ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

তুফান পরিবারেরহাতে নির্যাতিত মা ও মেয়ে

আদেশ না থাকার পরও রাজশাহী থেকে বগুড়ার আদালতে

প্রকাশিত: ০৬:৫১, ৩১ আগস্ট ২০১৭

আদেশ না থাকার পরও রাজশাহী থেকে বগুড়ার আদালতে

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ ধর্ষিতা তরুণী ও তার নির্যাতিত মায়ের বুধবার বগুড়া আদালতে হাজিরার কোন আদেশ না থাকার পরও রাজশাহী সেফহোম ও ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার থেকে তাদের বগুড়া আদালতে হাজির করা হয়। কে বা কারা কিভাবে তাদের আদালতে আনল তা একটি বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে সাধারণের মধ্যে চলছে নানা গুঞ্জন। এই বিষয়ে খোঁজখবর করার জন্য সংবাদকর্মীরা আদালত প্রাঙ্গণে গেলে বলা হয় ‘সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষেধ করা হয়েছে।’ পরে সাংবাদিকরা শিশু আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটারের (পিপি) সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষেধ করা হয়নি। তাহলে কে প্রচার করল এ কথাটি! সব মিলিয়ে পুরো ঘটনাটি জট পাকিয়েছে। স্পেশাল পিপি আমানউল্লাহ জানান, কয়েকজন এ্যাডভোকেট দুপুরের দিকে ওই আদালতে গিয়ে বিচারককে বলেন, ধর্ষিতা তরুণী ও তার মা এখন নিজেদের নিরাপত্তাহীনতা মনে করছেন না। তারা স্বেচ্ছায় নিজেদের জিম্মায় থাকতে চান। ধর্ষিতার বাবা নির্যাতিতার স্বামী ইয়াকুব আলী স্ত্রী ও মেয়েকে নিজের জিম্মায় নেয়ার জন্য আবেদন করেন। এ সময় আদালতের বিচারক নথি খুঁজে দেখেন আদালতে ওই মা ও মেয়েকে বুধবার হাজির করার আদেশ নেই। এই অবস্থায় বিচারক ইয়াকুব আলীর আবেদন গ্রহণ না করে পুনরায় মেয়েকে রাজশাহী সেফহোমে ও মা’কে রাজশাহী ভিকটিম সেন্টারে পাঠাবার আদেশ দেন। উল্লেখ্য, একই আদালত বগুড়ার ঘটনার পর মেয়ে ও মা’কে নিরাপত্তাজনিত কারণে যথাক্রমে রাজশাহী সেফহোম ও রাজশাহী ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠানোর আদেশ দেয়। ওই সময় আদালত মেয়ের বাবার কাছে জানতে চেয়েছিলেন তিনি জিম্মায় নিতে রাজি আছেন কি না। তখন মেয়ের বাবা ইয়াকুব আলী নিরাপত্তাজনিত কারণে নিজের জিম্মায় নিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। এই মামলার বাদী মেয়ের নির্যাতিতা মা। স্পেশাল পিপি জানান, বুধবার আদালতে এই মামলায় একটি তারিখ ছিল। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) আদালতে এসে মামলার অগ্রগতি জানাবার কথা। মামলার আইও সাব ইন্সপেক্টর আবুল কালাম আজাদ এদিন জরুরী কাজে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ছিলেন। তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। তারপরও কিভাবে ধর্ষিতা মেয়ে ও তার নির্যাততা মা’কে রাজশাহী থেকে আনা হলো! এই বিষয়ে রাজশাহীর টিএসআই মাহবুবেব সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জানান, সেফহোম ও ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার থেকে মেয়ে ও মাকে আদালতে হাজিরার কথা বলা হয়। উল্লেখ্য, গেল জুলাই মাসের ১৭ তারিখে বগুড়ার দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারি তুফান সরকার মাধ্যমিক উত্তীর্ণ এক শিক্ষার্থীকে ভাল কলেজে ভর্তির প্রলোভন দিয়ে ধর্ষণ করে। এরপর তুফান সরকারের স্ত্রী, জ্যাঠাশ ও শাশুড়ি এবং ক্যাডাররা ধর্ষিতা মেয়ে ও তার মাকে বর্বরোচিত নির্যাতন চালিয়ে মাথা ন্যাড়া করে দেয়।
×