ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিযোগিতা কমিশন কাজ শুরু করতে আরও সময় চায়

প্রকাশিত: ০৪:১৫, ২৩ অক্টোবর ২০১৭

প্রতিযোগিতা কমিশন কাজ শুরু করতে আরও সময় চায়

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাজারে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ সৃষ্টিতে বছর চারেক আগে ‘বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন’ গঠন করা হয়। কিন্তু এখনও কাজ শুরু করতে পারেনি এ কমিশন। কবে নাগাদ শুরু হবে সে বিষয়েও সংশ্লিষ্টরাও কিছুই জানেন না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, তিনটি লক্ষ্যকে সামনে রেখে ২০১২ সালে প্রতিযোগিতা আইন প্রণয়ন করা হয়। এ আইন পাসের পর একই বছর বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন গঠন করা হয়। ২০১৫ সালে কমিশনে চেয়ারম্যান ও দু’জন সদস্য পদে নিয়োগ দেয় সরকার। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কমিশনের তহবিল বিধিমালাও তৈরি করা সম্ভব হয়নি। নিয়োগ দেয়া হয়নি কমিশনের অবশিষ্ট ৭৬টি পদে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। সম্প্রতি চালের বাজার অস্থিতিশীল হওয়ায় কবে নাগাদ প্রতিযোগিতা কমিশন কাজ শুরু করবে সে বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এ বিষয়ে বলেছিলেন, ‘ষড়যন্ত্রমূলক যোগসাজশ ও অনৈতিক জোটবদ্ধতার মাধ্যমে বাজারকে অস্থিতিশীল করার প্রবণতা নিয়ন্ত্রণ এবং পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে প্রতিযোগিতা কমিশন গঠন করা হয়েছে। আমি আশা করি, এ কমিশন বাজারের অস্থিতিশীলতা ও পণ্যের ন্যায্যমূল্য বজায় রাখতে ভূমিকা পালন করবে।’ কিন্তু অর্থমন্ত্রীর এ ঘোষণা ঘোষণাই থেকে গেছে। বাস্তবে তার প্রতিফলন নেই। এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ও ইস্টওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এনামুল হক বলেন, প্রতিযোগিতা আইন পাস হয়েছে, কমিশনও গঠন করা হয়েছে। যখন বাজারে কোন পণ্যের মনোপলি ব্যবসা হয় তা প্রতিরোধ করাই হবে এই কমিশনের কাজ। তবে এ মুহূর্তে প্রতিযোগিতা কমিশন কিছুই করতে পারছে না। কারণ আইন হলেও এখনও বিধিমালা তৈরি হয়নি। এ বিষয় জানতে চাইলে প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব ইকবাল খান চৌধুরী বলেন, একটি নতুন কমিশন গঠন হলো মাত্র। কমিশনের জন্য অফিস, স্টাফ ও তহবিল প্রয়োজন। কিছুটা সময় দিতে হবে। আমরা এ বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছি। কবে নাগাদ এ কমিশন কাজ শুরু করতে পারবে- এমন প্রশ্নের জবাবে কমিশনের সদস্য ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক আবুল হোসেন মিঞা বলেন, ‘কাজ করার জন্য তহবিল জোগাড় হচ্ছে। এগুলো হতে কিছু সময় দিতে হবে।’ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিযোগিতা কমিশনের জন্য প্রতিযোগিতা তহবিল বিধিমালা-২০১৭ এর খসড়া অনুমোদনের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা কাজ করছেন। শীঘ্রই এ কমিশন মাঠে কাজ শুরু করবে।’ মূলত তিনটি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে প্রতিযোগিতা কমিশন গঠন করা হয়। এগুলো হচ্ছে প্রথমত: দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ নিশ্চিত করে তা বজায় রাখা, দ্বিতীয়ত: বাজারে ষড়যন্ত্রমূলক যোগসাজশ, মনোপলি (এককভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ) ও ওলিগপলি (সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মুষ্টিমেয় কিছু প্রতিষ্ঠানের হাতে বাজারের নিয়ন্ত্রণ রাখা) অবস্থা জোটবদ্ধ কিংবা কর্তৃত্বময় অবস্থানের অপব্যবহার সংক্রান্ত প্রতিযোগিতা বিরোধী কর্মকা- প্রতিরোধ এবং তৃতীয়ত এমন কিছু হলে তা নিয়ন্ত্রণ বা নির্মূল করা। কমিশনের ক্ষমতার বিষয়ে প্রতিযোগিতা আইনে বলা হয়েছে, কোড অব সিভিল প্রডিউসর-১৯০৮ (এ্যাক্ট-৫ অফ ১৯০৮) এর অধীনে একটি দেওয়ানি আদালত যে ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন প্রতিযোগিতা কমিশনও একই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে।
×