ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী বিচার;###;গীতা রানীর সাক্ষ্য

রিয়াজউদ্দিন আমাকে বিহারীদের হাতে তুলে দেয়

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ৩০ নভেম্বর ২০১৭

রিয়াজউদ্দিন আমাকে বিহারীদের হাতে তুলে দেয়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার আলবদর রিয়াজ উদ্দিন ফকিরের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের ১৪তম সাক্ষী গীতা রানী, ১৫তম সাক্ষী ঝন্টু ঋষি, ১৬তম সাক্ষী জীবন ঋষি ও ১৭তম সাক্ষী ভানু ঋষি জবানবন্দী প্রদান করেছেন। ১৪তম সাক্ষী তার জবানবন্দীতে বলেন রিয়াজ উদ্দিন ফকির পাক আর্মিদের নিয়ে আমাদের গ্রামে আসে। আসামি আমাকে ধরে বিহারীদের হাতে তুলে দেয়। আমার সঙ্গে বাসন্তী ঋষি ও নির্মলা ঋষিকেও ধরে নিয়ে পাক আর্মিদের হাতে তুলে দেয়। আমাদের ধরে নিয়ে বিহারীরা নাইলা ক্ষেতে মানহানি করে। পরে তারা বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। গ্রামের ৮ জনকে ধরে নিয়ে ভালুকজান ব্রিজের পাশ্চিম পাশে গুলি করে হত্যা করে। জবানবন্দী শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী সাক্ষীদের জেরা করেন। পরবর্তী সাক্ষীর জন্য ১২ ডিসেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্য বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ বুধবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর হৃষিকেশ সাহা, মোঃ সুলতান মাহমুদ সিমন, রিজিয়া সুলতানা চমন, সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি, আবুল কালাম প্রমুখ। অন্যদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন সৈয়দ মিজানুর রহমান ও মুজাহিদুল ইসলাম। সাক্ষী তার জবানবন্দীতে বলেন, আমার নাম গীতা রানী ঋষি। বয়স আনুমানিক ৬৪ বছর। আমার বাবার বাড়ির ঠিকানা গ্রাম ঋষিপাড়া, থানা- ফুলবাড়িয়া, জেলা- ময়মনসিংহ। একাত্তর সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে আমি আমার বাবার বাড়িতে ছিলাম। একাত্তরে কার্তিক মাসের ১৮ তারিখ সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে আসামি রিয়াজ উদ্দিন ফকির তার সঙ্গীয় রাজাকার ও পাকিস্তান আর্মিদের নিয়ে ঋষিপাড়ায় আসে। রিয়াজ উদ্দিন ফকির আমাকে ধরে নিয়ে বিহারীদের হাতে তুলে দেয়। আমার সঙ্গে বাসন্তী ঋষি ও নির্মলা ঋষিকে ধরে নিয়ে পাকিস্তানীদের হাতে তুলে দেয়। আমাদের ধরে নিয়ে নাইলা ক্ষেতে মানহানি করে। বাসন্তী ও নির্মলাকেও মানহানি করা হয়। আসামি রিয়াজ উদ্দিন ফকির রাজাকার ও পাকিস্তানি আর্মিদের নিয়ে আমাদের বাড়ি ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর গ্রামের ৮ জনকে ধরে নিয়ে ভালুকজান ব্রিজের পাশ্চিম পাশে গুলি করে হত্যা করে। ঐ ৮ জনের মধ্যে গগেন ঋষি, জ্ঞানেন ঋষি, উমেশ ঋষি, মহেন্দ্র ঋষি, মংলা ঋষি, দিনেশ ঋষি ছিল। নিহতরা আমার প্রতিবেশী।
×