভার জ্যেষ্ঠ সদস্য, সাবেক প্রধান বিচারপতিগণ, উচ্চ আদালতের জ্যেষ্ঠ আইনজীবীসহ সরকারের পদস্থ বেসামরিক-সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ শুক্রবার নতুন প্রধান বিচারপতি নিয়োগের আদেশে সই করেন। এর পরপরই পদত্যাগ করেন আপীল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারক মোঃ আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা, যিনি প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ শুক্রবার নতুন প্রধান বিচারপতি নিয়োগের আদেশে সই করেন। এর পরপরই পদত্যাগ করেন আপীল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারক মোঃ আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা, যিনি অস্থায়ী প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকার আমলে নিয়োগ পাওয়ার দুই বছর পর বিএনপি সরকার আমলে ২০০৩ সালে হাই কোর্টের স্থায়ী বিচারক হন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। ২০১১ সালে তিনি আপীল বিভাগের বিচারক পদে উন্নীত হন। সরকারী চাকরির বয়সসীমা অনুযায়ী, ২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব চালিয়ে যেতে পারবেন সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। শপথ অনুষ্ঠান শুরুর কিছুক্ষণ আগে প্রধান বিচারপতির পোশাকে দরবার হলে প্রবেশ করেন বিচারপতি মাহমুদ হোসেন। তার পরপরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানে পৌঁছান। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পানিসম্পদমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার, প্রধানমন্ত্রীর উপেদেষ্টা এইচটি ইমাম ও তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। আরও এসেছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, নৌবাহিনীর প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার মার্শাল আবু এসরার ও আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী। এছাড়া এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, সুপ্রীমকোর্ট কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং আইনজীবী এম আমীর-উল ইসলাম ও আবদুল বাসেত মজুমদার উপস্থিত ছিলেন শপথ অনুষ্ঠানে। শপথের আনুষ্ঠানিকতা শেষে নতুন প্রধান বিচারপতিকে অভিনন্দন জানান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। এর আগে সন্ধ্যা ৬টার কিছু পরে সৈয়দ মাহমুদ হোসেন সপরিবারে বঙ্গভবনে প্রবেশ করেন। এর আগে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মোঃ জয়নাল আবেদিন সাংবাদিকদের বলেন, শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে শপথ নেবেন নতুন প্রধান বিচারপতি। শুক্রবার এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপনও জারি করে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মোঃ জহিরুল হক এই প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেছেন। আপীল বিভাগের পাঁচজন বিচারপতির মধ্যে আবদুল ওয়াহহাব মিঞা সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ। জ্যেষ্ঠতা বিবেচনায় তার পরেই ছিলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। জ্যেষ্ঠতার ক্রমে এরপরে রয়েছেন বিচারপতি মোঃ ইমান আলী, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার। এর আগে দেশের ২১তম প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা দুর্নীতির অভিযোগে পদত্যাগ করেন। প্রধান বিচারপতি হিসেবে তার দায়িত্বপালনের মেয়াদ ছিল ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত । বয়সসীমা অনুযায়ী বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার দায়িত্বপালনের সময়সীমা ছিল ২০১৮ সালের ১০ নবেম্বর পর্যন্ত। আর বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সময়সীমা ২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। স্বাগত জানাল সুপ্রীমকোর্ট বার ॥ জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন হলেও প্রধান বিচারপতি পদে সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নিয়োগকে স্বাগত জানিয়েছে সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতি। শনিবার সন্ধ্যায় সংগঠনের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘আজ রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সুপ্রীমকোর্টের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আমরা প্রধান বিচারপতিকে আনুষ্ঠানিক অভিনন্দন জানাব। আমরা তার নিয়োগকে স্বাগত জানাচ্ছি।’ওই সংবাদ সম্মেলন শেষ করেই বঙ্গভবনে নতুন প্রধান বিচারপতির শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেন সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন ও সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।
×