ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার রোহিঙ্গা সঙ্কট সতর্কতার সঙ্গে সামাল দেয়ার চেষ্টা করছে ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭

সরকার রোহিঙ্গা সঙ্কট সতর্কতার সঙ্গে সামাল দেয়ার চেষ্টা করছে ॥ কাদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকার সতর্কতার সঙ্গে রোহিঙ্গা সঙ্কট সামাল দেয়ার চেষ্টা করছে জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শরণার্থীদের এই বিশাল বোঝা বহন করার ক্ষমতা বাংলাদেশের নেই। নির্যাতনের শিকার হয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা এই রোহিঙ্গা জনস্রোতের সঙ্গে কোনভাবে মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানের যোগাযোগ তৈরি হচ্ছে কিনা তা নিয়েও তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ঈদ পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। ঈদের সময় সড়ক যোগাযোগের চিত্র তুলে ধরতেই এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে সড়কপথে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের ভোগান্তির আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছিল আগে থেকেই। তাছাড়া দেশের প্রায় সবকটি সড়ক মহাসড়ক ছিল অনেকটাই বিধ্বস্ত। এই প্রেক্ষাপটে ঘরমুখো মানুষের মহাদুর্ভোগ পোহাতে হবে এমন আশঙ্কা ছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত অনেকটা দুর্ভোগমুক্ত ঈদযাত্রা হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, দুর্ভোগের আশঙ্কা থাকলেও সকলের সহযোগিতায় অনেকটাই দুর্ভোগমুক্ত ঈদযাত্রা হয়েছে। এতে সবাই স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করেছি। যেন মানুষের দুর্ভোগ কমানো যায়। সবার সহযোগিতার জন্য মন্ত্রী ধন্যবাদ জানান। এ সময় সড়ক সচিব এমএন সিদ্দিক, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীসহ মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকারের অবস্থানে কোন অস্পষ্টতা নেই। সরকারের অবস্থান স্পষ্ট, লাউড এ্যান্ড ক্লিয়ার। আমরা সতর্কতার সঙ্গে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি মোকাবেলা করছি। যেভাবে রোহিঙ্গাদের স্রোত আমাদের দেশে ছুটে আসছে এটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। অলরেডি এক লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী ঢুকে পড়েছে বলেও জানান তিনি। সরকার ইতোমধ্যে এই উদ্বেগের কথা জাতিসংঘকে জানিয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী যাবতীয় কর্মকা- পরিচালিত হচ্ছে বলে জানান কাদের। এই বিশাল বোঝা বয়ে বেড়ানোর ক্ষমতা আমাদের নেই। আমরা হাওড় এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত, বন্যার জন্য অর্ধেক এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এজন্য আমরা বারবার জাতিসংঘের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। সন্ত্রাস দমনের নামে নিরীহ রোহিঙ্গাদের প্রতি অত্যাচার-নিপীড়ন বন্ধের জন্য চার বার মিয়ানমারের প্রতিনিধিকে ফরেন অফিস ডেকে পাঠিয়েছে, আমাদের জোরালো বক্তব্য আমরা উত্থাপন করেছি। মিয়ানমারের নাগরিকদের অবিলম্বে তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে বাংলাদেশ জাতিসংঘের জোরালো পদক্ষেপ চেয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, এখানে আরও অনেক সমস্যা আছে। এত মানুষ আসছে, নির্যাতিত মানুষের সঙ্গে মাদকের স্রোতও আসছে কিনা এবং অস্ত্রের কোন বিষয় যুক্ত হচ্ছে কিনা- এটা তো আমাদের জন্য আরও বেশি উদ্বেগের। রোহিঙ্গাদের দুর্দশার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে কাদের বলেন, রাখাইনে গুলি করে, গান পাউডার ছিটিয়ে মানুষ হত্যার খবর এসেছে। নারী-পুরুষ-শিশুরা অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েছে। তাদের আসার পথটাই রক্তস্রোত। অনেকে আবার নাফ নদীতে ডুবে মরছে। আমরা যদি অমানবিক হতাম, তবে এই দেড় লাখ তো আসার কথা ছিল না। একদিকে আমরা পুশইনের প্রতিবাদ করছি, পাশাপাশি মানবিক আচরণ দেখাতেও আমাদের প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। বিএনপি মাইনকা চিপায় ॥ আসছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়া-না নেয়া নিয়ে বিএনপি উভয় সঙ্কটে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। নির্বাচনী হাওয়া শুরু হয়েছে কিনা- সাংবাদিকদের প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, নির্বাচনী হাওয়া শুরু হওয়া ভাল, নির্বাচনী আমেজ বা সুবাতাস যখন বইবে সেটা গণগন্ত্রের জন্য সুখবর, খারাপ কিছু না। বিএনপি এখন ‘মাইনকা চিপায়’ রয়েছে মন্তব্য করে কাদের বলেন, সমস্যা হচ্ছে বিএনপি এখন উভয় সঙ্কটে, ওই যে হায়দারের (হায়দার আলী) একটা গান আছে না ‘মাইনকা চিপা’, বিএনপি এখন মাইনকা চিপায় পড়ে গেছে। তিনি বলেন, বিএনপির একদিকে নির্বাচনে গিয়ে হেরে যাওয়ার ভয় আছে, আবার নির্বাচনে না গিয়ে যদি ৫ জানুয়ারির নির্বাচন উত্তর পরিস্থিতির মতো বোমা সন্ত্রাস শুরু করে সেটাও জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে। এজন্য বলছি বিএনপি মাইনকা চিপায় আছে। নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবি তুললেও বিষয়টির ওপর অনড় না থেকে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার পথ খোলা রাখতে চায় বিএনপি। এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নে আওয়ামী লীগ নেতা কাদের বলেন, সরকার ব্যবস্থা সংবিধানেই আছে, এ নিয়ে আলোচনার কিছু নেই। নির্যাতনের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ার দাবিতে ঢাকাসহ সারাদেশে শুক্রবার এক ঘণ্টার মানববন্ধন কর্মসূচী ঘোষণা করেছে বিএনপি। দলটির এ কর্মসূচীর বিষয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নে কাদের বলেন, আমি একটু উদ্বিগ্ন, তারা সভা সমাবেশ ডাক দিলে নিজেরাই নিজেদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়, দায়টা চাপায় আওয়ামী লীগের ওপর, সরকারের ওপর।
×