ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হবিগঞ্জে রাজাকার ফোকন ও জাহিদ গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০০:৫৬, ২২ নভেম্বর ২০১৭

হবিগঞ্জে রাজাকার ফোকন ও জাহিদ গ্রেফতার

নিজস্ব সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ ॥ ৭১’সালে খুন, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, নির্যাতন ও অপহরনের মতো নানা মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলাধীন মুড়িয়ক গ্রামের বাসিন্দা ও তৎকালীন পাকিস্তানী নিজামী ইসলাম পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা মৌলানা শফি উদ্দিনের ঘনিষ্ট দুই সহচর রাজাকারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সংশ্লিস্ট মামলার চৌকস তদন্তকারী কর্মকর্তা এএসপি নূর হোসেন ও স্থানীয় পুলিশ জনকন্ঠকে জানান, আজ বুধবার আন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের আদালত কর্তৃক তৎকালীন পাকিস্তানী নেজামী ইসলাম পার্টীও নেতা রাজাকার কমান্ডার মৌলানা শফি উদ্দিন সহ সহ আরও দুই জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারীর পর জেলার লাখাই থানা পুলিশ সংশ্লিস্ট গ্রামের মৃত আতাব উল্লাহ’র পুত্র তাজুল ইসলাম ফোকন ওরফে ফোকন রাজাকার ও একই গ্রামের বাসিন্দা আশিক উল্লাহ’র পুত্র জাহিদ মিয়া ওরফে জাহিদ রাজাকারকে গ্রেফতার করে। তবে সংশ্লিস্ট এলাকায় জোর গুঞ্জন অব্যাহত রয়েছে, মানবতা বিরোধী অপরাধের সাথে জড়িত প্রধান আসামী তৎকালীন ওই পার্টির নেতা মৌলানা শফি’র পরিবারের সদস্যদের নিকট আগেই এমন অভিযান হতে পারে এই ধরনের খবর গুটি কয়েক রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তি ও পুলিশী সোর্সের মাধ্যমে পৌছে যাওয়ায় সংশ্লিস্ট মামলার রাজাকার কমান্ডার পায়ে হাটতে অক্ষম বয়োবৃদ্ধ মৌলানা শফিকে অজ্ঞাত স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়। অথচ পুলিশ বলছে, তারা খবর পেয়েছে গ্রেফতারী পরোয়ানাভুক্ত অপর আসামী নাকি বাড়ীতে ছিল না। সংশ্লিস্ট মামলার এক স্বাক্ষী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, শফি বি-বাড়িয়া থেকে এখন নাকি হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলাধীন আইল্লারা গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ীতে অবস্থান করছেন। ফলে শফিকে গ্রেফতারে পুলিশী ভূমিকা নিয়ে সংশ্লিস্ট এলাকার সাধারন মানুষের মাঝে বিরূপ প্রশ্নের উদ্ভব ঘটেছে। উল্লেখ্য, বিগত ১৫’ সালের অক্টোবর মাসে জেলার লাখাই উপজেলার থানায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াছ কামাল বাদী হয়ে উল্লেখিত আসামী সহ আরও বেশ কয়েকজনের নাম উল্লেখ পূর্বক একটি এজাহার দাখিল করেন। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে ২২ মার্চ বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াছ কামাল বাদী হওয়া এই মামলাটি ট্রাইব্যুনালে রেকর্ডভূক্ত হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা নুর হোসেন আরও জানান, ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার হাতে মামলাটি চলে যাবার পর যথারীতি নিয়মে তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়কই বাদী হয়ে যান। ফলে হবিগঞ্জের সংশ্লিস্ট এলাকায় সংঘটিত ৭১’এর ওই মামলার সংশ্লিস্ট ট্রাইব্যুনাল তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়কারী আইজিপি মোঃ আব্দুল হান্নান খান পিপিএম এর সার্বিক তত্বাবধানে এই মামলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে আমি নুর হোসেন জেলার সংশ্লিষ্ট উপজেলার ৭১’এর সুনিদিষ্ট নানা মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হওয়ার ঘটনাস্থল একাধিকবার পরিদর্শনকল্পে তদন্তকার্য পরিচালনা করি এবং প্রত্যক্ষ স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ্য গ্রহন সহ ভিডিও ফুটেজ ধারন একং চক তৈরী করি। যার ফলে সংশ্লিস্ট ট্রাইব্যুনালের নির্দেশেই ওই রাজাকারদের গ্রেফতার প্রক্রিয়া তরান্বিত হয়। এদিকে মৌলানা শফি সহ সহযোগি রাজাকারদের বিরুদ্ধে উক্ত একাধিক তদন্ত চলাকালে তদন্তকারী টীমের সাথে ছিলেন সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনাল তদন্ত সংস্থা কর্তৃক গঠিত জেলা স্বাক্ষী ও ভিকটিম সুরক্ষা কমিটির মেম্বার সাংবাদিক রফিকুল হাসান চৌধুরী তুহিন।
×