ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নেত্রকোনায় নিজ বাসায় শ্বাসরোধ করে স্বামী-স্ত্রীকে হত্যা

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ১৪ অক্টোবর ২০১৭

নেত্রকোনায় নিজ বাসায় শ্বাসরোধ করে স্বামী-স্ত্রীকে হত্যা

নিজস্ব সংবাদদাতা, নেত্রকোনা, ১৩ অক্টোবর ॥ শহরের সাতপাই বাবলু সরণি এলাকার নিজ বাসায় হিন্দু দম্পতিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে নেত্রকোনা মডেল থানা পুলিশ বাসার ভেতর থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ দুটি মর্গে পাঠানো হয়। নিহতরা হলেন মিহির কান্তি বিশ্বাস (৭০) এবং তার স্ত্রী সহিতা রানী চন্দ ওরফে তুলিকা (৫৬)। ওই বাসার অন্য একটি ইউনিটের ভাড়াটিয়া মৎস্য বিভাগের কর্মচারী রাজীব কুমার প-িত জানান, গত দুদিন ধরে তিনি বাসাটির মালিক দম্পতির কোন সাড়াশব্দ পাচ্ছিলেন না। হাফবিল্ডিং বাসাটির গেটও বাইরে থেকে তালাবদ্ধ ছিল। এ অবস্থায় তার সন্দেহ হলে তিনি বিষয়টি স্থানীয়দের জানান। পরে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে লাঠি দিয়ে বাসার ভেতরের দরজায় ধাক্কা দিলে দরজাটি খুলে যায় এবং ভেতর থেকে দুর্গন্ধ বেরিয়ে আসতে থাকে। পরে তারা দম্পতির আত্মীয়স্বজনদের খবর দেন। কিছুক্ষণ পর মিহির কান্তি বিশ্বাসের ভাই সমীর কান্তি বিশ্বাসসহ অন্যরা এসে তালা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে ড্রইংরুমের বিছানায় মিহির কান্তি বিশ্বাসের এবং রান্নাঘরের মেঝেতে সহিতা বিশ্বাস তুলিকার লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় বাসার আলমারি, ওয়্যারড্রবসহ বিভিন্ন ফার্নিচারও এলোমেলো অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে নেত্রকোনা মডেল থানা পুলিশ এসে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরিসহ লাশ দুটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। লাশের গায়ে হাল্কা কিছুর আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ওই দম্পতিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী বলেন, ‘কিভাবে এবং কেন এ হত্যাকা- সংঘটিত হয়েছে তা এখনও বলা যাচ্ছে না। প্রাথমিকভাবে পাওয়া ক্লুর ভিত্তিতে আমরা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছি। আশা করছি শীঘ্র হত্যা রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারব।’ নিহত মিহির কান্তি বিশ্বাস এক সময় বিএডিসির কর্মচারী ছিলেন। পরবর্তীতে কিছুদিন সদর উপজেলার বাংলা গ্রামের কৃষ্ণগোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে অবসরে যান। আর তার স্ত্রী সহিতা বিশ্বাস ওরফে তুলিকা সমাজসেবা অধিদফতরের ইউনিয়ন সমাজকর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাদের একমাত্র ছেলে সুমন বিশ্বাস ঢাকায় বায়িং হাউসে চাকরি করেন। আর একমাত্র মেয়ে সুস্মিতা বিশ্বাস স্বামীর সঙ্গে সিলেটে থাকেন। সহিতা বিশ্বাস সর্বশেষ গত বুধবার পর্যন্ত অফিস করেন। বৃহস্পতিবার তিনি অফিসে যাননি। ওদিকে তাদের বাসার কাজের মহিলা জয়া রানী জানান, গত বুধবার দুপুর পর্যন্ত তিনি ওই বাসায় কাজ করেন। গত বৃহস্পতিবার কাজ করতে এসে বাসার গেট তালাবদ্ধ দেখতে পান। অনেক ডাকাডাকি করেও কারও সাড়া না পেয়ে তিনি চলে যান। ধারণা করা হচ্ছে, দুর্র্বৃত্তরা বুধবার রাতে হত্যাকা- ঘটিয়ে বাসার মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে গেছে এবং যাওয়ার সময় বাইরে তালা লাগিয়ে পালিয়ে গেছে।
×