ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রেলে নিয়োগ-পদোন্নতি প্রশ্নবিদ্ধ ॥ তদন্তে নেমেছে দুদক

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ২৮ জানুয়ারি ২০১৮

রেলে নিয়োগ-পদোন্নতি প্রশ্নবিদ্ধ ॥ তদন্তে নেমেছে দুদক

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ রেলে নিয়োগ প্রক্রিয়াসহ পদোন্নতিও কলঙ্কিত হচ্ছে কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারী চক্রের কারণে। দেশের বৃহদায়তন এই পরিববহন সেক্টরে এমন অসাধুদের কারণে প্রত্যেকটি নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ার কোটা না মানায় কোন কোন চাকুরের পরিবারের ৫/৬ জন সকলেই নিয়োগ পেয়েছে। শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদসহ পোষ্য কোটার সনদেও জালিয়াতি চলে রেলের নিয়োগে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চট্টগ্রামের সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে বেশ কয়েকটি অভিযোগের অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। তবে দুদকের তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ পাওয়া গেছে রেল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। জানা গেছে, গত ১৫ জানুয়ারি দুদকের পক্ষ থেকে (স্মারক নং দুদক/সাজেকা/চট্টগ্রাম-২/২১৪) রেলের পূর্বাঞ্চলীয় জেনারেল ম্যানেজারকে কয়েকটি অভিযোগের ভিত্তিতে রেকর্ড সরবরাহের জন্য চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে। দুদক চট্টগ্রাম জেলা সমন্বিত কার্যালয় থেকে এমন অভিযোগের অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা হিসেবে উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিনকে অভিযোগের প্রতিবেদন দাখিল করতে নিযুক্ত করা হয়েছে। দুদকের পক্ষ থেকে জানা গেছে, অলি উল্লাহ প্রকাশ সুমন সহকারী দাবি পরিদর্শক হিসেবে পূর্বাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তার অধীনে সেন্ট্রাল রেলওয়ে বিল্ডিং (সিআরবি) এ সহকারী দাবি পরিদর্শক (এসিআই) হিসেবে কর্মরত। তার বিরুদ্ধে চাকরিতে নিয়োগ বাণিজ্যকারীদের সহযোগী, নিজের অবৈধ পদোন্নতি, বিলাসবহুল গাড়ি ক্রয়, রেলের জায়গা অবৈধ দখলসহ আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তদন্ত ও অনুসন্ধান করেছে দুদক। এ বিষয়ে সুমনকে গত ১৮ জানুয়ারি দুদক কার্যালয়ে হাজির হতে নোটিস দেয়া হয়। সে অনুযায়ী সুমন বেশকিছু কাগজপত্র দাখিল করেছেন। কিন্তু সিসিএম নেই এমন দোহাই দিয়ে দুদকের দফতর ত্যাগ করছেন। প্রশ্ন উঠেছে, সিসিএম কি সুমনের এসআর (সার্ভিস রেকর্ড) বা প্রোফাইলসহ সব কাগজ পত্র নিয়ে বাসায় রেখে দিয়েছেন। মূলত দুদকের কিছু সময় ক্ষেপণের জন্য এ ধরনের কৌশল অবলম্বন করেছে সুমন। নোটিস প্রাপ্তির ১৫ কার্যদিবসে দুদকের চাহিদা অনুযায়ী কাগজপত্র দাখিল করতে বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৭ কার্য দিবস পার হয়েছে। এ প্রসঙ্গে দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন জনকণ্ঠকে বলেন, এসিআই পদে কর্মরত থাকা সুমনের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। সার্টিফিকেট জালিয়াতিসহ হাজিরা খাতায় প্রক্সি দেয়া ও রেলের জায়গায় অবৈধ স্থাপনাসহ নিজের নামে বরাদ্দকৃত কোয়ার্টারসহ সরকারী স্থাপনা পরিবর্ধনের অভিযোগ রয়েছে। নিয়োগ বাণিজ্যের পাশাপাশি গাড়ি বাড়ি কেনার মতো বিপুল অঙ্কের আয়বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। দুদকের দফতর সূত্রে জানা গেছে, সুমনের ২০০৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর পিয়ন পদে যোগদানের ক্ষেত্রে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, কমিটির পরিচিতি, পরীক্ষার ফলাফল, অফার লেটারের কপি। অফার লেটার ইস্যু তারিখ ২০০৫ সালের ১৬ জানুয়ারি অনুযায়ী সিআরবি এর সিসিএম কার্যালয়ে যোগদানের কপিও চাওয়া হয়েছে। যোগদানের সময় জমা দেয়া ৮ম শ্রেণী পাসের সার্টিফিকেট ও পদোন্নতি প্রাপ্তির চিঠি দাখিল করতে বলা হয়েছে। পিয়ন পদ থেকে কিভাবে অফিস সহকারী ও পরে এসিআই পদে পদোন্নতি এসবের তথ্য ও প্রমাণপত্র দাখিল করতে বলা হয়েছে দুদকে। তবে বিশেষ করে সহকারী দাবি পরিদর্শক পদে পদোন্নতি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি, কমিটির পরিচিতি, পরীক্ষার দিন ও ক্ষণ, উত্তরপত্র এবং ফলাফলসহ সকল কাগজপত্র পরীক্ষা করবে দুদক।
×