ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আজ ‘ঘ’ ইউনিটের পরীক্ষা

ঢাবি ভর্তি পরীক্ষায় সক্রিয় জালিয়াত চক্র, সতর্ক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন

প্রকাশিত: ০৪:১০, ২০ অক্টোবর ২০১৭

ঢাবি ভর্তি পরীক্ষায় সক্রিয় জালিয়াত চক্র, সতর্ক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন

ঢাবি সংবাদদাতা ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ‘ঘ’ ইউনিটের অধীন প্রথম বর্ষ সম্মান শ্রেণীর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে পরীক্ষা চলবে ১১টা পর্যন্ত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ৫৩টি কেন্দ্র ও ক্যাম্পাসের বাইরে রাজধানীর ৩৩টি স্কুল-কলেজসহ মোট ৮৬টি কেন্দ্রে একযোগে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষায় লাখ লাখ টাকার চুক্তি করে ডিজিটাল ডিভাইস নিয়ে জালিয়াতির জন্য সক্রিয় রয়েছে জালিয়াত চক্র। তবে জালিয়াতচক্রকে ধরতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাও। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার ঘ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ৯৮ হাজার ৫৪ শিক্ষার্থী আবেদন করেছে। এর বিপরীতে আসন রয়েছে ১৬১০টি। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ১১৪৭, ব্যবসা শিক্ষার জন্য ৪১০ এবং মানবিকে বিভাগের জন্য মাত্র ৫৩টি আসন রয়েছে। অর্থাৎ প্রতি আসনের বিপরীতে লড়বে ৬০ ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী। এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ডিজিটাল জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। এসব জালিয়াতির কারণে ভর্তিচ্ছু কয়েকজনকে আটক করা হলেও চক্রের মূল হোতারা সবসময় ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। সে কারণে আজকের ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে চক্রগুলো আরও বেশি সক্রিয় থাকবে বলে জানা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় ও বাইরের একাধিক চক্র ঘ ইউনিটের প্রশ্ন ফাঁস করতে সক্রিয় খাকবে বলে জানা গেছে। এসব সিন্ডিকেটের সদস্যের মধ্যে বিভিন্ন কোচিং সেন্টার, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী, কর্মকতা-কর্মচারীর সংখ্যাই বেশি। পুলিশ প্রশাসন সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিরুদ্ধেও প্রশ্ন ফাঁসে সহায়তার অভিযোগ রয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, ‘এটিএম কার্ড’ সদৃশ ডিজিটাল ডিভাইস ও কানে শোনার জন্য পুঁতির মতো ছোট ডিভাইসের মাধ্যমে জালিয়াতির জন্য সক্রিয় আছে একাধিক চক্র। সর্বনি¤œ ৪ লাখ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৯ লাখ টাকার বিনিময়ে চুক্তি করা হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ী তাদের ডিজিটাল ডিভাইস সরবরাহ করা হয়। গত শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদভূক্ত ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ডিজিটাল জালিয়াতির দায়ে ১২ জনকে আটক করা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে আদালত বসিয়ে সবাইকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদ- দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ কেন্দ্র থেকে দুই, কাজী মোতাহার হোসেন ভবন থেকে একজনকে আটক করা হয়। বাকি ৯ জনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের কেন্দ্র থেকে আটক করা হয়। এর মধ্যে ছিল উদয়ন স্কুল, মতিঝিল সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মতিঝিল আইডিয়াল কলেজ, লালমাটিয়া মহিলা কলেজ, শেখ বোরহানউদ্দিন পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট কলেজ, আহম্মেদ বাওয়ানি একাডেমি কেন্দ্র। সূত্র জানায়, ক্যাম্পাসের বাহিরের কেন্দ্রগুলোতে প্রবেশকালে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে চেক করানো হয় না। ফলে নানা কৌশলে জালিয়াত চক্রের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ শিক্ষার্থীরা ডিজিটাল ডিভাইস নিয়ে অনায়াসে ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্রে প্রবেশ করছে। তাই আজকের পরীক্ষায়ও জালিয়াতচক্র ক্যাম্পাসের বাইরের কেন্দ্রগুলোকে বেশি বেছে নিয়েছে। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর অভিযোগ, বাইরের কেন্দ্রগুলোতে তাদের কোন ধরনের চেক করানো ছাড়াই পরীক্ষার হলে প্রবেশ করানো হয়। তাছাড়া পরীক্ষার হলে দায়িত্বরত শিক্ষকরা সতর্ক অবস্থানে থাকে না। তাদের অবহেলার জন্য জালিয়াতচক্র আরও বেশি উৎসাহ পায়। অন্যদিকে ভর্তি পরীক্ষা নির্বিঘেœ অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
×